স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা
প্রকাশিত:
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:০৯
আপডেট:
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:২৪

জয়পুরহাটে পারিবারিক কলহের জেরে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।নিহতের নাম রোকেয়া বেগম (৪৫)। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী জহির উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ (শনিবার) সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের বড় তাজপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ বলছে, ওই গৃহবধূর মাথার বাম পাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর স্বামীও বৈদ্যুতিক শকে আত্নহত্যার চেষ্টা করেছেন। তাকে গ্রেপ্তারের পর জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও গ্রামের লোকজন জানিয়েছেন, রোকেয়া বেগম ও জহির উদ্দিন দম্পতির এক ছেলে ঢাকায় রিকশা চালায়। ছেলের বউ বিদেশে থাকে। ওই দম্পতি তার দুই নাতিকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বসবাস করেন। দাম্পত্য জীবনে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়ে পড়তেন তারা। জহির উদ্দিন প্রায় দিনই তার স্ত্রীকে মারধর করতেন। শুক্রবার রাতেও তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে রোকেয়া বেগম নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোরের দিকে জহির উদ্দিন ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার স্ত্রীর মাথায় পেছন দিক দিয়ে কোপ দেন। এতে তার স্ত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এরপর জহির উদ্দিন বৈদ্যুতিক শক দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তিনি অসুস্থ হয়ে টয়লেটে পড়েছিলেন। সকালে তাদের ছোট দুই নাতি প্রতিবেশীদের জানালে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। একই সঙ্গে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে। পুলিশ জহির উদ্দিনকে অসুস্থ অবস্থায় গ্রেপ্তার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। বর্তমানে তিনি পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জহির উদ্দিনের ভাতিজা নূর ইসলাম বলেন, চাচা চোখে ঠিক মতো দেখতে পান না, নেশা করেন। আর চাচী কানে কথা কম শোনেন। চাচা দীর্ঘদিন ধরে কোন কাজ করেন না। চাচী অন্যের বাড়িতে মাঝে মধ্যে কাজ করেন। ছেলে তাদের খরচের টাকা দিতো। খরচ দিতে অনেক সময় দেরি হতো। আর চাচা-চাচী দুজনের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকতো।
নিহতের স্বজন রেহেনা বেগম বলেন, স্বামী-স্ত্রী দুজনের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো। কয়েকদিন মারধর করায় আগে রোকেয়া বেগম আমাদের ওখানে গিয়ে বলেছিল বেয়াইন আমি বাড়ি যাবো না। এবার বাড়ি গেলে মেরেই ফেলবে। পরে বাড়ি আসার পর আজ শুনি বেয়াইনকে খুন করা হয়েছে।
জয়পুরহাট থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) নাজমুল কাদের বলেন, নিহত গৃহবধূর মাথার পেছনে বাম পাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেওয়া হয়েছে। এতে কানের কিছু অংশ কেটে গেছে। নিহতের লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: