45123

11/18/2025 লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা : বিজেপির ‘মিশন বেঙ্গল’ শুরু

লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা : বিজেপির ‘মিশন বেঙ্গল’ শুরু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৮ নভেম্বর ২০২৫ ১২:৪০

গত বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের লাগোয়া রাজ্য পশ্চিমঙ্গের বিধানসভা দখলের চেষ্টা করছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে আসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি ওরফে বিজেপি। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী দুই ভারতীয় রাজ্য আসাম ও ত্রিপুরার বিধানসভায় ইতোমধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে সর্বভারতীয় এই দলটি।

কিন্তু বছরের পর বছর ব্যাপী প্রচেষ্টায় পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অবস্থান মোটামুটি শক্ত হলেও বিধানসভা এখনও অধরা থেকে গেছে দলটির কাছে।

তবে বিহারের সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ-এর ভূমিধস জয় বিজেপির সেই প্রচেষ্টার পালে নতুন হাওয়া দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকে এখন রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে বিজেপির হাইকমান্ড।

পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ু এ দু’টি রাজ্য শিক্ষা-দীক্ষা, অর্থনীতি এবং সংস্কৃতিগতভাবে ভারতের অন্যান্য রাজ্য থেকে অনেক অগ্রসর। এই অগ্রসরতা সেই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের আমল থেকেই। ব্রিটিশরা এই দুই রাজ্যে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি করেছিল।

বিজেপিও এ দুই রাজ্যকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে। ভারতের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপির সাবেক প্রেসিডেন্ট অমিত শাহ একবার বলেছিলেন, বিজেপির সত্যিকার উত্থান সেইদিন ঘটবে যে দিন পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুতে বিজেপি নিজেদের রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী আনতে পারবে।

২০২৬ সালের মার্চ অথবা এপ্রিল মাসে হবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন। দলের হাইকমান্ডের সূত্র দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, রাজ্যের বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। এই লক্ষ্যের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিশন বেঙ্গল’।

বিজেপির হাইকমান্ডের তথ্য অনুসারে, ‘মিশন বেঙ্গল’ এর প্রথম ধাপ হলো পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় দলের সবচেয়ে প্রভাশালী নেতা-নেত্রীদের নিয়োগ করা। এ বিষয়ক প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে দলটির। প্রচার-প্রচারণার মৌসুম শুরু হলেই প্রথম পদক্ষেপের বাস্তবায়ন শুরু হবে।

এছাড়া ভোটার তালিকা সংশোধন ও স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিভ রিভিশন বা এসআইআর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিজেপি। রাজ্য সরকারের ক্ষমতাসীন তৃণমূলের বাধার কারণে কর্মসূচির বাস্তবায়ন এখনও মাঠ পর্যায়ে জোরেশোরে শুরু করা যায়নি, তবে নিকট ভবিষ্যতেই এই বাধা কেটে যাবে বলে বিশ্বাস করেন দলটির নেতারা

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার মোট আসনসংখ্যা ২৯৫টি। এগুলোর মধ্যে ২৯৪টি আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়। কোনো দল বা জোট যদি সরকার গঠন করতে চায়, তাহলে সেই দল বা জোটের কমপক্ষে ১৪৮টি আসনে জয়ী হতে হবে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৬০টি আসনে জয়ের লক্ষ্য নিয়েছে।

দলের নেতা ও মুখপাত্ররা বলেছেন, এই লক্ষ্য তেমন ‘কঠিন’ নয়। কারণ এই ১৬০টি আসনের মধ্যে ১২০টিতে বর্তমানে কিংবা অতীতের কোনো না কোনো সময় বিজেপি ক্ষমতাসীন ছিল।

পশ্চিমবঙ্গে ভোটিং বুথ আছে মোট ৯১ হাজারটি। এর মধ্যে ৭০ হাজার বুথে বুথকমিটি গঠন করেছে বিজেপি, বাকি বুথগুলোতেও শিগগিরই কমিটি করা হবে।

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। এই দলটিকে বাগে আনতে ‘ত্রিমুখি’ কৌশল অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। প্রথম কৌশল হলো তৃণমূলের পরিবারতন্ত্র এবং দুর্নীতিকে আক্রমণ করা। দ্বিতীয় কৌশল হলো তৃণমূল কংগ্রেসের মুসলিম তোষনবাদী রাজনীতিকে আক্রমণ করা।

আর তৃতীয় কৌশলটি হলো ব্যাপকভাবে পশ্চিমবঙ্গের নারী ভোটারদের কাছে যাওয়া এবং নারীদের নিরাপত্তা ও স্বনির্ভরতা অর্জন সংক্রান্ত একগুচ্ছ পরিকল্পনা ঘোষণা করা।

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির এক নেতা এনডিটিভিকে বলেছেন, “বাম শাসনামল এবং বর্তমান তৃণমূল আমলের প্রতিটি নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল বিজয়ী হয়েছে ভোট কারচুপির মাধ্যমে। আমরা পশ্চিমবঙ্গে এই নজির দেখাতে চাই যে কারচুপি ছাড়াও নির্বাচনে জয়ী হওয়া সম্ভব।”

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]