কুয়েতে মদ তৈরির ঘটনায় কোনো বাংলাদেশি জড়িত নয়: দূতাবাস
প্রকাশিত:
১৮ আগস্ট ২০২৫ ১২:৩৫
আপডেট:
১৮ আগস্ট ২০২৫ ১৫:৩৪

কুয়েতে বিষাক্ত মদ তৈরি ও বিতরণের অভিযোগে সম্প্রতি দ্য টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে কুয়েতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। দ্য টাইমসের ১৭ আগস্ট, ২০২৫-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, এই অপরাধী চক্রের মূলহোতা একজন বাংলাদেশি নাগরিক।
দূতাবাস এক বিবৃতিতে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে বলেছে, ‘‘BANGLADESHI, NEPALI and INDIAN ARRESTED IN TOXIC LIQUOR CASE’’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে ‘ডেলোরা বারকাশ দারাজি’ নামে এক ব্যক্তিকে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে মূলহোতা বলা হয়েছে।
দূতাবাসের মতে, প্রতিবেদনে উল্লিখিত নামটি বাংলাদেশি নামের ধরনের সঙ্গে অত্যন্ত অস্বাভাবিক হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি যাচাই করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৭ আগস্ট দূতাবাসের একজন প্রতিনিধি ওয়াফরা থানায় গিয়ে আহমাদি জেলা তদন্ত অফিসের প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেন।
কুয়েতি কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, এ ঘটনায় কোনো বাংলাদেশি নাগরিক জড়িত ছিল না। গ্রেফতার হওয়া ৬৭ জন ব্যক্তির মধ্যে কেউ-ই বাংলাদেশি নন, এমনকি মৃত বা আহতদের মধ্যেও কোনো বাংলাদেশি ছিল না।
এছাড়াও, দূতাবাস ওই প্রতিবেদনের ‘তথ্যগত ভুল এবং পক্ষপাতদুষ্ট কাঠামো’-এর নিন্দা জানিয়েছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, এমন ভুল তথ্য কেবল বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সুনাম নষ্ট করে না বরং বিদেশিদের প্রতি ঘৃণা বা ভীতি উসকে দেয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘যথাযথ যাচাই-বাছাই ছাড়াই একজন বাংলাদেশি নাগরিককে মূলহোতার ভূমিকায় চিহ্নিত করা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।’
কুয়েতের দ্য টাইমস পত্রিকার সম্পাদক দূতাবাসকে জানিয়েছেন, এই প্রতিবেদনটি প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত হয়েছিল। তবে, দূতাবাসের ব্যাখ্যা এবং কুয়েতি কর্তৃপক্ষের অফিসিয়াল নিশ্চিতকরণের পর এটি স্পষ্ট হয়েছে, বিষাক্ত মদের ঘটনায় কোনো বাংলাদেশি নাগরিক জড়িত ছিলেন না।
সম্প্রতি কুয়েতে মদপানে ২৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্থানীয়ভাবে মদ তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
অপরাধ তদন্ত বিভাগ, মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগ, ফরেনসিক বিভাগ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ দল এই অভিযান পরিচালনা করে। প্রাথমিক তদন্তের পর সালমানিয়া এলাকায় নেপালি নাগরিক ভুবন লাল তামাং-কে হাতেনাতে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে বিষাক্ত মিথানল উদ্ধার করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে একজন ভারতীয় নাগরিক বিশাল ধানয়াল চৌহান এবং অন্যজন নেপালি নাগরিক নারায়ণ প্রসাদ ভশ্যাল। এরাও এই বিষাক্ত তরল উৎপাদন ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই চক্রের মূলহোতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ডেলোরা প্রকাশ দরাজীকে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: