631

05/17/2024 পাবনায় আম্ফানে লিচুসহ ২শ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি

পাবনায় আম্ফানে লিচুসহ ২শ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি

জেলা সংবাদদাতা, পাবনা

২৩ মে ২০২০ ০২:০১

দেশের অন্যতম ফল ও ফসল আবাদ এলাকা হিসাবে পরিচিত পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পদ্মানদী তীরবর্তী বেশে কিছু এলাকা। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পাবনার অধিকাংশ এলাকার লিচুসহ অন্যান্য ফসলি জমি। আবাদ মৌসুমের শেষ প্রান্তে এসে বাগান নষ্ট হয়ে পড়ায় সর্বশান্ত হতে বসেছেন জেলার মৌসুমি ফল চাষিরা। ঝরে পড়া লিচু পানির দামে বিক্রি হচ্ছে মহাসড়কে ওপর। এই অঞ্চলের চাষকৃত ফল ও নানা প্রজাতির সবজি স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা পূরণ করে থাকে। আম্ফানে প্রভাবে জেলায় লিচুসহ সব ধরনের ফসলের প্রায় ২শ কোটি টাকার সমপরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছেন কৃষি বিভাগ। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা ফলচাষে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারি প্রণোদনার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।

চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় লিচুসহ অন্যান্য ফসলের বেশ ভালো ফলন হয়েছিল। আবাদ মৌসুমের প্রায় শেষ প্রান্তে এসে বুধবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে ঈশ্বরদী উপজেলার লিচুর বাগানগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বেশিরভাগ লিচুর বাগানের ডাল ভেঙে লিচু ঝরে পড়েছে মাটিতে। গাছে যেগুলো আছে সেগুলোও ঝড়ের প্রভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। ফলে এ উপজেলার লিচু চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। যেসব চাষিরা মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে দাদন নিয়ে লিচু আবাদ করেছিলেন তারা জানেন না কীভাবে মহাজনের সেই টাকা পরিশোধে করবেন। এদিকে রাতে ঝরে পড়া লিচু পানির দামে বিক্রি হচ্ছে ঈশ্বরদী-কুষ্টিয়া মহাসড়কের ওপর। ১শ লিচু মাত্র ৩০-৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

পাবনা ও ঈশ্বরদী উপজেলার সোলিমপুর, সাহাপুর, পাকশী, রূপপুর, আওতাপাড়া, বাশেরবাদা, দাপুনিয়াসহ আটটি উইনিয়নে লিচুর ব্যাপক আবাদ হয়ে থাকে। এ ছাড়া জেলার পুষ্পপাড়া, জালালপুর, একদন্ততেও লিচুর আবাদ হয়। জেলায় চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে ৪৬ হাজার টন লিচুর আবাদ হয়েছিল। এর মধ্যে পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে চলতি মৌসুমে জেলায় যত ধরনের ফসল বা ফল ছিল সব কিছু ১৫-২০ শতাংশ ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আর এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে লিচুর।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মৌসুমি ফল ব্যাপারিরা জানান, মহামারি করোনার কারণে হাট বাজারে জনসমাগম না থাকায় তাদের বেচাবিক্রি এমনিতেই কমে গেছে। তার ওপরে ঝড়ের তাণ্ডবে ফলের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এই কারণে প্রান্তিক চাষিসহ মধ্যস্থতাকারী ফলের ব্যবসায়ী যারা রয়েছি তাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করা হলে তবেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আজহার আলী জানান, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বাগান ও কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া গেলে তা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]