ইসরায়েলি এক জিম্মির মরদেহের বিনিময়ে ১৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দিয়েছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে বুধবার ওই ফিলিস্তিনিদের মরদেহ ফেরত দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
তবে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে যে জিম্মিদের ধরে নিয়ে গিয়েছিল গাজায়, তাদের মধ্যে অন্তত দুজনের মরদেহ এখনও ফেরত দেয়নি গোষ্ঠীটি। ওই দুই জিম্মির একজন ইসরায়েলি ও অন্যজন থাই নাগরিক। প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় মরদেহ বিনিময় শেষের পথে রয়েছে।
বুধবার হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেছেন, হামাস ওই দুই জিম্মির মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। ইসরায়েল অভিযোগ করে বলেছে, ১৩ অক্টোবর শেষ জীবিত জিম্মিদের মুক্তির পর থেকে হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করছে। তবে হামাস বলছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে মরদেহগুলো উদ্ধারে সময় লাগছে।
তুরস্ক, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা মঙ্গলবার কায়রোতে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা করেছেন। গত ১০ অক্টোবর যে চুক্তি হয় তার ধারাবাহিকতায় এই আলোচনা শুরু হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে গাজায় সশস্ত্র আন্তর্জাতিক বাহিনী (আইএসএফ) মোতায়েন এবং গাজা শাসন ও পুনর্গঠন তদারকির জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। গাজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত ও হামাসকে নিরস্ত্র করাই হবে আইএসএফের দায়িত্ব; যা ইসরায়েলের মূল দাবি। ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা এই বাহিনীতে ২০ হাজার শান্তিরক্ষী পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন।
পরিকল্পনার প্রায় প্রতিটি অংশ এবং যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন-সময়সীমা নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে। দুই পক্ষেরই লঙ্ঘনের অভিযোগ সত্ত্বেও নাজুক এই যুদ্ধবিরতি এখনও টিকে আছে।
এদিকে পশ্চিম তীরের এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বুধবার অভিযোগ করেছেন, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বৃহৎ সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েল। ইসরায়েল বলছে, তারা ব্যাপক পরিসরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করেছে। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনও তথ্য জানায়নি ইসরায়েল।
চুক্তি অনুযায়ী, উদ্ধার হওয়া প্রত্যেক জিম্মির বিপরীতে ইসরায়েল ১৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দেওয়ার কথা রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৪৫ ফিলিস্তিনির মৃতদেহ ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে কারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন, কারা ইসরায়েলি হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা গেছেন কিংবা যুদ্ধের সময় ইসরায়েলি সেনারা গাজা থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল; তা এখনও পরিষ্কার নয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, এখন পর্যন্ত মাত্র ৯৯ জনের মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে। গাজায় ডিএনএ পরীক্ষার কিটের ঘাটতির কারণে পরিচয় যাচাই জটিল হয়ে পড়েছে।