রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) তৃতীয় তলার মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন মো. জসিম উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জসিম উদ্দন, প্রকৌশলী সফিউল আলম, সাইসুল ইসলামসহ অন্যান্যরা।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের নেতা প্রতারক বেল্লাল হোসেন ও তার স্ত্রী রেশমা আক্তার রিতা নেক্সাস ডেভেলপার কোম্পানি করে জাল-জালিয়াতি করে প্রতারণামূলকভাবে ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তার প্রতরাণার ফাঁদে পড়ে দুবাই ও দেশের ব্যবসার মূলধন হারিয়ে অসহায় দিনাতিপাত করছেন। তার সম্পত্তি আত্মসাতে ব্যর্থ হয়ে সাবেক ডিবি প্রধান হারুনকে দিয়ে তাকে অপহরণ করে ১২দিন গুম করে রেখেছিল। তার হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের জরুরী হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মো. জসিম উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী।
এছাড়াও বেল্লাল হোসেন নিজের অপরাধ ঢাকতে তাকে ১৪টি মিথ্যা মামলার আসামী বানিয়ে হয়রানি করেছে। এর মধ্যে ১০টি মামলা খারিজ হয়ে গেছে। ১টি মামলার চ’ড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়েছে এবং বাদী নারাজি দেয়ায় বাকি মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে।
লিখিত বক্তব্যে মো. জসিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, দুবাইতে ব্যবসা করাকালীন সৌদিআরবে হজ্জ্ব করতে গিয়ে পরিচিত হই প্রতারক বেল্লাল হোসেনের সাথে। সে বেশ কিছু দিন অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে তার সাথে ব্যবসা করাতে প্রলুব্ধ করে। পরে সে নেক্সাস ডেভেলপার লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি গঠন করে। সে কোম্পানির চেয়ারম্যান বানানো হয় তাকে। তার স্ত্রীকে ডিরেক্টর বানানো হয় এবং বেল্লাল হোসেন নিজেকে এমডি ও তার স্ত্রী রেশমা আক্তার রিতাকে ডিরেক্টর বানায়। পরবর্তীতে বেল্লাল তাকে কিছু না জানিয়ে মগবাজারের গুলফেসা ভবন থেকে অফিস সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যায়। এরই মধ্যে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতের কাছে কোম্পানির ও উভয়ের নামে জমি ও প্লট কেনার নাম করে ২০১১ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত নগদ, পে অর্ডার ও চেকের মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা গ্রহণ করে। পরে তিনি দেশে এসে দেখেন তার স্বাক্ষর জাল করে বেল্লাল হোসেন ও তার স্ত্রী ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিয়ে যায়। সে টাকা দিয়ে বেল্লাল ৩/৪টি ফ্ল্যাট ও তাদের জন্য ২টি গাড়ি কেনে।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, বেল্লাল হোসেন একক ক্ষমতায় ভুয়া মালিকানা ও সরকারি খাস জমি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি কিনে তাতে অধিক মূল্য দেখিয়ে ৫০% হারে তার কাছ থেকে বিনিয়োগের টাকা গ্রহণ করে। সে জমির মালিক হয়ে টাকা আত্মসাৎ করে তাকে নিঃশ্ব করে দেয়। পরবর্তীতে ভুয়া মালিকানাধিন ও সরকারি খাস জমি সে বিভিন্ন গ্রহকের কাছে বিক্রি করে দেয়। পরে ওই জমিগুলো গ্রাহকদের রেজিস্ট্রি করে দিতে না পারায় ও আরো অনেক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছে। পরবর্তীতে তার প্রতারণার ঘটনা ধরা পড়ে যাওয়াার পর আদালতে একটি মামলা করি। মামলাটি সিআইডি তদন্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্তে সিআইডি জানায় জমির বিক্রয় মূল্যের ৫০% লাভ্যাংশসহ সর্বমোট ২০ কোটি টাকা এককভাবে বেল্লাল হোসেন আত্মসাৎ করেছে। আদালত তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন এবং সেটা বিচারাধিন রয়েছে।
তিনি আরও জানান, তাকে হয়রানি করতে ১৪টি মিথ্যা দেয়। কিন্তু ওই মামলাগুলো ভুয়া হওয়ায় আদালত ১০টি মামলা খারিজ করে দেয়। দুইটি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে এবং আরেকটি বিচারাধিন রয়েছে বলে জানান তিনি।