বৈশ্বিক বাণিজ্যিক অস্থিরতায়ও বাংলাদেশের সামনে বড় সুযোগ
 প্রকাশিত: 
                                                ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:০৩
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:৪২
                                                
                                        অর্থনীতিবিদ ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেছেন, বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমেরিকা চীনের বিকল্প বাজার খুঁজছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ নন-অ্যালাই বা ওপেনলি নন-পলিটিক্যাল দেশ হিসেবে একটি সম্ভাবনাময় গন্তব্য হতে পারে।
আজ সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম (বিবিএফ) আয়োজিত ‘বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের করণীয় ও এফবিসিসিআই এর ভূমিকা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মাসরুর রিয়াজ বলেন, বৈশ্বিক জরিপে দেখা গেছে ৩২ শতাংশ ফার্ম চায়না প্লাস ওয়ান কৌশলে যাচ্ছে। অর্থাৎ, তারা কেবল চীনে নয়, অন্যত্রও উৎপাদন ও আমদানির কেন্দ্র স্থাপন করছে। একইভাবে ৭২ শতাংশ গ্লোবাল ফার্ম মনে করছে, ট্রেড ও প্রোডাকশন রিডিস্ট্রিবিউশনের জন্য নন-অ্যালাই দেশগুলোই হবে সেরা জায়গা। এ কারণে বাংলাদেশের সামনে বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তবে তিনি সতর্ক করে দেন, সুযোগ থাকলেই যে তা কাজে লাগানো সম্ভব হবে, তা নয়; এজন্য বাংলাদেশের পাঁচটি বড় দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বর্তমানে গ্লোবাল কম্পিটেটিভ ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৫, যেখানে ভারত ও ভিয়েতনাম প্রায় ৬০-এর কাছাকাছি। আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন উন্নত করতে হবে। এছাড়া গভর্ন্যান্স ইমপ্রুভমেন্ট, তৈরি পোশাকের বাইরে বিকল্প খাত তৈরি করা ও পাবলিক-প্রাইভেট ডায়ালগ ও এভিডেন্স বেজড অ্যানালাইসিসে সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মাসরুর রিয়াজ আরও জানান, বাণিজ্যযুদ্ধের অভিঘাতে ২০২৫ সালে বাংলাদেশের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশিত ৩ শতাংশ থেকে কমে ২ শতাংশে নেমে আসবে। ২০২৬ সালে এটি ২ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ট্যারিফ নীতির কারণে বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২৫ সালে ০ দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যার বড় প্রভাব পড়েছে এশিয়ায়।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি আবদুল হক বলেন, বাংলাদেশের রফতানি প্রায় ৬৫ শতাংশ ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রনির্ভর। ফলে কয়েকটি গন্তব্যের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা তৈরি হয়েছে। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নতুন বাজারে প্রবেশে শুল্ক-কোটা বাধা, মান নিয়ন্ত্রণের কঠোরতা ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ঘাটতি বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল্লাহ চৌধুরী বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এফবিসিসিআই কার্যত অকার্যকর ছিল এবং সংগঠনটি ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারেনি। গণঅভ্যুত্থানের পর সংগঠনটির নেতৃত্বে একজন সাবেক আমলাকে বসানো হয়েছে, যার ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে অভিজ্ঞতা নেই।
ব্যবসায়ীদের বর্তমান অবস্থা ‘এতিমের মতো’ আখ্যা দিয়ে আবদুল হক বলেন, আমরা কার কাছে যাব, কোথায় যাব, কী করব বুঝতে পারছি না। হঠাৎ করে পোর্ট চার্জ বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
অনুষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সম্পর্কিত বিষয়:



                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: