43759

09/26/2025 নারীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান, কর্মমর্যাদা ও আত্মনির্ভরশীলতা

নারীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান, কর্মমর্যাদা ও আত্মনির্ভরশীলতা

আসিফ মুনীর

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৪১

ডিসেম্বর ২০২৪-এর একটি লেখায় বাংলাদেশ থেকে মূলত মধ্যপ্রাচ্যে নারী অভিবাসনের চিত্র তুলে ধরেছিলাম। সেখানে এই খাতের সংকট ও তা নিরসনের কিছু পরামর্শ ছিল। বছর প্রায় ঘুরে আসতে চলল। এর মধ্যে নারী অভিবাসনের ক্ষেত্রে কি কোনো অগ্রগতি হলো?

এ বছরের মাঝামাঝি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে সব সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে, সরকার তার মধ্যে থেকে কিছু কিছু বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে অভিবাসী কর্মী সংক্রান্ত সুপারিশের মধ্যে নারী অভিবাসীদের পেশার ক্ষেত্র এবং দক্ষতা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে। নারীপুরুষ প্রশিক্ষণের মান উন্নত করার প্রস্তাবও আছে।

তবে নারী অধিকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে একটি পৃথক অধ্যায় আছে (ত্রয়োদশ) নারী শ্রমিকের নিরাপদ অভিবাসন নিয়ে। সেখানে নারী অভিবাসন সংকটের সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ই স্থান পেয়েছে। একই সঙ্গে দ্রুত এবং দীর্ঘ সময়ে করণীয় সম্পর্কেও বাস্তবসম্মত সুপারিশ আছে। আশা করি সেগুলো গুরুত্বের সাথে সরকারি উদ্যোগে বাস্তবায়ন ও তদারকি হবে।

এই লেখায় অবশ্য নারী অভিবাসনের একটি বিশেষ দিকের প্রতি দৃষ্টিপাত করছি। পুরুষশাসিত/পুরুষালি (masculine) সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য শুধু বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে নয়, অনেক ধনবান কথিত উন্নত দেশেরও বাস্তবতা। সেক্ষেত্রে আমাদের দেশেও অভিবাসন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাতে নারী-পুরুষের বৈষম্য থেকে যাবে, এটাই বাস্তবতা।

আগেও লিখেছি, বিশ্বে নারী অভিবাসী ৪১ শতাংশের উপরে হলেও বাংলাদেশের নারী অভিবাসীর সংখ্যা ১০-১৫ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করে। এদের প্রায় ৭৪ শতাংশ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় গৃহাভ্যন্তরে কায়িক শ্রমে নিয়োজিত, বেতন পান পুরুষ অভিবাসী কর্মীর চেয়ে কম।

কারণ বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশকিছু দেশে পুরুষশাসিত সমাজে নারীকে গৃহসেবা ছাড়া আর কোনো কাজের যোগ্য বিবেচনা করা হয় না। বড়োজোর কোনো কোনো দেশে তারা গারমেন্টস কারখানার কর্মী। সবখানেই আবার বেতন পুরুষ কর্মীদের চেয়ে কম।

আমাদের অভিবাসী প্রত্যাশী নারীরা হীনমন্যতায় ভোগেন এবং বৈষম্যমূলক আচরণ মেনে নেন। হয়ত মনে করেন এটাই তাদের ভাগ্য। এর বড় কারণ—বাংলাদেশের অধিকাংশ অভিবাসী নারী স্বল্প শিক্ষিত বা লেখাপড়া জানেন না। যাওয়ার আগে কর্মদক্ষতা ও ভাষাজ্ঞান অর্জন হয় সীমিত।

কাজেই বিদেশে কাজ করার জন্য কার্যকরী ভাষাজ্ঞান ও দক্ষতা, বিদেশে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সক্ষমতা থাকে না। এমনকি নিয়োগকর্তার সাথে তাদের লিখিত চুক্তিপত্রও পড়তে পারেন না। ফলে নিজের কাজ, বেতন, কর্মঘণ্টা, ছুটি, নিজের ও নিয়োগকর্তার দায়িত্ব–সবকিছু দেশে বা বিদেশে গিয়ে বুঝে নিতে হয় মুখে মুখে বা বিদেশে–ইশারায়, অন্তত প্রাথমিক পর্যায়ে।

এ প্রসঙ্গে সাধারণভাবে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া মধ্যপ্রাচ্যের দেশের দিক থেকে যেভাবে হচ্ছে, তা বোঝা বাঞ্ছনীয়। বাড়িতে কাজের মেয়ের দরকার বোধ করলে যেমন সৌদি আরবে গৃহকর্তা বা কর্ত্রী যোগাযোগ করে তার দেশে কোনো সংস্থাকে যারা গৃহকর্মী সরবরাহ করে। সেখানে সৌদি-বাংলাদেশি নাগরিক, উভয়েই সম্পৃক্ত।

এই সরবরাহকারী আমাদের দেশে তার পরিচিত রিক্রুটিং এজেন্ট বা তাদের মধ্যসত্ত্বভোগীর কাছ থেকে সম্ভাব্য গৃহকর্মীর ছবি, কাজের তালিকা, দাম/বেতন আগে থেকেই বাছাই করে রাখেন। অনেক সময় এই সৌদি এজেন্ট আমাদের দেশে কোনো রিক্রুটিং এজেন্টের মাধ্যমে দেশে এসেও গৃহকর্মী বাছাই করে যান।

বিভিন্ন দেশের গৃহকর্মীর বাজার দর দেখে দুই দেশের মাধ্যম বাংলাদেশের গৃহকর্মীর দাম/বেতন নির্ধারণ করে। গৃহকর্তা/কর্ত্রী কাউকে বাছাই করলে দুই দেশের মাধ্যম গৃহকর্তা/কর্ত্রীর সাথে ফোনে বা ভিডিও কলে গৃহকর্মীর সাথে প্রাথমিক আলাপ করিয়ে দেন। দেখে এবং কথা বলে ভালো লাগলে সেই গৃহকর্তা/কর্ত্রী বাংলাদেশের গৃহকর্মী কিনে নেন।

তারপর উভয় দেশের এজেন্ট কর্মীর ভিসা, পাসপোর্ট, বহির্গমন অনুমোদন ইত্যাদি সম্পন্ন করিয়ে কাগজপত্র বুঝিয়ে দেন (যা কর্মী পড়তেও পারেন না)। বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর থেকে কাজে যোগদান পর্যন্ত গৃহকর্মীর তেমন কোনো মতামত নেওয়ার প্রয়োজন হয় না, সেই সুযোগও তেমন নেই। অভিবাসন প্রত্যাশী নারী মতামত দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেন।

প্রক্রিয়াটি জানানো এ জন্যই যে পুরুষশাসিত সমাজ ব্যবস্থায় নারীর জীবন ও জীবিকার ব্যাপারে নারীর নিজস্ব যে মতামতের কোনো গুরুত্ব থাকতে পারে, বাড়ির ভেতরে বা বাইরের বেশিরভাগ পুরুষ সেটা ভাবেন না। লেখাপড়া না জানা, সংসারের নিয়মিত কাজের কথা ছাড়া নারীকে প্রায় বোবা হিসেবেই ধরে নেওয়া হয়।

অনেক নারী অভিবাসীর সেটার জন্য কষ্ট হলেও মুখ বুজে সহ্য করেন। প্রবাসে দাসপ্রথার সমতুল্য গৃহভৃত্য ছাড়া যেন নারীর আর কোনো পেশা হতে পারে না–গ্রামীণ নারী, তাদের অভিবাসন সহায়তাকারী ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান, সরকারি দপ্তর–সবাই এই ধারণা মেনে নিয়েছেন। কিন্তু মেনে নেওয়া উচিত নয়।

গৃহভৃত্যের কাজ দেশে বা বিদেশে অসম্মানের নয়, কিন্তু যে পেশায় প্রবাসী নারীর মর্যাদা রক্ষা হয় না, সেখানে মর্যাদা রক্ষায় অন্য কারো উপর নির্ভর না করে থেকে নারী অভিবাসী কর্মীর নিজেরই আত্মমর্যাদা গঠনে এগিয়ে আসা উচিত। সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে সেই চেষ্টা করা অনেক সময় কঠিন, তাই যারা নারীর অধিকার, মর্যাদা ও ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করেন, তারা অভিবাসী প্রত্যাশী নারীকে স্বাবলম্বী ও আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে সহায়তা করতে পারেন।

গ্রামে নারী অভিবাসী প্রত্যাশীদের সাথে কথা বলে, তাদের জন্য প্রশিক্ষণ নির্দেশিকা তৈরি করে এবং তাদের জন্য প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে মনে হয়েছে, সফট স্কিলস তাদের কতটা বেশি প্রয়োজন। তাদের ভেতরে অদম্য আকাঙ্ক্ষা, সাহস ও আত্মবিশ্বাস বিদ্যমান, শুধু দরকার একটু সহায়তার মাধ্যমে সেগুলো বিকশিত হওয়া ও সঠিক প্রয়োগ।

আত্মবিশ্বাস দৃঢ় করতে প্রয়োজন তাদের নারী হিসেবে এবং নারীর কাজের (ঘরে ও বাইরে) মর্যাদা বোধ সৃষ্টি। যেমন একদিকে সাংসারিক কাজের মর্যাদা প্রদান, অন্যদিকে সাংসারিক কাজে এবং গারমেন্টস খাতে কাজ করা ছাড়াও আরও অনেক কাজে নারীর যোগ্যতা ও সম্মান অর্জন সম্ভব–এই ধারণা তাদের কাছে স্পষ্ট করতে হবে।

পাশাপাশি সফট স্কিল যেমন ভিন্ন ভাষায় কথাবার্তা চালানো, ভিন্ন প্রকৃতি-সংস্কৃতি-রীতি-নীতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া, নিজের সম্মান ও সম্ভ্রম রক্ষার উপায় জানা, প্রবাসে কাজের জন্য চুক্তি অনুযায়ী নিজের ও নিয়োগকর্তার দায়িত্ব বোঝা ও বোঝাপড়া করতে পারা, সাধারণ হিসাব করতে পারা, ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, যেকোনো বিপদ থেকে মুক্তির পথ জানা ও ব্যবহার করতে পারা। এগুলো অনেক সময় সাধারণ জ্ঞান হিসেবেই গণ্য করা হলেও সচেতন ভাবে জানা ও চর্চার প্রয়োজন আছে।

এর অনেক কিছুই দেশে একজন অভিবাসী প্রত্যাশীর জীবন-জীবিকার অংশ নয়, কাজেই এ সম্পর্কে জেনে নিয়ে রপ্ত করলে কর্মীর আত্মবিশ্বাস বাড়বে। এগুলো শিখে রপ্ত করতে সময়ও লাগে—অভ্যস্ত না হলে বাইরে গিয়ে কাজে আসবে না। কাজেই সেজন্য শেখার বিষয়গুলো বিদেশ যাওয়ার আগে বেশ কিছুদিন চর্চা করে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হয়।

অভিবাসী প্রত্যাশী নারীর আত্মবিশ্বাস বিকশিত হওয়ার জন্য সেরকম পারিপার্শ্বিক অবস্থা সৃষ্টি করা সরকার ও তার সহকারী শক্তির দায়িত্ব। সহকারী বলতে ব্যক্তি মালিকানাধীন নিবন্ধিত রিক্রুটিং সংস্থা, স্থানীয় প্রশাসন, বেসরকারি সংগঠন এবং দাতা সংস্থা। এদের সম্মিলিত এবং সমন্বিতভাবে একটি বড় দায়িত্ব হওয়া উচিত নারী অভিবাসন প্রবণ অঞ্চলের এবং যেসব পরিবারে নারীদের আয়ের উপর সংসার চলতে হয়, সেসব নারীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক ও কারিগরি শিক্ষার সুযোগ ও উৎসাহ সৃষ্টি।

অভিবাসন খাতে সামগ্রিকভাবে এখনো এই প্রথাগত ধারণা বিদ্যমান যে নারীর ভূমিকা সমাজে শুধুই মা-বোন-স্ত্রী হিসেবে পরিবারের সেবার অন্তর্ভুক্ত কাজ। সেজন্য নারীরা শুধুই গৃহকর্মী ও গারমেন্টসের কাজের যোগ্য হতে পারবে, বড়োজোর ডিগ্রিধারী নারী নার্সিং (হাসপাতাল বা বাড়িতে) সেবার জন্য যোগ্য।
অথচ এই সমাজেই আমরা দেখি গ্রামের দরিদ্র কম শিক্ষিত এবং প্রশিক্ষণহীন নারীরাও পুরুষদের পাশাপাশি বিভিন্ন কায়িক শ্রমে যেমন দোকান-হোটেল-রেস্টুরেন্টে, নির্মাণ খাতে, নগরীর পরিচ্ছন্নতায় প্রতিনিয়ত কাজ করছে। কারিগরি পেশাতেও ক্রমশ কিছু নারী কর্মী দেখা যাচ্ছে।

তাই নারীদের অভিবাসন শ্রম বাজারে গৃহকর্ম ও গারমেন্টস খাত ও মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে শ্রম বাজারের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এটা করতে হবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, নিবন্ধিত রিক্রুটিং সংস্থা এবং বিভিন্ন দূতাবাসের সমন্বয়ে, কারণ অভিবাসী প্রত্যাশী নারীর পক্ষে নিজেই নতুন বিভিন্ন দেশের শ্রম বাজার বা সেজন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা খুঁজে নেওয়া সম্ভব নয়।

একই সঙ্গে অভিবাসী প্রত্যাশী নারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বৃদ্ধির সমন্বিত উদ্যোগ লাগবে। সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, গড়ে প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি চুক্তিভিত্তিক অভিবাসনে বিদেশে যান, যার মধ্যে ১০ শতাংশ বা প্রায় ১০ হাজার নারী। এই নারী অভিবাসীদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩৫০০ জন একেবারেই লিখতে-পড়তে পারেন না, বাকিরা প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু পড়াশোনা করেছেন।

যেহেতু এরা বেশিরভাগ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে যান, যাওয়ার আগে আরবি ভাষা শিখতেই হয়। কিন্তু লেখাপড়া না জানার কারণে একমাত্র প্রশিক্ষকের কিছু শেখানো বুলি শুনে শুনে মুখস্থ করেন আমাদের বোনেরা। এই সীমিত আরবি শব্দ আর বাক্য দিয়ে প্রবাসে গৃহকর্তা/কর্ত্রীর সাথে আরবিতে প্রতিদিন কথোপকথন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

আপনারা ভেবে দেখুন, স্কুল পর্যায়ে প্রমিত বাংলা বুঝতে-পড়তে-লিখতে আমাদের কতদিন সময় লেগেছে বা ইংরেজি ব্যাকরণ শিখে ইংরেজিতে অবলীলায় কথোপকথন চালিয়ে যেতে কত বছর লেগেছে। সেখানে আরবি ভাষায় কথা চালিয়ে যেতে আমার আপনার জন্য ১-২ মাসের প্রশিক্ষণ যথেষ্ট কিনা।

অবশ্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশে গিয়ে অভিবাসীদের কয়েক মাসের মধ্যে স্থানীয় আরবি ভাষা শিখে নিতে হয়, না হয় কাজ করবেন কীভাবে। তবু, শিক্ষার আলো নারীকে দেশে ও বিদেশে আরও অনেক উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, তাদের আত্মনির্ভরশীলতা এবং আত্মবিশ্বাসও বৃদ্ধি পাবে। এই ক্ষেত্রেও সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা উদ্যোগের সমন্বয় প্রয়োজন।

আরেকটি ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন তা হলো নারী প্রবাসী শ্রমের সামাজিক মর্যাদা। নারীকে যেহেতু ঘরকন্নার কাজেই পুরুষ সমাজ দেখতে অভ্যস্ত, তাই প্রবাসে তার যেকোনো কাজকেই সমাজ সন্দেহের চোখে দেখে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্ম এবং সেই কাজে কোনোভাবে নিপীড়িত হলে প্রায় সবসময় নারীর দোষ আছে বা তার চরিত্র খারাপ হিসেবেই ধরে নেয় সমাজ।

প্রবাসে গৃহকর্মে উপার্জিত আয় সংসারে কাজে লাগলেও সংসারে ফেরত আসা নারী কর্মী সবসময় মর্যাদা পান না। এজন্য সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া গতি নেই। নারীর গৃহকর্মের প্রতি মর্যাদা সৃষ্টির জন্য দীর্ঘকালীন সচেতনতা কর্মসূচির পাশাপাশি যেমন পেশার বৈচিত্র্যকরণ দরকার তেমনি নারী কর্মীদের নিয়োগকারী গৃহকর্তার বাড়িতে না থেকে ডরমিটরির মতো কোথাও থাকার ব্যবস্থা করার জন্য নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা সমীচীন।

নারী অভিবাসীর এই কর্মমর্যাদা, শিক্ষাদান, আত্মবিশ্বাস গঠন এবং সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশের মতো অন্যান্য দেশেও রয়েছে এবং সেখানে উপরের পরামর্শ অনুযায়ী সুফল পাওয়া গেছে। বাংলাদেশেও সুফল না পাওয়ার কোনো কারণ নেই।

তবে তার জন্য প্রয়োজন সমন্বিত তাৎক্ষণিক থেকে দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ। অভিবাসন সম্পর্কিত অনেকের কাছেই করণীয়গুলো অজানা নয়, কাজেই আশা করা যায় বাস্তবায়ন হবে এবং নারী শ্রম অভিবাসন ক্ষেত্রে চোখে পড়ার মতো অগ্রগতি হবে।

আসিফ মুনীর : অভিবাসন বিশেষজ্ঞ

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]