নিজেদের পছন্দের ফরম্যাট ওয়ানডেতে যেন জয় পেতেই ভুলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ১২ ম্যাচে ১১ হার নিয়ে ধুঁকছিল মেহেদী হাসান মিরাজের দল। ৫০ ওভারের খেলায় এমন বাজে ফর্ম বাংলাদেশকে র্যাঙ্কিংয়ের ১০–এ নামিয়ে দেয়। ব্যাকফুটে দশা নিয়ে গতকাল (শুক্রবার) তারা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে শুভসূচনা পেয়েছে। ২০৭ রানের ছোট পুঁজি সত্ত্বেও জিতেছে ৭৪ রানের ব্যবধানে।
ওয়ানডে ক্রিকেটে ২১০–এর কম রান নিয়ে জয়ের ঘটনা খুব বেশি নেই বাংলাদেশের ইতিহাসে। সবশেষ ২০১১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তারা এমন জয় পেয়েছিল। সেই ম্যাচও হয়েছিল মিরপুর শের-ই বাংলায়। আইরিশদের বিপক্ষে সেদিন ২০৫ রান করেও বাংলাদেশ জিতেছিল ২৭ রানে। এরপর কেটে গেছে ৫৩৪৯ দিন, এবারও একই ভেন্যুতে ২১০ রানের কম স্কোরে জয়ের দেখা পেল টাইগাররা।
মিরপুরে ছোট পুঁজি নিয়েও ম্যাচ জেতা যায়, সেটাই প্রমাণ করলেন বাংলাদেশের বোলাররা। যদিও এখানকার উইকেট নিয়ে বেশ সমালোচনা রয়েছে। তবে লক্ষ্য যখন ওয়ানডেতে দুর্দশা কাটানো এবং র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি, তখন যেকোনো উপায়ে জয়ের পথ খুঁজে পাওয়াই যে গুরুত্বপূর্ণ। সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলও ঘরের মাঠের কন্ডিশন কাজে লাগানোর এই ধরনে অসুবিধা দেখছেন না। কেবল ২১০ রানের কম করে জয়ই নয়, ১০৪৬ দিন পর মিরপুরে শেষ হাসি হাসলো মিরাজরা।
এমন ম্যাচে জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে রিশাদ হোসেন। ব্যাট হাতে দারুণ একটি ক্যামিও ইনিংস (১৩ বলে ২৬ রান) খেলার পর বল হাতে করেন ধ্বসিয়ে দিয়েছেন ক্যারিবীয়দের ব্যাটিং লাইনআপ। তার ঘূর্ণিতেই একসময় ৫ উইকেটে ১০১ রান থেকে ১৩৩ রানে অলআউট হয়ে যায় সফরকারীরা। বাংলাদেশের প্রথম স্পিনার হিসেবে ওয়ানডেতে ৬ উইকেটের দেখা পেলেন রিশাদ। ক্যারিয়ারসেরা ফিগার (৩৫/৬) নিয়ে তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারও জিতেছেন।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০৭ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৫১ রান করেন তাওহীদ হৃদয়, অভিষিক্ত মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান। কিন্তু উইকেট বিবেচনায় দুজনেই খেলছেন ধীরগতিতে। ইনিংসের শেষ দিকে রিশাদ হোসেন মাত্র ১৩ বলে ঝড়ো ২৬ রান তুলে দলকে পৌঁছে দেন ২০৭ রানে। পরবর্তী ইনিংসে তিনি ছড়ি ঘুরিয়েছেন কার্যকর লেগস্পিনে।
জবাবে খেলতে নেমে ৩৯ ওভারে ১৩৩ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদিও তারা উদ্বোধনী জুটিতে ৫১ রান তুলেছিল। ব্রেন্ডন কিংয়ের ৪৪ ও অলিক আথানাজের ২৭ রান ছাড়া আর কেউই বলার মতো রান করতে পারেননি। ফলে মাত্র ৩৯ ওভারে অলআউট হয়ে ক্যারিবীয়রা হার নিশ্চিত করে ৭৪ রানে।