কর্তৃপক্ষের অনিয়মে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি ২ শিক্ষার্থী
প্রকাশিত:
২৬ জুন ২০২৫ ১৩:৩০
আপডেট:
২৬ জুন ২০২৫ ১৭:৪৮

রাজধানীর উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও গাফিলতির শিকার হয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারার অভিযোগ জানিয়েছে দুই শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার।
ভুক্তভোগী ওই দুই শিক্ষার্থীর নাম—ইয়াসির আরাফাত ও সাজ্জাদ হোসেন। তারা দুজনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মানবিক বিভাগের ছাত্র।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ এডমিট কার্ড না দেয়ায় তারা পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে পারছে না।
বৃহস্পতিবার সকালে উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের সামনে গিয়ে দেখা যায় সহপাঠীরা যখন কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে তখন কলেজের সামনে বসে কান্নাকাটি করছে ওই দুই শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত জানায়, এডমিট কার্ড দেয়ার কথা বলে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত প্রিন্সিপাল ম্যাডাম (ইভানা তালুকদার) আমাদেরকে কলেজে এসে বসিয়ে রাখছে। বলছে সকালে কলেজে এসে এডমিট কার্ড নিও।
ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ, যাওয়ার সময় ম্যাডাম আমাদেরকে বলছে এডমিট কার্ড না পাওয়ার কথা কাউকে যেন না বলি। বললে আমাদেরকে নাকি পরীক্ষা দিতে দিবে না। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই কথা জানিয়েছে পরীক্ষা দিতে না পারা অপর ভুক্তভোগী ছাত্র সাজ্জাদ হোসেন।
কলেজ কর্তৃপক্ষের অনিয়মের অভিযোগ এনে শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেনের বাবা আবদুল গফুর অভিযোগ করে জানান, আমার ছেলে এখানে দীর্ঘদিন লেখাপড়া করে। আমার ছেলের রোল ১০৯১। কিন্তু, তারা আমার ছেলের রোল দিয়েছে ২০৯২। উনারা টাকা খেয়ে আমার ছেলের রোলে অন্যজনকে ঢুকিয়ে দিয়েছে।
হতাশ ওই শিক্ষার্থীর বাবা আরও বলেন, গতকাল রাতেও আমরা এখানে (উত্তরা স্কুলে) আসছি। প্রিন্সিপাল ম্যাডাম আমাদেরকে আশ্বাস দিয়ে বলেছেন যে, সকালে এডমিট কার্ড দিবে। কিন্তু এখনো আমরা পাইনি। উনারা এখন ফোন ধরতেছে না। আমার ছেলের জীবন নিয়ে এরা ছিনিমিনি খেলেছে। আমি এর বিচার চাই। উনারা টাকা খেয়ে আমার ছেলের রোল অন্য জায়গা এরা বিক্রি করে দিছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেনের মা বিলকিস বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার ছেলের জীবন নষ্ট হতে যাচ্ছে। আমার ছেলের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? সকাল থেকে কলেজের গেটে আমি দাঁড়িয়ে আছি। তারা (কর্তৃপক্ষের) কেউ দেখাও করে নাই, ফোনও ধরছে না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদারের মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল দিলেও তিনি সাংবাদিকদের ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও ডিএনসিসি অঞ্চল-১০ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি গতকাল রাতেই আমি জেনেছি। শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপে যে শিক্ষক দায়িত্বে ছিলেন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কোন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে? জানতে চাইলে জড়িত শিক্ষকের নাম জানাতে পারেননি তিনি।
তিনি আরও বলেন, ওই দুই শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে না পারার পেছনে যাদের গাফিলতি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক্ষেত্রে যদি প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের গাফিলতি থাকে তবে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: