প্রশ্ন শহীদ পরিবারের
আসামি ধরে যদি শাস্তি দিতে না পারে, তবে উপদেষ্টারা চেয়ারে বসে আছেন কেন?
 প্রকাশিত: 
                                                ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:২৬
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:৪৪
                                                
                                        আসামি ধরে যদি শাস্তি দিতে না পারেন, তাহলে আইন উপদেষ্টা চেয়ারে বসে আছেন কেন? উনি পদত্যাগ করুক। উপদেষ্টারা চেয়ারে বসে আছে কেন? আর আমরা কেন এখন বিচার চাইব?
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন জুলাই আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা। আমরা ২৪ জুলাই যোদ্ধা নামক সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেছেন সংগঠনটির সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম ইমন। সঞ্চালনা করেছেন জুলাইয়ে আহত মো. আল মিরাজ।
বিক্ষোভ সমাবেশে শহীদ সায়েমের মা শিউলি আক্তার বলেন, আমার ছেলে সায়েম ১৯ জুলাই যাত্রাবাড়ীর কাজলায় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। বর্তমানে এক বছরের বেশি সময় হয়ে গেছে। কিন্তু, পুলিশ যে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে, এর কোনো বিচার আমরা পাইনি। আমরা বিচারের জন্য রাজপথে ঘুরছি, কিন্তু বিচার পাই না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলে ধরে তিনি বলেন, আপনারা কী করছেন? আমাদের ছেলেদেরকে যারা হত্যা করেছে, তাদেরকে ধরে ধরে কেন ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে? আসামি ধরে যদি শাস্তি দিতে না পারে, তাহলে আইন উপদেষ্টা চেয়ারে বসে আছেন কেন? উনি পদত্যাগ করুক। উপদেষ্টারা চেয়ারে বসে আছে কেন? আমরা যেন সন্তানহারা হয়েছি, সেটা কি উপদেষ্টারা বুঝতেছেন না? আমরা কেন এখন বিচার চাইব। বিচার চাওয়ার জন্য তো আমাদের ছেলেরা দেশ স্বাধীন করেনি।
এ সময় আহত শারমিন আক্তার বলেন, আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যুদ্ধ করিনি। দেশকে পরিবর্তনের জন্য যুদ্ধ করেছি। ইতোমধ্যে এক বছর পার হয়ে গেছে। আমরা না পেয়েছি নিজেদের স্বাধীনতা, না পেয়েছি অধিকার। আমাদের ভাইয়েরা এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। কিন্তু, ওইদিকে ফ্যাসিস্টরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। আমাদের আর্তনাদ আপনাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না। আপনাদের কি আরও রক্ত চাই? যারা এ দেশের উর্ধ্বতন কর্মকতা আছেন, তাদের মনে হয় আরও রক্ত চায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা জুলাই সনদ চেয়েছি। কিন্তু, আমরা কি শুধু নিজেদের জন্য এই সনদ চেয়েছি! জুলাই সনদ শুধু একটি সনদ নয়। এটি দেশের ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির সনদ। আশা করি, জুলাই সনদ নিয়ে কোনো তালবাহানা করবেন না। এসি রুম এবং বিলাসবহুল বাড়িতে বসে আপনারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) কোনো সিদ্ধান্ত বা নীতিমালা দিয়েন না। আপনারা ওই সব পরিবারের কাছে যান, যারা হারিয়েছে তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। যারা তাদের পরিবারের একমাত্র সন্তানকে হারিয়েছে, আপনারা ওই সব পরিবারের কাছে যান। যে শিশু জন্মের আগে তার পিতাকে হারিয়েছে, ওই পরিবারের কাছে যান। তাদের আর্তনাদ আগে দেখেন। এরপর আপনারা সিদ্ধান্ত নেন।
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আপনারা কি ফ্যাসিবাদী মতাদর্শে এখনো নিজেদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন? আপনারা আমাদের ন্যায্য অধিকার দেন। আমাদেরকে হয়রানি কইরেন না। আমরা বিভিন্ন তথ্য মন্ত্রণালয়ে বারবার জমা দেই, কিন্তু আমাদের তথ্য ঠিকমতো সাবমিট করা হয় না। প্রয়োজনে আপনারা সিস্টেম পরিবর্তন করেন। তারপরও আমাদেরকে হয়রানি কইরেন না।
আহত সায়মান শাহাদাত বলেন, আমাদের জুলাই যোদ্ধাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। আহত এবং শহীদদের পুনর্বাসন করতে হবে। আসামিরা কেন বাইরে ঘুরে বেড়ায়, এটা আমরা জানতে চাই। যেসব পুলিশ জুলাই যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে, আমরা এটার প্রতিকার এবং প্রত্যাহার চাই।
সম্পর্কিত বিষয়:



                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: