4339

05/19/2024 হাসারাঙ্গার হাসি মুছে জয় বাংলাদেশের

হাসারাঙ্গার হাসি মুছে জয় বাংলাদেশের

ক্রীড়া ডেস্ক

২৪ মে ২০২১ ১৭:০৫

অধিনায়ক তামিম ইকবালের চাওয়া আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের এই সিরিজ থেকে পুরো ৩০ পয়েন্ট তুলে নেওয়া। তাতে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সরাসরি খেলার সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল হবে। সেই লক্ষ্য পূরণের অভিযান শুরু হলো প্রত্যাশিত জয় দিয়ে। রোববার (২৩ মে) মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে শ্রীলংকাকে ৩৩ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয়লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় ক্রিকেট দলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এই জয়ের আগে তিন সংস্করণ মিলিয়ে টানা ১০ ম্যাচে জয়হীন ছিল বাংলাদেশ। মিরপুরের মন্থর উইকেটে কাল আগে ব্যাট করে তামিম (৫২), মুশফিকুর রহিম (৮৪) ও মাহমুদউল্লাহর (৫৪) ফিফটিতে ছয় উইকেটে ২৫৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছিল স্বাগতিকরা। জবাবে মেহেদী হাসান মিরাজ ও মোস্তাফিজুর রহমানের দারুণ বোলিংয়ে ১১ বল বাকি থাকতে ২২৪ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলংকা।

মাত্র ৩০ রানে চার উইকেট নেন মিরাজ। মোস্তাফিজ তিনটি ও সাইফউদ্দিন নিয়েছেন দুই উইকেট। ১০২ রানে ছয় উইকেট হারানো শ্রীলংকাকে একাই টেনেছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তবে তার ঝড়ো ফিফটি দিনশেষে বিফলেই গেছে। আটে নেমে ৬০ বলে ৭৪ রান করা হাসারাঙ্গাকে থামান সাইফউদ্দিন। তার হাসি মুছে যেতেই হাসে বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান আসে অধিনায়ক কুশাল পেরেরার ব্যাট থেকে। তারুণ্যনির্ভর দল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসা লংকানরা কাল মাঠে নামার আগেই খেয়েছিল জোর ধাক্কা। প্রথম ওয়ানডে শুরুর আগে করোনা পরীক্ষায় শ্রীলংকা দলের তিনজনের ফল পজিটিভ হওয়ার খবর আসে। তাতে ম্যাচ মাঠে গড়ানো নিয়ে শঙ্কা জেগেছিল।

তবে ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা দুয়েক আগে দ্বিতীয় পরীক্ষায় জানা যায়, পজিটিভ শুধু একজন (পেসার শিরান ফার্নান্দো)। তাতে কাটে শঙ্কার মেঘ। এছাড়া বেতন-ভাতা নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে ক্রিকেটারদের চলমান দ্বন্দ্বও লংকানদের আত্মবিশ্বাস নাড়িয়ে দিয়েছিল। এদিকে জাতীয় দলে ফেরার ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যর্থ সাকিব আল হাসান বোলিংয়ে ৪৪ রানে নেন এক উইকেট। মাশরাফি মুর্তজাকে ছাড়িয়ে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হতে আর তিন উইকেট দরকার সাকিবের।

এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তিন ফিফটির সহায়তায় বাংলাদেশ ছয় উইকেটে ২৫৭ রানের লড়াকু পুঁজি জোগাড় করে। অধিনায়ক তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর হাফ সেঞ্চুরি স্বাগতিকদের আড়াইশ পার করায়। ২৫ ওভারের মধ্যে ৯৯ রানে চার উইকেট হারানোর পর এই সংগ্রহই জয়ের ভিত গড়ে দেয়। স্বাগতিকদের কক্ষপথে ফেরাতে ভূমিকা রেখেছে দুই ‘ম’। আরও স্পষ্ট করে বললে, দুই ভায়রা ভাই মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ। পঞ্চম উইকেটে দুজনের ১০৯ রানের জুটিই বাংলাদেশের ইনিংসের সবচেয়ে বড় স্তম্ভ। এর মধ্যে কৃতিত্ব খানিকটা বেশি পেতেই পারেন ক্যারিয়ারের ৪০তম ওয়ানডে ফিফটি পাওয়া মুশফিক। চারটি চার ও একটি ছয়ে ৮৭ বলে ৮৪ রান করে তার আউট হওয়ার মধ্যে ঈষৎ আক্ষেপও আছে। সেটি সেঞ্চুরি মিসের। সান্দাকানের বলে রিভার্স সুইপ শট খেলে থার্ডম্যানে মুশফিক ধরা পড়েন উদানার হাতে। ভেঙে যায় জুটি।

মাহমুদউল্লাহ বোল্ড হন ক্রমশ ভালো বোলিং করতে থাকা ধনাঞ্জয়ার ইয়র্কারে। ৭৬ বলে ৫৪ রান আসে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে। দুটি চার ও একটি ছয়ে ঋদ্ধ হয় তার ইনিংস। ওডিআইতে এটি মাহমুদউল্লাহর ২৪তম হাফ সেঞ্চুরি। দুই ‘ম’-এর আগে বাংলাদেশের ইনিংসে প্রথম ফিফটির নির্মাতা তামিম ইকবাল। রিভিউ নিয়েও শেষতক রক্ষা পাননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। আউট হয়েছেন নিজের ৫১তম ফিফটি পূর্ণ করার পর। সুইপ করতে চেয়ে বলের লাইন মিস করেন বাঁ-হাতি ড্যাশিং ওপেনার তামিম। পরিষ্কার লেগ বিফোর। বোলার ধনাঞ্জয়া এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, আম্পায়ারের আঙুল তোলার অপেক্ষায় না থেকে উদযাপন শুরু করে দেন। ৭০ বলে ৫২ রান করেন তামিম চারটি চার ও একটি ছয়ের সহায়তায়। পরের বলেই মোহাম্মদ মিঠুনকে তুলে নেন ধনাঞ্জয়া। মিঠুনও সুইপ শট খেলতে গিয়ে ব্যাটে-বলে সংযোগ ঘটাতে পারেননি। বল তার প্যাডে লাগে। আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। রিভিউয়ে তার সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণিত হয়। দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে ধনাঞ্জয়া পৌঁছে যান হ্যাটট্রিকের দোরগোড়ায়। হ্যাটট্রিক অবশ্য হয়নি। ধনাঞ্জয়ার পরের ওভারের প্রথম বলে এক রান নিয়ে তাকে বঞ্চিত করেন মুশফিক।

এর আগে তিনে ব্যাট করতে নামা সাকিব বাজে শট খেলে নিজের উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসেন। ৩৪ বলে ১৫ রান করেই হয়তো তার মনে হয়, যথেষ্ট। তাই দায়িত্বজ্ঞানহীন শট খেলে ফিরে আসেন সাজঘরে। তার ইনিংসে দুটি চার। শেষের দিকে আফিফ হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন অপরাজিত থাকেন যথাক্রমে ২৭ (২২ বলে, তিনটি চার) এবং ১৩ (৯ বলে, দুটি চার) রানে। তিনটি উইকেট নেওয়া ডান-হাতি অফ-স্পিনার ধনাঞ্জয়াই শ্রীলংকার সবচেয়ে সফল বোলার।

প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন : সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয়লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় ক্রিকেট দলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এক অভিনন্দন বার্তায়, ক্রিকেটপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সব ক্রিকেটার, কোচ এবং জাতীয় ক্রিকেট দলের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তাদেরও অভিনন্দন জানান।

শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিজয় লাভের ধারা অব্যাহত থাকবে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]