22460

05/13/2024 বিশ্বে ধূমপায়ীদের সংখ্যা কমছে: ডব্লিউএইচও

বিশ্বে ধূমপায়ীদের সংখ্যা কমছে: ডব্লিউএইচও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৭ জানুয়ারী ২০২৪ ১১:৩৬

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন দেশের প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ধূমপান ছাড়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দু-তিন বছর ধরে এই প্রবণতা আরও গতিশীল হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, ২০২২ সালে বিশ্বে গড়ে প্রতি ৫ জন প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীদের মধ্যে একজন এই বদঅভ্যাস ত্যাগ করেছেন। এর আগে এত ব্যাপক মাত্রায় ধূমপান ছাড়ার চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছিল ২০০০ সালে। সে বছর গড়ে ধূমপান ছেড়েছিলেন প্রতি ৩ জন প্রাপ্তবয়স্কদের একজন।

বর্তমানে যে হারে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের অন্তত ১৫০টি দেশ ধূমপান ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করবে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

এখনই কমছে না মৃত্যু-

তবে ধূমপায়ীদের সংখ্যা কমতে থাকলেও ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যায় শিগগির বড় কোনো হ্রাস ঘটার সম্ভাবনা আপাতত নেই। এ প্রসঙ্গে ডব্লিউএইচও’র ভাষ্য, তামাকজনিত মৃত্যুর হারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের জন্য আরও সময় প্রয়োজন।

ডব্লিউএইচও’র প্রতিবেদনে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘যেসব দেশ ধূমপান নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে, তামাকজনিত কারণে মৃত্যুর হার হ্রাস বা এ জাতীয় কোনো বড় পরিবর্তন দেখতে হলে সেইসব দেশকে অন্তত আরও ৩০ বছর অপেক্ষা করতে হবে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থঅর হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বে ধূমপান ও তামাকজনিত কারণে বর্তমানে প্রতি বছর বিশ্বে মৃত্যু হয় আশি লাখেরও বেশি মানুষের। এই মৃতদের মধ্যে প্রায় ১৩ লাখ পরোক্ষ ধূমপায়ী। অর্থাৎ নিজেরা ধূমপান করেন না, কিন্তু ধূমপায়ীদের আশেপাশে থাকার কারণে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগে মারা যান।

তাছাড়া বর্তমানে যে গতিতে ধূমপায়ীদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে, তা আশাব্যাঞ্জক হলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গৃহীত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ধীর। ২০১০ সাল থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ধূমপান ও তামাকজনিত কারণে মৃত্যুহার ৩০ শতাংশ হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

এই মুহূর্তে বিশ্বের মাত্র ছয়টি দেশ এই লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি রয়েছে। এই দেশগুলো হলো ব্রাজিল, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক (ডিআর) কঙ্গো, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, মলদোভা এবং ওমান।

উদ্বেগ এখনও কাটেনি-

প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীদের মধ্যে ধূমপান ত্যাগের প্রবণতা বৃদ্ধি পেলেও সমাজ থেকে এ সংক্রান্ত উদ্বেগ এখনও কাটেনি। কারণ ডব্লিউএইচও’র পর্যবেক্ষণ বলছে, অপ্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীদের ধূমপান ত্যাগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো সাফল্য এখনও আসেনি।

সংস্থাটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে বর্তমানে অন্তত ৩ কোটি ৭০ লাখ অপ্রাপ্তবয়স্ক সিগারেট এবং অন্যান্য তামাকজাত পণ্যে অভ্যস্ত। এই অপ্রাপ্তবয়স্কদের সবাই ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরী। বর্তমানে বিশ্বে যত ধূমপায়ী রয়েছেন, তাদের মধ্যে এই কিশোর-কিশোরীদের হার অন্তত ১০ শতাংশ।

তবে ধূমপায়ী কিশোর-কিশোরীদের প্রকৃত সংখ্যা পরিসংখ্যানের চেয়ে আরও অনেক বেশি বলে মনে করে ডব্লিউএইচও। কারণ, অন্তত ৭০টি সদস্যরাষ্ট্র এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে দেয়নি।

ডব্লিউএইচও’র হেলথ প্রমোশন বিভাগের পরিচালক রুয়েডিগের ক্রেচ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিসিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছে সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য বিক্রিতে কড়াকড়ি আরোপের জন্য আমরা বহুদিন ধরে প্রচারাভিযান চালাচ্ছি; কিন্তু অনেক দেশ এই ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাছাড়া সিগারেট ও তামাক কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য বিক্রি করতে নানা কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। এই মুহূর্তে অপ্রাপ্তবয়স্কদের সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য থেকে মুক্ত রাখা আমাদের সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।’

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]