41385

08/25/2025 ফ্রান্সে ইহুদিবিদ্বেষ অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব

ফ্রান্সে ইহুদিবিদ্বেষ অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৫ আগস্ট ২০২৫ ১১:১৯

ফ্রান্স ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ তোলায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত চার্লস কুশনারকে তলব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্যারিস। ফরাসি কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি অনলাইন।

জানা গেছে, কুশনার নিজে ইহুদি এবং তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাই জ্যারেড কুশনারের পিতা। সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের উদ্দেশে লেখা এক খোলা চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন, গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ফ্রান্সে ইহুদিবিদ্বেষ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তার দাবি, ইহুদিদের প্রায় প্রতিদিন রাস্তায় আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে, সিনাগগ ও স্কুলে ভাঙচুর চলছে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হচ্ছে। এমনকি কিন্ডারগার্টেন পর্যায়েও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজেই স্বীকার করেছে।

চিঠিতে কুশনার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে ইসরায়েলবিরোধী সমালোচনা কমানোর আহ্বান জানান এবং ফরাসি নেতাদের সঙ্গে মিলে কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়নে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এসব অভিযোগকে 'একেবারেই অগ্রহণযোগ্য' বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, ভিয়েনা কনভেনশন ১৯৬১ অনুযায়ী কোনো রাষ্ট্রদূতের বিদেশি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অনুমতি নেই।

ফরাসি কর্তৃপক্ষের মতে, কুশনারের অভিযোগের ভাষা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক চিঠির সঙ্গে মিলে যায়। গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু ম্যাক্রনকে উদ্দেশ করে অভিযোগ করেছিলেন, ফিলিস্তিনকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়ার পরিকল্পনার মাধ্যমে ফ্রান্স ইহুদিবিদ্বেষ উসকে দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, ফ্রান্স আগামী সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পরিকল্পনা করছে। ঘোষণা দিতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন বলেন, 'আমাদের ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে হবে, তার স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে হবে এবং ইসরায়েলকে পূর্ণ স্বীকৃতি দিয়ে ও নিরস্ত্রীকরণের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্য কোনো বিকল্প নেই।' তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, ইহুদিবিদ্বেষ ফরাসি মূল্যবোধের পরিপন্থী। এ কারণেই গাজা সংঘাতের পর দেশজুড়ে ইহুদি উপাসনালয় ও কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

পটভূমিতে উল্লেখযোগ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে এক ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে প্রায় ১২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এ পর্যন্ত সেখানে ৬২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিকভাবে গাজা সিটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক খাদ্য নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, গাজার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ ক্ষুধা, নিঃস্বতা ও মৃত্যুর মতো চরম মানবিক সংকটে রয়েছেন। তবে ইসরায়েল এসব প্রতিবেদনের সত্যতা অস্বীকার করে একে 'নির্লজ্জ মিথ্যা' বলে দাবি করেছে।

এসএন/রুপা

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]