2094

03/28/2024 করোনাভাইরাস নিষ্ক্রিয় করতে সূর্যের আলো

করোনাভাইরাস নিষ্ক্রিয় করতে সূর্যের আলো

লাইফস্টাইল ডেস্ক

২ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৫৬

গ্রীষ্মকাল হতে পারে করোনাভাইরাসের জন্য নরক।

পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয় মার্চ মাসের বিভিন্ন সময়ে। আমাদের দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও একই মাসেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। সেসময় অনেকেই বলছিলেন উষ্ণ আবহাওয়া করোনাভাইরাস সংক্রমণে লাগাম টানবে।

তবে সবধরনের আবহাওয়ার দেশেই যখন এই ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করে তখন আমরা বুঝতে পারি আসলে ব্যাপারটা অতো সহজ হবে না।

তবে শত হতাশার মাঝে কিছুটা আশার আলো দেখিয়েছেন শীর্ষ মার্কিন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি।

তিনি বলেন, “করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে গ্রীষ্ম আমাদের জন্য একটি সুখবর নিয়ে আসে যা বর্ষা কিংবা শীতকাল দিতে পারে না। আর সেই সুখবর হলো সূর্যের আলো ও তাপ করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম তা আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি।”

ফাউচি চাঞ্চল্যকর এই তথ্য তুলে ধরেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সস্টাগ্রামে হলিউড অভিনেতা ম্যাথিউ ম্যাক্কনাহেই’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে।

ম্যাথিউ প্রশ্ন করেন, “সূর্যের আলো কী করোনাভাইরাস ধ্বংস করতে পারে?”

জবাবে ফাউচি বলেন, “হ্যাঁ করে। আর এজন্যই দিনের বেলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঘরের বাইরে রোদ পোহানো, শরীরচর্চা কিংবা দৈনন্দিন কাজ করাটা সবসময় বদ্ধ ঘরে বসে থাকার তুলনায় শ্রেয়।”

সাক্ষাৎকারে সূর্যের আলোর ভাইরাস নিষ্ক্রিয় করার অন্যান্য গুণাগুণ নিয়ে বিস্তারিত বলেন ওই চিকিৎসক এবং একাধিকবার বলেন, “ঘরে থাকার চাইতে বাইরে থাকা সবসময়ই ভালো।”

তাই বলে সামাজিক দূরত্বের কথা ভুলে গেলে কিন্তু চলবে না।

পরে ম্যাথিউ প্রশ্ন করেন, “একারণেই কি কিছু দ্বীপজাতীয় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ কম?।

এখানে ফাউচি জবাব দেন, “কারণটা সেটা হওয়া অনেকটা যুক্তি সঙ্গত।”

সূর্যের করোনাভাইরাস নিষ্ক্রিয় করার ব্যাপারটা নতুন খবর নয়। এর আগেও একাধিক চিকিৎস ও বিশেষজ্ঞ এমনটা দাবি করেছেন।

‘ফটোকেমিস্ট্রি অ্যান্ড ফটোবায়োলজি’ শীর্ষক সাময়িকীতে জুন মাসে প্রকাশিত এক গবেষণা দাবি করেছিল, “প্রায় ৯০ শতাংশ ‘সারস-কোভ-টু’ ভাইরাস গ্রীষ্মের সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসার ১১ থেকে ৩৪ মিনিটের মধ্যে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।”

এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা আরও দাবি করেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩ ডিগ্রি ‘ল্যাটিটিউড নর্থ’য়ের দক্ষিণে থাকা শহরগুলোয় গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে যে রোদ পড়ে তার সংস্পর্শে আসলে ৯৯ শতাংশ করোনাভাইরাস নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া সম্ভব।”

“এছাড়াও যারা গ্রীষ্মের রোদে বাইরে বিভিন্ন কাজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী হয়ে ওঠা সম্ভব। কারণ সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসায় করোনাভাইরাস দুর্বল কিংবা নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলেও তার অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় না। ফলে মানুষ সেই ভাইরাসগুলোর সংক্রমণের শিকার হয় এবং ভাইরাস দুর্বল হওয়ায় তা ‘কোভিড-১৯’য়ে মোড় নিতে পারে না।”

“তবে শরীরের জৈবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সেই দুর্বল ভাইরাসের প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করার সুযোগ পায় এবং পক্ষান্তরে ওই মানুষের শরীরে মৃদু ‘ইমিউন রেসপন্স’ তৈরি হয়।”

সূর্যের আলোর করোনাভাইরাস ধ্বংস করা কার্যকারিতা দেখে সেই প্রভাবকে কৃত্রিমভাবে তৈরি করার চেষ্টা করছেন গবেষকরা। পরীক্ষামূলক এই কাজে ব্যবহার হচ্ছে ‘ফার ইউভি-সি লাইট’।

এই প্রচেষ্টা সফল হলে যে কোনো স্থানে ওই ‘ফার ইউভি-সি লাইট’ জ্বালিয়ে ৯৯.৯৯ শতাংশ ভাইরাস নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব বলে দাবি করেন গবেষকরা।

ফোর্বস’য়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, “সঠিকভাবে এবং সঠিকস্থানে এই বাতিগুলো বসানো গেলে যে স্থানে আলো পড়বে সেই স্থানটি ভাইরাস মুক্ত হতে সময় লাগবে মাত্র ২৫ মিনিট।”

তবে সামনে যেহেতু শীত আসছে তাই ড. ফাউচির পরামর্শ, যত যাই হোক স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে আর মাস্ক পরা বাদ দেওয়া যাবে না।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]