শৈশবেই মা-বাবা পৃথিবীর আলো-বাতাস ছেড়ে চলে যাওয়া শিশুরা জান্নাতে হজরত ইবরাহিম (আ.) সঙ্গে থাকে। পৃথিবীতে বন্ধু-ভাই-বোনের সঙ্গে খেলা করতে না পারলেও তারা জান্নাতের বাগানে হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর আশপাশে থেকে খেলা করে।
হজরত সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত দীর্ঘ একটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজের স্বপ্নের বর্ণনায় বলেছেন—
‘আমরা চলতে চলতে একটা সবুজ শ্যামল বাগানে এসে পৌঁছলাম, যেখানে বসন্তের বিচিত্র রকম ফুলের সমাহার রয়েছে। সে বাগানের মাঝে দীর্ঘকায় একজন পুরুষকে দেখলাম। তবে তার মাথা যেন আমি দেখতেই পাচ্ছিলাম না। তার চতুর্পাশে এত বিপুল সংখ্যক বালক-বালিকা দেখলাম যে, এত বেশি আর কখনও আমি দেখিনি।
আমি ফেরেশতাদের বললাম, উনি কে? আমাকে বলা হলো, ইনি ইবরাহিম (আ.) আর তার আশপাশের বালক-বালিকারা হলো ওই সব শিশু, যারা ফিতরাতের (শৈশবের নিষ্পাপ অবস্থা) ওপর মৃত্যুবরণ করেছে।’ (বুখারি : ৪২৯)।
অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মৃত শিশুরা জান্নাতের একটি পাহাড়ে হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তার স্ত্রী সারার (আ.) তত্ত্বাবধানে থাকে। কেয়ামতের দিন তারা ওই শিশুদের তাদের বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেবেন।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন—
মুমিনদের শিশু সন্তানরা জান্নাতে একটি পাহাড়ে থাকবে, যেখানে ইবরাহিম (আ.) ও সারাহ (আ.) তাদের লালন-পালন করবেন কেয়ামতের তারা তাদের বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত। (মুসনাদে আহমদ)
এই বালক-বালিকারা তাদের মা-বাবার জান্নাতে প্রবেশের কারণ হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক মৃত শিশুরা মা-বাবার জন্য রহমত বয়ে আনে। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যেকোনো মুসলিম ব্যক্তির এমন তিনটি (সন্তান) মারা যাবে, যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি, আল্লাহ তাদের প্রতি বিশেষ রহমতে তাদের মা-বাবাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (বুখারি, হাদিস : ১৩৮১)
আরেক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি—
‘শিশু (অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী) মুসলিম সন্তানেরা জান্নাতের ‘শিশু খাদেম’ হবে। তারা তাদের মাতা-পিতাকে পেলে কাপড় ধরে টেনে জান্নাতে না নেওয়া পর্যন্ত ছাড়বে না।’ (মেশকাত, হাদিস : ১৭৫২)
এসএন /সীমা