21762

05/15/2024 বৃষ্টি আইনে হেরে সিরিজ ড্র করল বাংলাদেশ

বৃষ্টি আইনে হেরে সিরিজ ড্র করল বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক

৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:৩২

এখন হয়তো আরও কিছু রানের আক্ষেপ থেকে যাবে বাংলাদেশের। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বড় রানের মাঠেও যে সফরকারীরা মাত্র ১১০ রানের পুঁজি গড়েছিল। তবুও জয়ের আশা দেখিয়েছিলেন শেখ মেহেদী ও শরীফুল ইসলামরা। তবে শেষদিকে ঝড় তুলে সেই জয় প্রায় ছিনিয়ে নেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার জিমি নিশাম। যদিও আগেই ম্যাচ শেষ করে দিয়েছে বৃষ্টি, ডিএলএস মেথডে বে ওভালের মাঠে প্রথমবারের মতো আগে ব্যাট করা বাংলাদেশ পরাজিত হয়েছে।

বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ১৪.৪ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৯৫ রান তুলেছিল স্বাগতিকরা। তখনই তারা ১৭ রানে এগিয়ে ছিল। গ্যালারিতে দর্শকদের মাঝে ছুটোছুটি ফেলে দেওয়া ঝোড়ো বৃষ্টি আর ক্রিকেটারদের মাঠে নামতে দেয়নি। ফলে ১৭ রানে জিতে সিরিজে সমতা ফেরাল নিউজিল্যান্ড। এর আগে বে ওভালে আগে ব্যাটিং করা কোনো দলই (৮ ম্যাচ) হারেনি, যেখানে বাংলাদেশই প্রথম!

এর আগে ৯ ওভারে ৫ উইকেটে স্বাগতিকদের রান ছিল ৪৯। ১০ ওভার শেষে যা দাঁড়ায় ৫/৬৩। এমন চাপে থাকা কিউইদের কি ম্যাচে ফেরার সুযোগ করে দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত? নিয়মিত বোলাররা যেখানে ভালো করছেন, তখন নিজে বোলিংয়ে এসে দিয়ে দিলেন ১৪ রান! একটি চার ও ছক্কার বাউন্ডারি মেরেছেন আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান জিমি নিশাম। শান্ত’র হাতে অবশ্য অপশনও ছিল না তেমন, ক্রিজে দুই বাঁ-হাতি ব্যাটারের বিপরীতে অফস্পিনে কেবল শেখ মেহেদীর এক ওভার বাকি ছিল। তাই নিজেই আক্রমণে এসেছিলেন, যাতে হিতে বিপরীতই হলো!

পরের ওভারে অবশ্য স্বাগতিকদের লাগাম টানেন মুস্তাফিজুর রহমান। ১১তম ওভারে তিনি দেন মাত্র ৩ রান। কিন্তু এরপর ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়িয়েছেন নিশাম ও মিচেল স্যান্টনার। বৃষ্টিবিঘ্নিত আগের ম্যাচে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করা রিশাদ হোসেন দুই ওভারেই ১৯ রান দিয়ে বসেন। পরে ৩২ বলে কিউইদের দরকার যখন মাত্র ১৬ রান, বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৫ উইকেট। ফলে প্রায় ফসকে যাওয়া ম্যাচে বৃষ্টি আগেভাগেই ইতি টেনে দিলো।

ছোট পুঁজি নিয়েও বাংলাদেশকে শুরুতে আশা দেখিয়েছেন ডানহাতি অফস্পিনার শেখ মেহেদী। ফিন অ্যালেনের আক্রমণাত্মক শুরুর পর তিনিই সফরকারীদের জোড়া সাফল্য এনে দেন। প্রথমে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে আউট টিম সেইফার্ট (১ রান)। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান বেসামাল হয়ে ক্রিজের বাইরে বের হয়ে যান। সে সুযোগে তার উইকেট ভাঙেন রনি তালুকদার। প্রথম ওভারে ৪ রানে মেহেদী নেন এক উইকেট। মাঝে এক ওভারে শরীফুল ইসলামের ওভারে দুটি চারের বাউন্ডারি পায় নিউজিল্যান্ড। ইনিংসে চতুর্থ ওভারে এসে আবারও সফল মেহেদী। তার ফুললেংথ ডেলিভারি তুলে মারার চেষ্টায় মিড অফে ধরা পড়েছেন ড্যারিল মিচেল।

এরপর গ্লেন ফিলিপসকে বোল্ড করে মেহেদীর দলে যোগ দেন পেসার শরীফুল ইসলামও। স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড যখন চাপ সামলানোর চেষ্টায়, এরপরই রানআউটের দূর্ভাগ্য সঙ্গী মার্ক চ্যাপম্যানের। দুই ব্যাটসম্যানের সংঘর্ষে বলি হতে হলো চাপম্যানকে। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে জোড়া রানের চেষ্টায় ছিলেন চাপম্যান ও অ্যালেন। কিন্তু ক্রিজের মাঝখানে দুজনের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর তাদের গতি কমে যায়। চাপম্যান ক্রিজে পৌঁছার আগে আফিফ হোসেনের থ্রো করা বল ধরে উইকেট ভেঙে দেন মুস্তাফিজ।

এমন দূর্ভাগ্য ছাপিয়ে পরের ওভারে রিশাদ হোসেনের বলে ছয় হাঁকান ইনফর্ম ব্যাটার অ্যালেন। ওই ওভারে কিউইরা পায় ৯ রান। এরপর শরীফুলও আক্রমণে এসে দ্বিতীয় দফায় সফল। ফিলিপসকে ১ রানে বোল্ড করা এই পেসার এবার অ্যালেনকেও ইনসুইংয়ে বোকা বানান। বোল্ড আউট হয়ে ফেরার আগে ৩১ বলে ৪টি চার ও দুই ছক্কায় ৩৮ রান করেন। ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে প্রায় ধুঁকছিল স্বাগতিক দলটি। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন নিশাম। শেষ পর্যন্ত ২০ বলে এক চার ও দুটি ছক্কায় তিনি ২৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। স্যান্টনার অপরাজিত ছিলেন ১৮ রানে।

বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন মেহেদী ও শরীফুল। মেহেদী ৪ ওভারে ১৮ এবং শরীফুল ৩.৪ ওভারে খরচ করেন ১৭ রান। উইকেট না পেলে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন মুস্তাফিজ। তিনি ৩ ওভারে মাত্র ১৩ রান দেন।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশ স্যান্টনার-সোধির ঘূর্ণিতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। নির্ধারিত ওভার শেষ হওয়ার চার বল আগেই সফরকারীরা ১১০ রানে অলআউট হয়ে যায়। উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার প্রতিযোগিতায় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ কেবল শান্ত’র ১৫ বলে ১৭ রান। এছাড়া তাওহীদ হৃদয় ১৮ বলে ১৬ এবং আফিফ হোসেন ১৩ বলে ১৪ রান করেন। এছাড়া বলার মতো রান পাননি কেউই।

কিউইদের হয়ে ১৬ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন স্যান্টনার। এছাড়া সাউদি, মিলনে ও সিয়ার্স প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট নেন। কেবল সোধি উইকেট না পেলেও, নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন তিনি।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]