45278

11/25/2025 তিন ব্যক্তির ডিএনএ থেকে জন্ম হলো জেনেটিক রোগমুক্ত সুস্থ শিশুর

তিন ব্যক্তির ডিএনএ থেকে জন্ম হলো জেনেটিক রোগমুক্ত সুস্থ শিশুর

রকমারি ডেস্ক

২৪ নভেম্বর ২০২৫ ১১:০৯

যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা একটি যুগান্তকারী পদ্ধতিতে তিনজন ব্যক্তির ডিএনএ ব্যবহার করে, আটটি সুস্থ শিশুর জন্ম দিয়েছেন। এই পদ্ধতিটি হলো মাইটোকন্ড্রিয়াল রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি, যা মায়েদের থেকে তাদের সন্তানদের মধ্যে সঞ্চারিত হওয়া মারাত্মক জেনেটিক রোগ প্রতিরোধ করে।

এই পদ্ধতিতে, মায়ের ডিম্বাণু থেকে নিউক্লিয়াস সরিয়ে নিয়ে, ডোনার ডিম্বাণুর নিউক্লিয়াস প্রতিস্থাপন করা হয়। এই প্রতিস্থাপিত ডিম্বাণুটি এরপর আইভিএফ (ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পিতার শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত করা হয়, যা পরে মায়ের গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হয়।

এর ফলে, শিশুটি তার মায়ের কাছ থেকে বেশিরভাগ ডিএনএ (প্রায় ৯৯.৯%) এবং ডোনার মায়ের কাছ থেকে সামান্য পরিমাণ ডিএনএ (০.১%) পায়, যা মাইটোকন্ড্রিয়াতে থাকে। এই পদ্ধতিটি মূলত মাইটোকন্ড্রিয়াল রোগের ঝুঁকি কমাতে ব্যবহৃত হয়, যা একটি মারাত্মক রোগ এবং এটা শিশুদের মধ্যে দেখা যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে জন্মের কয়েক দিনের মধ্যেই শিশুর  মৃত্যু হতে পারে। এই আট শিশুর কেউই মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ রোগের লক্ষণ বহন করছে না। 

চার ছেলে ও চার মেয়ের এই শিশুদের মধ্যে একজোড়া যমজও রয়েছে। এদের সাতজন মায়ের মধ্যে জন্ম হয়েছে যাদের মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ-তে বিপজ্জনক রূপান্তরের কারণে গুরুতর রোগ সন্তানের মাঝে স্থানান্তরিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি ছিল। নিউক্যাসলের গবেষকদল যে পদ্ধতিতে নিষিক্ত মানব ডিম্বাণু ব্যবহার করে মাইটোকন্ড্রিয়াল দান প্রযুক্তি চালু করেছে, সেটিকে প্রোনিউক্লিয়ার ট্রান্সফার বলা হয়। এই পদ্ধতিটি প্রথম মানব ডিম্বাণুতে প্রয়োগ করেন নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয় এবং Newcastle upon Tyne Hospitals NHS Foundation Trust-এর গবেষকেরা। একজন মা যিনি মাইটোকন্ড্রিয়াল ডোনেশন প্রযুক্তির মাধ্যমে কন্যাসন্তান পেয়েছেন তিনি বলেন: আমরা শুধু চাইছিলাম আমাদের সন্তান যেন সুস্থভাবে জীবন শুরু করতে পারে।

মাইটোকন্ড্রিয়াল ডোনেশন আইভিএফ আমাদের সেই সুযোগ দিয়েছে। অনেক অনিশ্চয়তার পর এই চিকিৎসা আমাদের আশার আলো দিয়েছে। নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর স্যার ডগ টার্নবুল বলেন, মাইটোকন্ড্রিয়াল রোগ পরিবারের জন্য ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। আজকের খবর আরও অনেক নারীর জন্য আশার আলো জ্বালালো। যারা এই রোগ সন্তানের মাঝে স্থানান্তর করার ঝুঁকিতে আছেন। NHS-এর কাঠামোর মধ্যে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে আমরা এখন মাইটোকন্ড্রিয়াল ডোনেশন গবেষণার অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যে প্রস্তাব করতে পারছি। প্রতি বছর প্রায় প্রতি ৫,০০০ শিশুর মধ্যে একজন মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ রূপান্তরের কারণে গুরুতর রোগ নিয়ে জন্মায়।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]