মুমিন ব্যক্তির মুখে জান্নাত, জাহান্নাম, পরকালের কথা শুনে ঠাট্টা করে থাকে অবিশ্বাসীরা। অনেকেই বলে যা চোখে দেখি না, তা বিশ্বাস করি না। তারা পৃথিবীর অনেক কিছু বিশ্বাস ও মেনে নিলেও তাওহিদ, একত্ববাদ ও পরকালের মতো পরম বাস্তব বিষয় মেনে নিতে চায় না। তারা মুমিনদের কাছ থেকে পরকাল বিষয়ক আলোচনা শুনলে তাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে এবং তাদের নিয়ে হাসি ঠাট্টায় মেতে উঠে।
কিন্তু পরকালে অবিশ্বাসীরা যখন চোখের সামনে সত্যিই দেখতে পাবে জান্নাত, জাহান্নাম তখন তারা অবাক হবে এবং নিজেরা জাহান্নামে যাওয়ার পর মুমিন ব্যক্তিদেরও সেখানে খুঁজবে। মনে মনে ভাববে যাদের নিয়ে পৃথিবীতে আমরা ঠাট্টা করতাম তারা কোথায়? তারা কি সত্যি সত্যি জান্নাতে চলে গেছে নাকি আমাদের সঙ্গেই এখানে কোথাও কিন্তু আমাদের চোখে পড়ছে না।
তারপর তারা জাহান্নামে মুমিনদের খুঁজতে থাকবে, কিন্তু তারা তাদেরকে সেখানে পাবে না। তখন তারা বলবে
আমরা যেসব লোককে মন্দ বলে গণ্য করতাম তাদেরকে দেখতে পাচ্ছি না কেন এখানে, আমরা তো দুনিয়াতে তাদেরকে ঠাট্টা-বিদ্রূপের পাত্ৰ মনে করতাম; এরপর তারা নিজেদেরকে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করে বলবে, সম্ভবত তারা আমাদের সাথেই জাহান্নামে আছে। আমাদের দৃষ্টি বিভ্রম ঘটেছে তাই মনে হয় দেখতে পাচ্ছি না।
তখন তারা জানতে পারবে যে, মুমিন ব্যক্তিরা জান্নাতের সুউচ্চ স্তরে রয়েছে। এরপর একজন ঘোষণাকারী তাদের মধ্যে ঘোষণা করবে—
আল্লাহর লানত জালিমদের উপর—যারা আল্লাহর পথে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করত এবং সে পথে জটিলতা খুঁজে বেড়াত; এবং তারা আখেরাতকে অস্বীকারকারী ছিল।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,
وَقَالُوۡا مَا لَنَا لَا نَرٰی رِجَالًا کُنَّا نَعُدُّہُمۡ مِّنَ الۡاَشۡرَارِ ؕ ٦٢اَتَّخَذۡنٰہُمۡ سِخۡرِیًّا اَمۡ زَاغَتۡ عَنۡہُمُ الۡاَبۡصَارُ ٦٣اِنَّ ذٰلِکَ لَحَقٌّ تَخَاصُمُ اَہۡلِ النَّارِ
তারা একে অপরকে বলবে, কী ব্যাপার! আমরা যাদেরকে মন্দ লোকদের মধ্যে গণ্য করতাম, সেই লোকগুলোকে যে জাহান্নামে দেখতে পাচ্ছি না? আমরা কি তবে তাদেরকে (অন্যায়ভাবে) ঠাট্টা-বিদ্রূপের পাত্র বানিয়েছিলাম, নাকি তাদেরকে দেখার ব্যাপারে আমাদের চোখের বিচ্যুতি ঘটেছে? জাহান্নামবাসীদের এই বাক-বিতণ্ডা। এটা নির্ঘাত সত্য। (সুরা সোয়াদ, আয়াত : ৬২-৬৪)