নিজ রক্তের সন্তানকে একবার কোলে নেওয়ার চেষ্টা করেও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বাধার মুখে পড়তে হলো এক বাবাকে। আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও তাকে অপমানিত ও হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। তবুও শেষ পর্যন্ত সন্তানের মুখ দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে সাতক্ষীরা জজ কোর্ট প্রাঙ্গণে এ হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
ভুক্তভোগী বাবা মো. মনিরুজ্জামান জানান, ২০১৯ সালের ৯ জুলাই তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলার নয়াচর গ্রামের বাবুল ফরাজীর মেয়ে মেধা আক্তার সোনিয়াকে (২৩) বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের ঘরে জন্ম নেয় একমাত্র সন্তান, আলিফ হাসান (৪)। সুখেই চলছিল সংসার। কিন্তু গত ১৩ জুন শাশুড়ি মাকসুদা বেগম এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে মেয়ে ও নাতিকে নিয়ে যান। এরপর থেকে স্ত্রী ও সন্তানকে আর ফেরত দেননি।
পরে প্রতিকার চেয়ে মনিরুজ্জামান আদালতে মামলা করেন। আদালত প্রতি মাসে সন্তানের সঙ্গে বাবার সাক্ষাতের সুযোগ নিশ্চিত করা এবং সন্তানের ভরণপোষণ বাবার ওপর ন্যস্ত করার নির্দেশ দেন। কিন্তু সোমবার আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সন্তানকে দেখতে জজ কোর্ট প্রাঙ্গণে গেলে শ্বশুর বাবুল ফরাজী ও তার সহযোগীরা বাধা দেন। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় এপিপি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামের নির্দেশে তাকে অপমান ও অপদস্ত করা হয় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা হয়।
তবুও শেষ পর্যন্ত সন্তানকে কোলে নিতে সক্ষম হন বাবা মনিরুজ্জামান। চার বছরের শিশু আলিফকে বুকের মাঝে জড়িয়ে কোর্ট প্রাঙ্গণে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন তিনি। এ দৃশ্য দেখে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
সন্তানকে ফিরে পেয়ে আবেগে ভেসে যাওয়া এই বাবার কান্না সাধারণ মানুষের কাছে মানবতার জয়ের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এসএন/রুপা