23009

05/19/2024 শুরুর আগেই ভরে গেছে ইজতেমা মাঠ

শুরুর আগেই ভরে গেছে ইজতেমা মাঠ

গাজীপুর প্রতিনিধি

১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:৫০

টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে আগামীকাল শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি)। তবে এর একদিন আগেই ভরে গেছে ইজতেমার মাঠ। সারাদেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ঢল নেমেছে তুরাগ তীরে। বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসছেন তারা। নিজ নিজ আমিরের তত্ত্বাবধানে অবস্থান নিয়েছেন ইজতেমা ময়দানের নির্ধারিত খিত্তায়। আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মুসল্লিরা গতকাল থেকেই আসতে শুরু করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে সড়ক, মহাসড়কে দেখা গেছে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের ঢল।

১০৫টি খিত্তায় বিভক্ত ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিরা তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নিয়েছেন। মুসল্লিদের সুযোগ-সুবিধায় পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, টয়লেট ও পয়ঃনিষ্কাশনসহ সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ছাড়াও মুসল্লিদের চিকিৎসায় টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বাড়তি উদ্যোগ।

মুসল্লিরা বলছেন, ইজতেমার সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। মহান আল্লাহকে রাজি-খুশি করে পরকালে যেন শান্তি পেতে পারেন এই নিয়তে তারা ইজতেমায় এসেছেন।

শীতের প্রকোপের মধ্যে গতকাল রাতে এক পসলা বৃষ্টিতে ভোগান্তি বেড়েছে ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের। বিশেষ করে ময়দানের পূর্ব পাশে ও মহাসড়কে পাশে অবস্থান নেওয়া মুসল্লিরা বেশি বিপাকে পড়েন।

মুসল্লিরা বলছেন, গতকাল রাতে প্রায় আধ ঘণ্টা বৃষ্টিপাতে তাদের অনেকের জামা কাপড় ভিজে গেছে। পরে পলিথিন টাঙিয়ে বৃষ্টি থেকে তাদের মালপত্র রক্ষা করেন।

এদিকে মূল ময়দানে জায়গা না পেয়ে ইজতে মাঠের প্রবেশপথের দুই পাশে অবস্থান নিয়েছেন অনেকে। কেউ কেউ কামারপাড়া সড়কে অবস্থান করছেন।

বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুন নূর জানান, দেশ-বিদেশের লাখো মুসলিম জনতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীর। ইতোমধ্যে পুরো ময়দান পূর্ণ হয়ে গেছে। জিকির-আসকারে সময় পার করছেন মুসল্লিরা। তাদের ধর্মীয় কাজে মনোনিবিষ্ট করতে ও ময়দানে উপস্থিত মুসল্লিদের জমিয়ে রাখতে মুরব্বিরা বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকে প্রাথমিক বয়ান দিচ্ছেন। আজ বাদ ফজর দিল্লির মাওলানা আহমদ লাট বয়ান করেন।

ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মো. মাহফুজ জানান, বিশ্ব ইজতেমার মূল পর্ব শুক্রবার থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বুধবার থেকেই দলে দলে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে এসে অবস্থান নিয়েছেন। তারা নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান করছেন।

লাখো মুসল্লির উপস্থিতিতে ইজতেমা ময়দান পূর্ণ হয়ে গেছে। বাস, ট্রাক, ট্রেন ও হেঁটে টুপি-পাঞ্জাবি পরিহিত মুসল্লিরা টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে আসছেন। রোববার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মুসল্লিদের এই আগমন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আয়োজকরা বলছেন, বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ হবে। দুপুর দেড়টার দিকে কাকরাইলের মুরব্বি মাওলানা জোবায়ের এই জুমার নামাজে ইমামতি করবেন। বৃহত্তম জুমার এই নামাজে অংশ নিতে প্রতি ইজতেমায় তবলিগের মুসল্লি ছাড়াও গাজীপুর ও আশপাশের জেলা থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নিতে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুরো ইজতেমা ময়দান ছাপিয়ে কামারপাড়া, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশপাশের অলিগলিতেও কাতারবদ্ধ হয়ে জুমার নামাজে অংশ নেবেন মুসল্লিরা। ময়দানের পশ্চিমে তুরাগ নদের পূর্ব পাশে নামাজের মিম্বর এবং উত্তর-পশ্চিম পাশে বিদেশি মুসল্লিদের কামড়ার পাশে বয়ান মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। নামাজের মিম্বর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ইমাম এবং বয়ানের মঞ্চে বয়ানকারী অবস্থান করেন। বয়ান মঞ্চ থেকে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করা হবে।

প্রায় এক বর্গকিলোমিটার আয়তনের মাঠটিতে বাঁশের খুঁটির ওপর ছাউনির মধ্যে মুসল্লিদের বয়ান শোনার জন্য লাগানো হয়েছে বিশেষ ছাতা মাইক। লাগানো হয়েছে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক বাতি। দেশীয় তবলিগের মুসল্লিদের জন্য জেলাওয়ারি আলাদা খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে।

বিদেশি তবলিগ অনুসারী মুসল্লিদের জন্য মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে আধুনিক সুবিধাসংবলিত আলাদা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে, তাবলিগ জামাতের নিজেদের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখন যারা মাঠে আছেন বা আসছেন তারা সবাই আলেম-উলামাপন্থী, যাদেরকে গণমাধ্যমে মাওলানা জুবায়েরপন্থী বলে অভিহিত করা হয়। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই ইজতেমা। এরপর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ফেব্রুয়ারির ৯, ১০ ও ১১ তারিখে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]