8436

05/17/2024 '১' রানের জয়ে তৃতীয়বারের মত চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা

'১' রানের জয়ে তৃতীয়বারের মত চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা

ক্রীড়া ডেস্ক

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:২১

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসরের ফাইনালে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ১ রানে হারিয়ে তৃতীয় শিরোপা জিতল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। অন্যদিকে তিনবার ফাইনাল খেলে তিনবারই রানার-আপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকলে হল বরিশালের প্রতিনিধিত্বকারী দলকে।

রাজধানী ঢাকার মিরপুরে শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত সূচনা পেলেও নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান সংগ্রহ করে কুমিল্লা। ১৫২ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫০ রান তুলতে পারে সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল।

জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বরিশাল শুরুতেই হারিয়ে ফেলে ফর্মে থাকা মুনিম শাহরিয়ারকে (৭ বলে ০)। তবে মুনিমের অভাব পূরণ করেন একাদশে ফেরা সৈকত আলী। ৩৪ বলে ১১টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৫৮ রান করে দলকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যান। সৈকতের মত মারকুটে ব্যাটিং না দেখালেও চওড়া ছিল ক্রিস গেইলের ব্যাট। সাজঘরে ফেরার আগে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩১ বলে ৩৩ রান করেন তিনি। সাকিব আল হাসান (৭ বলে ৭) আউট হলে শেষদিকে দায়িত্ব বর্তায় নুরুল হাসান সোহান (১৩ বলে ১৪) ও নাজমুল হোসেন শান্তর (১৫ বলে ১২) কাঁধে।

তবে সোহান-শান্ত দুজনই সাজঘরে ফেরেন দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছে। ১ রান করে আউট হন ডোয়াইন ব্রাভো। এতে ধীরে ধীরে ম্যাচ কঠিন হয়ে যায় বরিশালের জন্য।

শেষপর্যন্ত নারাইনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যই গড়ে দেয় পার্থক্য। ২০তম ওভারের প্রথম বলটি ডট দেন শহিদুল। পরের দুই বলে একটি করে রান নেন তওহিদ এবং মুজিব, চতুর্থ বলটি ওয়াইড হলে শেষ তিন বলে বরিশালের দরকার হয় ৭ রানের। পরের দুই বলে দুটি ডাবল নিলে শেষ বলে বরিশালের জয়ের জন্য দরকার থাকে আর তিন রানের। তবে শেষ বলে একটি রানই নিতে পারে বরিশাল। আর এতেই ১ রানের রুদ্ধশ্বাস জয় পায় কুমিল্লা। আর ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বাধীন ভিক্টোরিয়ান্সরা মাতে তৃতীয় শিরোপা জয়ের উল্লাসে।

কুমিল্লার হয়ে দুটি করে উইকেট নেন সুনিল নারিন এবং তানভির ইসলাম। আর একটি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান এবং শহিদুল ইসলাম।

এর আগে, টসে জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামা কুমিল্লাকে দারুণ শুরু এনে দেন সুনীল নারাইন। একপ্রান্তে লিটন দাসকে দর্শক বানিয়ে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার। আফগান স্পিনার মুজিব-উর-রহমানের করা প্রথম ওভারেই নারাইন ঝড়ে এলো ১৮ রান। এর মধ্যে ২ ছক্কা ও ১ চারসহ ১৭ রান এসেছে তার ব্যাট থেকেই। পরের ওভারে শফিকুল ইসলামের বলে ফের ২ ছক্কা ও ১ চার হাঁকান তিনি। ওই ওভারেও আসে ১৮ রান।

নারাইন ঝড়ের মাঝে লিটন ছিলেন নিষ্প্রভ। ৬ বলে ৪ রান করে সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হয়ে যান এই ওপেনার। ভাঙে ১৮ বলে ৪০ রানের ওপেনিং জুটি। এরপর নারাইন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে মাত্র ২১ বলে তুলে নেন ফিফটি। আগের ম্যাচেই তিনি বিপিএলে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েছিলেন। অবশেষে এই ক্যারিবীয়কে থামান মেহেদি রানা। তার একটি স্লোয়ার উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিসটাইমিং হয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ধরা পড়েন ২৩ বলে ৫টি করে চার-ছক্কায় ৫৭ রান করা নারাইন।

নারাইন বিদায় নিতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়ে কুমিল্লা। একে একে বিদায় নেন মাহমুদুল হাসান জয় (৮), ফাফ ডু প্লেসি (৪), ইমরুল কায়েস (১২) এবং আরিফুল হক (০)। দলীয় ৯৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলকে টেনে তোলার কাজ শুরু করেন মঈন। আবু হায়দারকে নিয়ে সাবধানী ব্যাটিংয়ে ধাক্কা কিছুটা সামাল দেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। দুজনের জুটিতে আসে ৫১ বলে ৫৩ রান।

শফিকুলের করা ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে দৌড়ে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে ফেরেন মঈন। সাকিবের দুর্দান্ত থ্রোয়ে স্ট্যাম্প ভাঙেন নুরুল। মঈন ৩২ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ৩৮ রান। ওই ওভারে আরও ২ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় কুমিল্লা। এর মধ্যে আবু হায়দার (১৯) কট অ্যান্ড বোল্ড এবং শহীদুল ইসলাম (০) ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ফলে ১৫১ রানে থামে কুমিল্লার ইনিংস।

ফরচুন বরিশালের হয়ে বল হাতে ২৭ রান খরচায় দুটি উইকেট নেন মুজিব উর রহমান। শফিকুলও নিয়েছেন দুটি উইকেট। ৩০ রান দিয়ে সাকিব আল হাসান নিয়েছেন এক উইকেট। মেহেদী হাসান রানা ও ব্রাভোর শিকারও একটি।

ব্যাট হাতে ২৩ বলে ৫৭ রান সংগ্রহ করার পর বোলিংয়ে নেমে ৪ ওভারে ১৫ রানে ২ উটকেট শিকার করে প্লেয়ার অব দ্যা ম্যাচ পুরস্কার পেয়েছেন কুমিল্লার অলরাউন্ডার সুনীল নারাইন।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]