৫ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর
প্রকাশিত:
৩ জুন ২০২৫ ১৫:৩৯
আপডেট:
৫ জুন ২০২৫ ২৩:৪৯

পাঁচ মামলায় সাবেক ইসকন নেতা ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন চট্টগ্রামের প্রথম মহানগর হাকিম আবু বকর সিদ্দিক।
আদালতের সহকারী পিপি রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আসামি চিন্ময় কৃষ্ণের পক্ষে তার আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলাসহ মোট পাঁচটি মামলায় জামিনের আবেদন করেছিলেন। শুনানি শেষে আদালত সবগুলো মামলায় জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।’
সহকারী পিপি আরও বলেন, ‘আজ হত্যা মামলায় জামিন আবেদনের শুনানির ধার্য দিন ছিল। অন্য চার মামলায় বিশেষ জামিন আবেদন করা হয়। সবগুলোর মামলায় শুনানি হয়েছে। রাষ্ট্র পক্ষে আমরা জামিনের বিরোধিতা করেছি।’
২৬ নভেম্বরের ঘটনায় পুলিশের করা তিনটি মামলায় এবং আইনজীবী আলিফের ভাইয়ের করা একটি মামলায় গত ৬ মে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘পাঁচটি মামলায় উনাকে (চিন্ময়) গ্রেফতার দেখিয়েছে। পাঁচটা মামলায় উনার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। উনি পুলিশ কাস্টডিতে ছিলেন।’
চিন্ময়ের আইনজীবী আরও বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্ট যখন অন্য মামলায় উনার রুল অ্যাবসুলিউট করেছেন, একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায়। তখনই এর একদিন পরে উনাকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। যেটা মেলাফাইড ইনটেনশন। যেখানে উনার কোনো অভিযুক্ততা নাই।’
চিন্ময়ের অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উনি চরমভাবে অসুস্থ। আমি কোর্টকে বলেছি, উনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। এখন উনার ট্রিটমেন্ট দরকার। এজন্য একটা দরখাস্ত দেওয়া আছে।’
আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। অবশ্যই আমরা যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেব। মাননীয় মেট্রো সেশন কোর্টে আমরা জামিন আবেদন করব।’
উল্লেখ্য, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে গত বছরের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। ওই সমাবেশের পর ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। এতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ছাড়াও আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়।
২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় গত ২৫ নভেম্বর তাকে ঢাকায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় আইনজীবীর সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার ৪ দিন পর আলিফের বাবা ৩১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা এবং আইনজীবীর ওপর হামলার ঘটনায় আলিফের ভাই ১১৬ জনকে আসামি আরেকটি মামলা দায়ের করে। এছাড়া পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ৩টি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: