শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেছেন, দীর্ঘ দেড় দশকের দমন–পীড়নের অবসান ঘটিয়ে দেশ আজ এক নতুন সূচনার পথে এগোচ্ছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্মের সাহসী ও ঐতিহাসিক ভূমিকা আমাদের জাতীয় জীবনে অনন্য নজির হয়ে থাকবে।
শনিবার (২২ নভেম্বর) হাজি মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) দ্বিতীয় সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. আবরার বলেন, শাসকগোষ্ঠীর নানা কৌশলে শিক্ষাঙ্গণের পরিবেশ নষ্ট করা হয়েছিল, মেধাকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হয়েছিল। অথচ শিক্ষার্থীরাই প্রতিবাদ, লেখনী ও সচেতনতার মাধ্যমে জাতিকে আবারও সঠিক পথে ফিরিয়ে এনেছে।
বর্তমানে সমাজে বৈষম্য, মূল্যবোধ হ্রাস এবং বহিঃশত্রুর নানামুখী চাপ বিদ্যমান। দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সতর্ক, দায়িত্বশীল ও নৈতিক নেতৃত্বের গুরুত্ব এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
উচ্চশিক্ষায় গুণগতমান উন্নয়ন ও গবেষণা প্রসারে সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গবেষণা কার্যক্রমে গতিসঞ্চারে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। সেজন্য আমরা শিক্ষক–গবেষকদের গবেষণায় আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানাই। শিক্ষার্থীদেরও গবেষণা ও উদ্ভাবনে যুক্ত করতে হবে, যাতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেন ড. আবরার। তিনি বলেন, ১৮ কোটি মানুষের কষ্টার্জিত অর্থে পরিচালিত এ বিশ্ববিদ্যালয় একটি পবিত্র আমানত। প্রশাসনিক, আর্থিক ও একাডেমিক প্রতিটি ক্ষেত্রে ন্যায্যতা নিশ্চিত করা জরুরি।
নতুন গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের সাফল্যের পেছনে শিক্ষক–শিক্ষিকাদের অক্লান্ত পরিশ্রম রয়েছে। দেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও মানবিক সমাজ নির্মাণে তরুণরাই হবে নেতৃত্বের প্রধান শক্তি। পরিশেষে তিনি হাবিপ্রবির ধারাবাহিক সাফল্য ও অগ্রগতির জন্য শুভকামনা জানান।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। আরও উপস্থিত ছিলেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজিমউদ্দিন খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ এনামউল্যা, প্রো–ভাইসচ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সিকদার, ট্রেজারার প্রফেসর ড. এম. জাহাঙ্গীর কবিরসহ রিজেন্ট বোর্ড, একাডেমিক কাউন্সিল, শিক্ষক, কর্মকর্তারা।
সমাবর্তনে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি মিলিয়ে আট হাজারের বেশি গ্র্যাজুয়েট সনদ গ্রহণ করেন।