মঙ্গলবার, ২৮শে অক্টোবর ২০২৫, ১৩ই কার্তিক ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


হিজাব নিয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য

রাবি অধ্যাপকের শাস্তির দাবিতে রাকসুর স্মারকলিপি প্রদান


প্রকাশিত:
২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:১৫

আপডেট:
২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:০০

ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ আল মামুনের হিজাব নিয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের প্রতিবাদে তার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভাগ বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) প্রতিনিধিরা।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১১টায় উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খান ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বকুল বরাবর এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ড. আ. আল মামুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাকসু নির্বাচনে বিজয়ী নারী প্রতিনিধিদের ছবি ও ব্যক্তিগত পোশাক, ধর্মীয় বিশ্বাস, টু-কোয়ার্টার প্যন্ট পরে ক্লাস করার ও ব্যক্তিস্বাধীনতা নিয়ে অবমাননাকর ও বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন। এ ছাড়া, তিনি পূর্বের একাধিক পোস্টে ‘বোরকা’, ‘কাঠমোল্লা’, ‘মদ’, ‘টু-কোয়াটার’ ও ‘সেক্সুয়াল রেভল্যুশন’—এর মতো শব্দ ব্যবহার করে শিক্ষাঙ্গনে উসকানিমূলক কনটেন্ট প্রকাশ করেছেন। যা শিক্ষকতার নৈতিকতা ও পেশাগত দায়িত্ববোধের গুরুতর লঙ্ঘন।

স্মারকলিপিতে রাকসু পাঁচ দফা দাবি জানায়। এর মধ্যে রয়েছে ড. আ. আল মামুনের প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনের সুস্পষ্ট নীতিমালা ঘোষণা, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা এবং সহিষ্ণুতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জোরদারে সচেতনতামূলক কার্যক্রম আয়োজন।

এ সময় রাকসুর নির্বাচিত নারীবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা হাফসা বলেন, গতকাল (সোমবার) রাতেই আল মামুন স্যারের করা মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা সব শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করেছি। তার ওই মন্তব্যের বিচার দাবিতে আজ (মঙ্গলবার) আমরা অফিসিয়ালি উপাচার্য বরাবর পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আল মামুন স্যার শুধু আমাদেরকেই নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অবমাননা ও হেয় প্রতিপন্ন করেছেন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে। যা মুসলিম নারীদের জন্য চরম অবমাননাকর এবং একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ মোটেও প্রত্যাশিত নয়। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক, যাতে ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক বা ব্যক্তি আর নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি এ ধরনের অবমাননাকর মন্তব্য করার সাহস না পায়।

এ বিষয়ে উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দিন খান বলেন, আমাদের সহকর্মী জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষক আল মামুন যে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তা আমরাও দেখেছি এবং এটিকে আমরা সীমালঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করছি। এ ধরনের মন্তব্য কোনো শিক্ষকের করা সমীচীন নয়। তিনি একটি ছাত্র সংগঠনকে ব্যঙ্গ করেছেন এবং সাংবাদিকদের টু-কোয়ার্টার প্যান্ট ও মদের বোতল নিয়ে ক্লাসে প্রবেশের চিত্র দেখার আহ্বান জানিয়েছেন, যা অত্যন্ত অনভিপ্রেত। সবকিছু বিবেচনা করে আমরা মনে করি, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশে এমন কাজ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা গতকাল রাতে শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়াও দেখেছি। সবাই আল মামুনের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ ও আন্দোলন করেছে। আজ আমরা এই বিষয়ে একটি স্মারকলিপিও পেয়েছি। আমাদের উপাচার্য বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছেন। তিনি ফিরে এলে আমরা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী যা করণীয়, তা অবশ্যই করা হবে। যে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্মারকলিপি প্রদানের সময় রাকসুর সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আম্মার, ক্রীড়া সম্পাদক নারগিস খাতুন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা হাফসা, সহমহিলা বিষয়ক সম্পাদক সামিয়া জাহান, মিডিয়া সম্পাদক মুজাহিদ ইসলাম, সহমিডিয়া সম্পাদক আসাদুল্লাহ গালিবসহ হল সংসদের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top