43821

10/09/2025 ভারত-পাকিস্তানের মহারণে কে জিতবে, ক্রিকেট নাকি বিতর্ক

ভারত-পাকিস্তানের মহারণে কে জিতবে, ক্রিকেট নাকি বিতর্ক

খেলা ডেস্ক

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:০২

এশিয়া কাপের যাত্রাটা ৪১ বছরের হলেও, প্রথমবার ফাইনালে দেখা হচ্ছে ভারত-পাকিস্তানের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের মহারণী এই লড়াই নিয়ে যতটা রোমাঞ্চ জাগার কথা, ততটা শঙ্কাও রয়েছে। এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন– দুই দলের ক্রিকেটীয় লড়াই জয়ী হবে, নাকি আগের দুই ম্যাচের মতো বিতর্কই জায়গা করে নেবে আলোচনার কেন্দ্র। ফলে ফাইনালের উত্তাপে যেমন আঁচ লাগছে, তেমনি খেলার বাইরের বিষয়ও ভাবনায় রয়েছে।

শক্তিমত্তায় কে এগিয়ে এই আলোচনা সম্ভবত এখন বলা বাহুল্য। চলতি বছরের এখন পর্যন্ত দুবাইয়ে তিনবার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। প্রতিবারই হার্দিক পান্ডিয়া–শুভমান গিলরা শেষ হাসি হেসেছে। এই বছর উভয় দলের প্রথম দেখা হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। ওয়ানডে ফরম্যাটের ওই প্রতিযোগিতায় গ্রুপপর্বে পাকিস্তানের দেওয়া ২৪২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ভারত ৬ উইকেটে জিতেছিল। এরপর তার শিরোপা উৎসবও করে। এরপর এলো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপ।

এশিয়া কাপের চলমান সপ্তদশ আসরে গ্রুপপর্ব এবং সুপার ফোরে একবার করে মুখোমুখি হয় ভারত-পাকিস্তান। যেখানে সূর্যকুমার যাদবের দল যথাক্রমে ৭ এবং ৬ উইকেটে জিতেছে। কেবল পাকিস্তানই নয়, এই এশিয়া কাপে এখনও কোনো দলই ভারতকে হারাতে পারেনি। বিপরীতে পাকিস্তান ৬ ম্যাচের মধ্যে দুটিতে হেরেছে, দু’বারই প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। তা সত্ত্বেও ফাইনালে একই ঘটনা ঘটবে কিংবা ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তান চমক দেখাবে না সেই নিশ্চয়তা এখনই দেওয়া যাচ্ছে না।

ফাইনালে ভারতকে হারাতেই বরং আত্মবিশ্বাসী পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আগা, ‘পাকিস্তান-ভারতের ম্যাচ মানেই চাপ। যদি বলি কোনো চাপ নেই, সেটা ভুল হবে। দুই দলই সমান চাপের মধ্যে থাকবে। আমরা তাদের চেয়ে বেশি ভুল করেছি বলেই জিততে পারিনি। যদি আমরা কম ভুল করি, তাহলে ম্যাচ আমাদের হবে। যারা কম ভুল করবে, জয় তাদের পক্ষেই যাবে, আর আমরা ভুল কম করার চেষ্টা করব। ইনশাআল্লাহ, কাল আমাদের জয় দেখবেন। আমাদের চেষ্টা থাকবে সেরা ক্রিকেট খেলতে।’

অন্যদিকে, পাকিস্তানের সঙ্গে সুপার ফোরের লড়াই শেষেই কথিত ‘রাইভালরি’ আর অবশিষ্ট নেই বলে দম্ভ প্রকাশ করেন ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় আপনাদের ভারত-পাকিস্তান লড়াই নিয়ে এবার প্রশ্ন করা বন্ধ করা উচিত। আমার মতে, যদি দুটো দল ১৫-২০টা ম্যাচ খেলে এবং স্কোরলাইন ৭-৭ অথবা ৮-৭ হয়, তবেই সেটাকে ভাল ক্রিকেট বলা যায়। আমি সঠিক পরিসংখ্যান জানি না। কিন্তু একটা দলের পক্ষে যদি স্কোরলাইন ১৩-০, ১০-১ হয়, তাহলে এখন আর এটা কোনো লড়াই নয়।’

এসব কথা চালাচালি ২২ গজে দুই দলের পারফরম্যান্সকে ভিত্তি করে স্বাভাবিকই মনে হবে। তবে এর বাইরে বিতর্ক চলছে শুরু থেকেই। ভারতীয় ক্রিকেটাররা ‘নো হ্যান্ডশেক’ ধারা অনুসরণ করছেন পাকিস্তান ম্যাচে। যাতে আম্পায়ারও ভূমিকা রেখেছেন অভিযোগ করে পাকিস্তান টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহারের হুমকি দেয়। যা নিয়ে জলঘোলা পরিস্থিতির পর মাঠের খেলায় ফেরে সালমান আগার দল। তবে ‘নো হ্যান্ডশেক’ এখনও বলবৎ রয়েছে। আবার ফাইনাল ম্যাচের আগে নির্ধারিত ফটোশ্যুটও বয়কট করেছে ভারত। এর আগে পাকিস্তান দুই ম্যাচের আগে নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন বাতিল করেছিল।

এ ছাড়া সূর্যকুমার যেমন রাজনৈতিক ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন, একইভাবে তেমনই ইঙ্গিতপূর্ণ উদযাপন করেছেন হারিস রউফ-ফারহানরা। তবে ক্রিকেটভক্তদের চাওয়া বিতর্ক যেন প্রধান না হয়ে ওঠে। জয় যেন হয় দুই দলের পারফরম্যান্স ও মাঠের লড়াইকে ভিত্তি করে। যেখানে শাহিন আফ্রিদি বনাম অভিষেক শর্মা, জাসপ্রিত বুমরাহ বনাম ফখর জামান, শাহিবজাদা ফারহান বনাম কুলদীপ যাদবের দ্বৈরথ প্রাধান্য পেলে জয় হতে পারে ক্রিকেটের!

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]