44655

10/30/2025 দুপুরে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দিয়ে সন্ধ্যায় ফের ইসরায়েলের হামলা

দুপুরে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দিয়ে সন্ধ্যায় ফের ইসরায়েলের হামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১০:০৬

যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর রাখার ঘোষণা দিয়েও গাজায় নতুন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সর্বশেষ এই হামলায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতের হামলায় নিহত হয়েছিলেন শতাধিক মানুষ। তাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

এমন অবস্থায় শান্তি প্রচেষ্টাকে ‘হাতছাড়া না করতে’ সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, অস্ত্রবিরতি পুনরায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েও নতুন করে গাজায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বুধবার সন্ধ্যায় উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় চালানো ওই হামলায় অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আল-শিফা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা এমন একটি স্থানে হামলা চালিয়েছে যেখানে অস্ত্র মজুত ছিল এবং সেগুলো তাদের সেনাদের জন্য ‘তাৎক্ষণিক হুমকি’ তৈরি করেছিল।

এই হামলা গাজার নাজুক অস্ত্রবিরতিকে নতুন করে অনিশ্চয়তায় ফেলেছে। এর আগে গত মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ‘প্রতিশোধমূলক জোরালো হামলার’ নির্দেশ দেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ওই হামলায় ১০৪ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

ইসরায়েল জানায়, তারা হামাসের সিনিয়র যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে এই হামলা করেছে এবং ‘ডজনখানেক’ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এরপর বুধবার দুপুরে তারা আবারও অস্ত্রবিরতি কার্যকর রাখার ঘোষণা দেয়। এরপর একইদিন সন্ধ্যায় আবারও হামলা চালায় তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সর্বশেষ হামলা সত্ত্বেও অস্ত্রবিরতি “ঝুঁকির মুখে নেই”। অন্যদিকে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার এই হামলায় হতাশা প্রকাশ করলেও জানায়, তারা এখনো যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।

এমন অবস্থায় বুধবার জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফান ডুজারিক এক বিবৃতিতে বলেন, গুতেরেস গাজার বেসামরিক মানুষের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এই হামলায় বহু শিশুও নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার তুর্ক বলেন, এত বিপুল সংখ্যক হতাহতের খবর “ভয়াবহ”। শান্তি যেন “হাতছাড়া হতে না দেওয়” সে বিষয়ে সব পক্ষের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি। একই আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নও।

হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, রাফাহে যে ঘটনায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে, সেটার সঙ্গে তাদের যোদ্ধাদের “কোনও সম্পর্ক নেই”। তারা অস্ত্রবিরতি মানার অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেছে। তবে সাম্প্রতিক হামলার কারণে এক মৃত ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয় তারা।

হামাস বলেছে, ইসরায়েলের নতুন হামলা চলতে থাকলে সেটি “বন্দিদের মরদেহ উদ্ধার অভিযানে বাধা সৃষ্টি করবে।”

অন্যদিকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ রেডক্রসের প্রতিনিধিদের ফিলিস্তিনি বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাতের ওপর আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তারা দাবি করছে, এমন সাক্ষাৎ নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

 

হামাস এ নিষেধাজ্ঞাকে বন্দিদের অধিকার লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে। তারা বলেছে, যুদ্ধ চলাকালে কার্যত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎই ছিল এবং এটি “ইসরায়েলের ধারাবাহিক হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন ও অনাহারে রাখার নীতিরই অংশ।”

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]