শনিবার, ১৭ই মে ২০২৫, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


আদালতের রায়ে অসন্তুষ্ট আছিয়ার মা


প্রকাশিত:
১৭ মে ২০২৫ ১২:১৮

আপডেট:
১৭ মে ২০২৫ ১৯:৫৪

ছবি সংগৃহীত

মাগুরায় শিশু আছিয়া হত্যা ও ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড এবং দুই ছেলে ও স্ত্রীকে খালাস ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু, এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আছিয়ার মা আয়েশা বেগম।

শনিবার (১৭ মে) সকালে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ মামলায় রায় ঘোষণা করার পর তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

ভুক্তভোগী আছিয়ার মা আয়েশা বলেন, হিটু শেখের ফাঁসির আদেশ হলেও অন্য তিনজন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এ রায় আমরা মেনে নিতে পারছি না।

মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, বাদী এই রায়ে সন্তুষ্ট হয়নি। তাই আমরা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেব এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা যায় কিনা।

এর আগে গত ৭ মে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ওই দিন শিশুটির ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকা দু’জন চিকিৎসক ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন।

গত ১৩ মার্চ ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আছিয়া।

এরও আগে মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে গত ৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। ঘটনার পর প্রথমে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল এবং পরে ফরিদপুর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটায় নেওয়া হয় ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।

ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার ৮ মার্চ শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, শাশুড়ি জাহেদা বেগম, বোন জামাই সজিব শেখ এবং সজিবের বড় ভাই রাতুল শেখকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় অভিযুক্ত ৪ আসামিই পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। তাদের উপস্থিতিতেই চলে বিচারিক কার্যক্রম।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন গত ১৩ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট জমা দিলে ২০ এপ্রিল মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান মামলাটি আমলে নিয়ে চার্জ গঠনের জন্য ২৩ এপ্রিল তারিখ নির্ধারণ করেন। চার্জ গঠনের পর ২৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয় মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ; শেষ হলো ৭ মে বুধবার ঢাকা মেডিকেলের দুই ডাক্তারের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে।

এদিকে মামলার বিচারকার্য চলাকালে অভিযুক্ত মূল আসামি হিটু শেখ আদালতে যাওয়া-আসার পথে উপস্থিত সাংবাদিকদের দেখে প্রতিদিনই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে শিশুটির বোন হামিদাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের আহ্বান জানান। অথচ, এ ঘটনায় একাই জড়িত বলে গত ১৫ মার্চ তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এর আগে ৬ মার্চ শিশুটির ধর্ষণের ঘটনার খবর প্রচার হলে মাগুরাসহ সারাদেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। সড়ক অবরোধ, থানা ও আদালত ঘেরাও করে সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে অপরাধীর শাস্তি দাবি করেন সর্বস্তরের মানুষ। স্থানীয় আইনজীবীরাও এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দাবির পাশাপাশি আসামিপক্ষকে কোনো প্রকার আইনি সহায়তা না দেওয়ার ঘোষণা দেন।

সরকারের পক্ষ থেকেও মামলাটিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়িত্বরত সরকার পক্ষের আইনজীবীকে সহায়তা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিযুক্ত স্পেশাল প্রসিকিউটার অ্যাডভাইজার (অ্যাটর্নি জেনারেল পদমর্যাদা) অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। একইসঙ্গে মামলার কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে আসামিপক্ষে সোহেল আহমেদ নামে একজন আইনজীবীকে নিয়োগ করা হয়।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top