বৃহঃস্পতিবার, ১৯শে জুন ২০২৫, ৫ই আষাঢ় ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল হতে পারে


প্রকাশিত:
১৯ জুন ২০২৫ ১১:২৫

আপডেট:
১৯ জুন ২০২৫ ১৬:৪৭

ছবি সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকার প্রথম বাজেট প্রস্তাবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বহাল রাখলেও তা এখন বাতিল করতে পারে। ২২ জুন প্রস্তাবিত এ বাজেট পাস করা হবে। সেখানে কালোটাকা সাদা করার সুযোগটি না–ও রাখা হতে পারে।

দেশে আগে থেকেই আয়কর আইনের তফসিলের মাধ্যমে এত দিন কালোটাকা বা অপ্রদর্শিত টাকায় ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ ছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে করহার কয়েক গুণ বাড়িয়ে সুবিধাটি বহাল রাখার প্রস্তাব করেন। এর পর থেকেই তা নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়। ফলে সরকার কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার অবস্থান থেকে সরে আসতে শুরু করেছে। সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব নেতাদের এক আবাসন খাতে কালোটাকা সাদা করার প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়।

অর্থ উপদেষ্টা ২ জুন নতুন বাজেট উপস্থাপন করেন। এতে তিনি অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট কেনার পাশাপাশি ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখেন। তবে আগের চেয়ে করের পরিমাণ বাড়িয়েছেন তিনি। সে অনুযায়ী এলাকাভেদে আয়তন অনুসারে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিলেই টাকার উৎস সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, এমনটা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ধরে নেবে বলে উল্লেখ করা হয়।

অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার ক্ষেত্রে দুটি শর্তও দেওয়া হয়। যদি আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের অধীন কোনো অপরাধমূলক কার্যক্রম থেকে উদ্ভূত হয় এবং কোনো বৈধ উৎস থেকে উদ্ভূত না হয়, তাহলে কালোটাকা সাদা করা যাবে না।

রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহর, জেলা শহর ও পৌর এলাকাভেদে প্রতি বর্গফুটে ১০০ থেকে ২ হাজার টাকা কর প্রস্তাব করেন অর্থ উপদেষ্টা। এ ছাড়া একই সুবিধা পেতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে এলাকাভেদে প্রতি বর্গফুটে ৫০ থেকে ৯০০ টাকা কর নির্ধারণের প্রস্তাব দেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কালোটাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা এসে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর বাতিল করেছিল। কিন্তু এই সরকারের অর্থ উপদেষ্টা প্রথম বাজেটেই নতুন করে করহার বাড়িয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বহাল রাখার প্রস্তাব করেন।

সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের দেওয়া চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের বাজেটে এক বছরের জন্য নগদ টাকার পাশাপাশি জমি, ফ্ল্যাট-প্লটসহ স্থাবর সম্পদ কেনার মাধ্যমে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সর্বোচ্চ করহারের চেয়ে কম কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার এ সুবিধার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই তীব্র সমালোচনা ছিল। এ সুযোগকে অনৈতিক ও সৎ করদাতাদের প্রতি অন্যায় হিসেবে বর্ণনা করেন বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষক।

অবশেষে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কালোটাকা সাদা করার বিধান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু আয়কর আইনের তফসিলে রাখা কালোটাকা সাদা করার সুবিধা বহাল থাকে।

প্রায় সব সরকারের আমলেই কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বছরের পর বছর এ সুযোগ দেওয়া হলেও অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থসম্পদ বৈধ করায় কখনোই তেমন সাড়া মেলেনি।

এনবিআরের সূত্রগুলো বলছে, এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে অপ্রদর্শিত প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা ঘোষণায় এসেছে, অর্থাৎ সাদা করা হয়েছে। বিএনপি সরকারের ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ ছিল না।

সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশ থেকে পাচার করা টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া হলেও কেউ সুযোগটি নেননি। এর এক বছর পরই আবারও কালোটাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ দেওয়া হয়।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top