বরগুনার আমতলীতে ষষ্ঠ শ্রেণির এক মাদরাসাছাত্রীকে অপহরণ করে হত্যার মামলায় প্রধান আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও সহযোগীকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা ও দায়রা জজ লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে প্রধান আসামি মো. হৃদয় খানকে (২০) মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সহযোগী আসামি জাহিদুল ইসলামকে (১৯) পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পিপি রনজুয়ারা সিপু।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে আমতলীর পূঁজাখোলা ইসলামপুর গ্রামের ১২ বছরের মাদরাসাছাত্রী তানজিলা শাক তুলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন পরিবার সাধারণ ডায়েরি করে। ওই সময় অজ্ঞাত ব্যক্তি ভুক্তভোগীর বাবার ফোনে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে মেসেজ পাঠায়। বিষয়টি পুলিশকে জানালে ৭ ফেব্রুয়ারি প্রধান আসামি হৃদয় খানকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় স্বীকার করে যে, মুক্তিপণের উদ্দেশে শিশুটিকে অপহরণের পর আমতলীর এক বাড়ির সামনে হোগলপাতার মধ্যে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ধরা পড়ার ভয় পেয়ে হিজাব দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয় হৃদয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, আমার নাবালিকা মেয়েকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির পর হত্যা করা হয়েছে। আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল ওয়াসি মতিন জানান, মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ নেই। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পিপি রনজুয়ারা সিপু বলেন, ১২ বছরের শিশুকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যা করা ভয়াবহ অপরাধ। এ ধরনের রায় সমাজে ইতিবাচক বার্তা দেবে।