22161

05/11/2024 বাংলাদেশের দিকে নজর রাখছেন জাতিসংঘ মহাসচিব

বাংলাদেশের দিকে নজর রাখছেন জাতিসংঘ মহাসচিব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৯ জানুয়ারী ২০২৪ ১৭:৪৫

বাংলাদেশের নির্বাচন ও সাম্প্রতিক ঘটনার দিকে নজর রাখছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। সোমবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে একথা জানান জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনো।

সোতো নিনোকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন যে, বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে জয় পাওয়ার দাবি করেছেন শেখ হাসিনা। যদিও এমন এক পরিবেশে নির্বাচন হয়েছে, যেখানে হাজার হাজার মানুষ ও বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে কি মনে করে জাতিসংঘ?

জবাবে সোতো নিনো বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতির দিকে তারা নজর রাখছেন। সেখানে যা ঘটছে, তার দিকে জাতিসংঘ মহাসচিবও নজর রাখছেন। বিরোধীদের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তের বিষয়টি তিনি জানেন। ভিন্নমত-সমালোচনা দমনসহ বিরোধী নেতাদের গ্রেফতারের সব অভিযোগের বিষয়ে তিনি অবগত।

সহযোগী মুখপাত্র আরও বলেন, নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের সময় সহিংসতার ঘটনার খবরে জাতিসংঘ মহাসচিব স্পষ্টতই উদ্বিগ্ন। তিনি সব পক্ষকে সব ধরনের সহিংসতা পরিহার করতে বলেছেন। মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি যাতে পূর্ণ শ্রদ্ধা দেখানো হয়, তা নিশ্চিতে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সেখানে গণতন্ত্র সুসংহত ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য এটি অপরিহার্য।

আরেক প্রশ্নে বলা হয়, নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। সেখানে দুই শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক ছিলেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষকও ছিলেন। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা নিবিড়ভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তি নিয়ে পুরোপুরি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের নতুন সরকার ভবিষ্যতে জাতিসংঘের সঙ্গে তার সহযোগিতার সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে চায়। বাংলাদেশের নতুন সরকার নিয়ে সহযোগী মুখপাত্রের কিছু বলার আছে কি?

জবাবে সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনো বলেন, তারা সত্যিকার অর্থে যা বলতে চাইছেন, তা হলো সরকার যা করছে, তা চলবে না। সেখানে তাদের গণতন্ত্রের পরিবেশ গড়ে তোলাটা অপরিহার্য। সব ধরনের সহিংসতা পরিহার করতে হবে। মানবাধিকারের প্রতি যাতে শ্রদ্ধা দেখানো হয়, তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।

এর আগে সকল বাংলাদেশির ভবিষ্যত হুমকির মুখে উল্লেখ করে দেশের বর্তমান গতিপথ পরিবর্তন করে একটি সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে আহ্বান জানান জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভল্কার তুর্ক।

জেনেভায় জাতিসংঘ দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বলা হয়, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্নবীকরণের বাংলাদেশের নবনির্বাচিত সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার। তিনি ভোটের পরিবেশ নিয়েও সমালোচনা করেছেন। সেই সঙ্গে রোববার ভোটের দিন বিরোধী প্রার্থী ও সমর্থকদের প্রতি সহিংসতা ও দমন–পীড়নের বিষয়টিও তুলে ধরেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার বলেন, ভোটের আগের মাসগুলোতে হাজার হাজার বিরোধী সমর্থককে নির্বিচারে আটক করা হয়েছে বা ভয় দেখানো হয়েছে। এই ধরনের কৌশল সত্যিকারের প্রকৃত প্রক্রিয়ার জন্য সহায়ক নয়। আমি সরকারকে অনুরোধ করছি, যেন সকল বাংলাদেশির মানবাধিকারের বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে আমলে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে যাতে সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের ভিত্তিকে শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।

ভল্কার তুর্ক বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে এসেছিল, এটি নষ্ট হওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল এবং আমি আন্তরিকভাবে আশা করি এটি রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রেও বিস্তার করবে।

৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ বিভিন্ন দল এই নির্বাচন বর্জন করেছে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]