ঘুষ কেলেঙ্কারি: আদালতের কাঠগড়ায় দ. কোরিয়ার সাবেক ফার্স্ট লেডি
প্রকাশিত:
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৫২
আপডেট:
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:২১

দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের স্ত্রী ও সাবেক ফার্স্ট লেডি কিম কিয়ন হির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার প্রাথমিক শুনানি শুরু হয়েছে। বুধবার আদালতে শুনানিতে অংশ নিয়েছেন দেশটির সাবেক এই ফার্স্ট লেডি। বহুল আলোচিত এই দুর্নীতির মামলায় ইতোমধ্যে দেশটির শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক ও ধর্মীয় নেতাদের নামও এসেছে।
ঘুষ এবং শেয়ারবাজারে কারসাজির দায়ে অভিযুক্ত কিম কিয়ন হি গত আগস্টে গ্রেপ্তারের পর প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে এসেছেন। বুধবার দক্ষিণ সিউলের সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে কালো স্যুট পরে হাজির হন তিনি।
আদালতে দেওয়া সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় তিনি নিজের ব্যক্তিগত তথ্য নিশ্চিত করেন এবং জুরি বোর্ডের পরিবর্তে বিচারপতির মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া পরিচালানোর অনুরোধ জানান। তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা কোনও অভিযোগের জবাব দেননি তিনি।
এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের নিযুক্ত এক প্রসিকিউটর কিমের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ তুলে ধরেন। দেশটির সাবেক এই ফার্স্ট লেডির বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে কারসাজি, রাজনৈতিক তহবিল সংগ্রহের আইন লঙ্ঘন করে প্রভাবশালী এক ব্যক্তিকে বিনামূল্যে মতামত জরিপ করার নির্দেশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিফিকেশন চার্চ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।
যদিও কিমের আইনজীবীরা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, প্রসিকিউটররা তাদের সংগৃহীত প্রমাণের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেননি। কিম কিয়ন হি যদি কোনও অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তার সাজা জরিমানা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।
একজন যাজকের কাছ থেকে বিলাসবহুল ‘ডিওর ব্যাগ’ গ্রহণের একটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্টের মসনদে কাঁপন ধরে। গোপন ভিডিওতে ধারণ করা দৃশ্যে দেখা যায়, যাজকের কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে ওই ব্যাগ গ্রহণ করছেন কিম।
পরে দেশটিতে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে এই ঘটনা। পরিস্থিতি সামলাতে গত ডিসেম্বরে আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারি করেন ইউন এবং শেষ পর্যন্ত পদচ্যুত হন তিনি।
বর্তমানে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে পৃথক এক মামলা ইউনের বিরুদ্ধে বিচার চলছে। গত জুলাইয়ে গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারে আছেন তিনি। মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিফিকেশন গির্জার নেতা হান হাক-জাকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। রাজনৈতিক সুবিধা পেতে কিমকে ঘুষ দেওয়ার জন্য তার সংগঠনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে হান হাক জায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
আদালতের প্রসিকিউটররা বলেছেন, চার্চটি কিমকে দুটি শ্যানেল ব্যাগ, একটি গ্রাফ নেকলেস এবং একটি কোরিয়ান জিনসেং গিফট সেট ঘুষ হিসেবে দিয়েছিল। এসবের মোট মূল্য প্রায় ৮ কোটি ওন। তবে কিমের আইনজীবী বলেছেন, সাবেক ফার্স্ট লেডি এসব উপহার গ্রহণ করেননি। হান তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এসব ভুয়া তথ্য।
সূত্র: রয়টার্স।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: