4740

05/19/2024 করোনা আক্রান্ত শ্বশুরকে পিঠে করে হাসপাতালে নীহারিকা!

করোনা আক্রান্ত শ্বশুরকে পিঠে করে হাসপাতালে নীহারিকা!

রকমারি ডেস্ক

৬ জুন ২০২১ ১৬:৩৭

শ্বশুরের জ্বর ও করোনার উপসর্গ। পাশাপাশি তিনি নিজেও করোনা রোগী। কিন্তু বাড়িতে কেউ নেই। কাজের জন্য স্বামী সূরজ বাইরে থাকেন। ফলে ৭৫ বছর বয়সী শ্বশুর থুলেশ্বরের দেখভাল, সংসার সামলানো সবই করতে হয় পুত্রবধূ নীহারিকাকে।

এরই মধ্যে শ্বশুরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে পরীক্ষা করাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেকের সাহায্য চান। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। বাধ্য হয়ে বৃদ্ধ শ্বশুরকে পিঠে চাপিয়ে হাসপাতালে রওনা দেন ভারতের আসামের এই নারী। নীহারিকা দাসের এই ছবি এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল।

আসামের অভিনেত্রী থেকে বিহার-মুম্বই-চেন্নাইয়ের বহু মানুষ কুর্নিশ জানাচ্ছেন নগাঁও জেলার নীহারিকাকে। কিন্তু জনপ্রিয়তা, ভাইরাল হওয়া, মানুষের কুর্নিশে আপাতত পাত্তা দেওয়ার অবস্থায় নেই নিজেও কোভিডে আক্রান্ত নীহারিকার। একটাই চিন্তা, একা হাতে নিজেকে আর শ্বশুরকে কীভাবে সামলাবেন।

হাসপাতালে নিয়ে আসার পর পরীক্ষা করে জানা গেল থুলেশ্বরের করোনা পজিটিভ। পরে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থুলেশ্বর ও নীহারিকাকে হোম আইসোলেশনে পাঠান। কিন্তু অসহায় শ্বশুরকে একা ছাড়তে রাজি হননি নীহারিকা। বসে থাকেন হাসপাতালে। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসক সঙ্গীতা ধর দু’জনকেই অ্যাম্বুল্যান্সে ভোগেশ্বর ফুকনানি হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

হাসপাতালে জেনারেল ওয়ার্ড থেকে নিয়ম করে এসে আইসিইউতে ভর্তি শ্বশুরের সেবা করছিলেন নীহারিকা। সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। কখনও বউমা শ্বশুরের কপালে চুমু খেয়ে সাহস দেন। কখনও মজা করেন।

কিন্তু থুলেশ্বরের অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় গতকাল তাকে গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। সেখানে যেতে পারেননি নীহারিকা। তিনি ভিডিও বার্তায় হাতজোড় করে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘শ্বশুরের রক্ত লাগবে শুনছি। তার পাশে কেউ নেই। আমার নিজের শরীর খারাপ হচ্ছে। শক্তি শেষ হয়ে আসছে। দয়া করে আমায় গুয়াহাটির একই হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। না হলে শ্বশুরকে সাহায্যের কেউ থাকবে না।’

নীহারিকার ছবি ও ভিডিও দেখে মুগ্ধ অভিনেত্রী আইমি বরুয়া বলেন, ‘নারীশক্তির অনন্য চেহারা নীহারিকা।’ অবশ্য অনেকেই মন্তব্য করছেন, পিঠে করে শ্বশুরকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টির পিছনে যে পরিকাঠামোর অভাব, সরকারি সদিচ্ছার অভাব, দারিদ্র্যের যন্ত্রণা লুকিয়ে রয়েছে- তার সমালোচনা ও সংশোধন হওয়া বেশি প্রয়োজন।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]