ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় তিনটি বন্দর এবং একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ একথা নিশ্চিত করেছেন।
তার মতে, ইসরায়েলের হামলার লক্ষ্যগুলোর মধ্যে গ্যালাক্সি লিডার নামে একটি বাণিজ্যিক জাহাজও রয়েছে। এই জাহাজটি ২০২৩ সালে বিদ্রোহী গোষ্ঠী (হুথি) ছিনতাই করেছিল এবং ইসরায়েল বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় সামুদ্রিক জাহাজ পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হতো।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মতে, হুদায়দাহ, রাস ইসা এবং সাইফ বন্দরে তারা হামলা চালানোর পর, ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।
ইরান-সমর্থিত হুথি সামরিক গোষ্ঠীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, হামলার পরে তারা তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করেছে। “স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিপুল সংখ্যক ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র” ব্যবহার করে ইসরায়েলি আক্রমণ প্রতিহত করার কথা জানান তিনি।
এদিকে ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র সতর্কতামূলক সাইরেন বাজাতে দেখা গেছে এবং সেখানকার সেনাবাহিনী বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধের ফলাফল এখনো যাচাই করা হচ্ছে। ইয়েমেনে হুথি-চালিত গণমাধ্যম বলেছে, ইয়েমেনের হুদায়দায় ইসরায়েল হামল চালিয়েছে, তবে ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
কাটজ বলেছেন, এই হামলাগুলো ছিল “অপারেশন ব্ল্যাক ফ্ল্যাগ”-এর অংশ এবং এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে হুথিদের “তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য চরম মূল্য দিতে হবে”।
তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “ইয়েমেনের পরিণতি তেহরানের মতোই হবে। কেউ যদি ইসরায়েলকে ক্ষতি করার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের নিজেদেরই ক্ষতি হবে। আর কেউ যদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হাত তোলে, তার হাত কেটে ফেলা হবে।”
ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরুর পর থেকে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা নিয়মিতভাবে গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে এবং লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা করেছে।
ইসরায়েলি বিমান বাহিনী বলেছে, ইয়েমেনের বন্দরে তারা সবশেষ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের নাগরিকদের লক্ষ্য করে হুথিদের বারবার হামলার জবাব হিসেবে। তারা আরও বলেছে, ইয়েমেনের যেসব বন্দরে হামলা করা হয়েছে, সেখানে ইরানের সরকারের কাছ থেকে অস্ত্র এনে ইসরায়েল ও তার মিত্রদের ওপর হামলার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, হামলার কিছুক্ষণ পর, হুথিরা নিশ্চিত করে যে তারা তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলের হামলা প্রতিহত করেছে। রাস কানাতিব বিদ্যুৎকেন্দ্রও ইসরায়েলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
এই হুদায়দায় সর্বশেষ হামলা হয় মে ও জুন মাসে। ইসরায়েলি নৌবাহিনীর জাহাজগুলো ওই বন্দর শহরটিতে আঘাত করেছিল। মূলত হুদায়দা বন্দরটি লাখ লাখ ইয়েমেনির জন্য খাদ্য ও অন্যান্য মানবিক সহায়তার প্রধান প্রবেশদ্বার এবং সেটি গত এক বছরে একাধিকবার ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। বিবিসি বাংলা
এসএন /সীমা