3996

05/15/2024 করোনাকালে আফিয়ার লাখপতি হওয়ার গল্প

করোনাকালে আফিয়ার লাখপতি হওয়ার গল্প

রকমারি ডেস্ক

৬ মে ২০২১ ১৯:৫১

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর নেত্রকোনার বাড়িতে ফিরতে বাধ্য হন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন ও সরকার পরিচালনবিদ্যা বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী আফিয়া ইবনাত। বাড়ি ফিরে অলস সময় না কাটিয়ে কিছু করার ইচ্ছা থেকে উদ্যোক্তা হয়ে যান।

শুরু করেছিলেন অনলাইনে শাড়ির ব্যবসা। পরে তার ব্যবসাতে থ্রিপিস ও শেষে খাদি পাঞ্জাবি যুক্ত হয়। এখন সেই ব্যবসার বয়স গড়িয়েছে ১০ মাস। এই ১০ মাসে ১১ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন। ব্যবসা থেকে লাভবান হয়ে আফিয়া হয়ে গেছেন লাখপতি।

আফিয়ার ব্যবসার পুঁজি ছিল ৫ হাজার টাকা। এই টাকা তাকে দেওয়া হয়েছিল গত রোজার ইদে হাতখরচের জন্য। কিন্তু টাকাগুলো ব্যক্তিগত কেনাকাটায় খরচ না করে ব্যবসার জন্য কাজে লাগান আফিয়া। গত নভেম্বরে এই নারী উদ্যোক্তার গল্প সময় নিউজে 'ঈদের হাতখরচ দিয়েই ব্যবসায়ী হলেন আফিয়া' শিরোনামে প্রকাশ হয়েছিল।

তখন তার মোট বেচাকেনা ২ লাখ টাকা ছিল। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, আমি যখন প্রথম ব্যবসা শুরু করি তখন সেই ৫ হাজার টাকা দিয়ে কোনো অর্ডার ছাড়াই রিশিকা সিল্ক আর চুন্দ্রি বাটিক নিয়ে আসি। বিক্রি হবে কিনা চিন্তায় ছিলাম।

ঈদের কিছু দিন আগের কথা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার পর ১-২ দিনের মধ্যে প্রথম অর্ডার আসে। রিশিকা সিল্ক ড্রেসে আমি সবচেয়ে বেশি সাড়া পাই।

আফিয়ার সাথে আরেকবার কথা হয়। তিনি জানান, তার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ মোড় এনেছে। তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর থেকে পণ্য বিক্রি কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, এই সংবাদ দিয়েই মানুষ আমাকে চিনেছে। এ জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

আফিয়া বলেন, ১০ মাসে লাভ ২ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। ২ হাজার পিসের বেশি শাড়ি ও প্রায় ২০০ পাঞ্জাবি বিক্রি করেছি। একাই কাজ করি। অর্ডার নিতে মাঝেমধ্যে হিমশিম খেতে হয়। মনের জোর ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি।

আফিয়ার অনলাইন ব্যবসা করার জন্য ফেসবুকে রয়েছে 'চারুকথন' নামে গ্রুপ ও পেজ। সেখানে তার কয়েক হাজার ফ্যান্স ও ফলোয়ার আছে। এই পেজ ও গ্রুপে পোস্ট করে সাড়া পান তিনি। পেজ ও গ্রুপে অর্ডার পাওয়ার পর পণ্যটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন গ্রাহকের ঠিকানায়।

আফিয়া এখন মূলত শাড়ি ও পাঞ্জাবি বিক্রির দিকে মনোযোগী। এসব পণ্য সংগ্রহের বিষয়ে তিনি বলেন, টাঙ্গাইল ও কুমিল্লা থেকে এসব পণ্য সংগ্রহ করি। এই দুই অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পণ্য নেত্রকোনায় নিয়ে আসি। সরাসরি আমার যাওয়া লাগে না।

প্রথমদিকে এই ব্যবসা প্রচারণায় কষ্ট হলেও এখন আগের মতো প্রতিবন্ধকতা পান না আফিয়া। বলেন, মাসে লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করতে খুব কষ্ট করতে হয় না। চাইলে আরও বেশি বিক্রি বাড়ানো সম্ভব। আমার লক্ষ্য আরও বড়।

আফিয়ার উদ্যোগে প্রথম থেকেই তার পরিবার ছিল পাশে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনরা অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন। তার মতে, পরিচিতদের দেওয়া অনুপ্রেরণা আমাকে অনেক শক্তি দেয়। এতে আমার কাজ করতে সুবিধা ও সাহস জোগায়।

ব্যবসায়ের পাশাপাশি কিছু কাজ বেড়েছে আফিয়ার। নতুন উদ্যোক্তারা তাকে খুঁজে নিয়ে ব্যবসায়িক সমাধান চান। এ ছাড়া নিজের অভিজ্ঞতা, কর্মপদ্ধতি বিভিন্ন অনলাইন প্রোগ্রামে শেয়ার করেন।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]