বিচার বিভাগ নিয়ে ‘বিরূপ মন্তব্য’ করার কারণে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ আপাতত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বা হাই কোর্ট বিভাগে কোনো মামলা লড়তে পারবেন না।
সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে (আপিল ও হাই কোর্ট বিভাগ) তার আইন পেশা পরিচালনার অনুমতি দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
সেইসঙ্গে ইউনুছ আলী আকন্দের ফেইসবুক পেইজ থেকে বিচার বিভাগ নিয়ে তার মন্তব্য অপসারণ করে তার অ্যাকাউন্ট ‘ব্লক করতে’ বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে যে আদালত অবমাননার নোটিস জারি হয়েছে, আগামী ১১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে উপস্থিত হয়ে তাকে সে বিষয়ে তাকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেয়।
জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেছেন, কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির ফেইসবুক বন্ধ করতে বিটিআরসিকে আদালতের নির্দেশ দেওয়ার ঘটনা ‘সম্ভবত’ এটাই প্রথম।
বিচার বিভাগ নিয়ে ফেইসবুকে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দের কিছু মন্তব্য রোববার সকালে আপিল বেঞ্চের নজরে আনেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
ইউনুছ আলীর সেসব মন্তব্যে ‘গুরুতর আদালত অবমাননা’ হয়েছে মন্তব্য করে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনার আরজি জানান তিনি।
পরে দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল, মনসুরুল হক চৌধুরী, আব্দুল মতিন খসরু, সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন, আইনজীবী মনজিল মোরেসদ ও সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজলের বক্তব্য শুনে আদালত আদেশ দেয়।
এর আগে বিচার বিভাগ নিয়ে ফেইসবুকে ‘বিরূপ মন্তব্য’ করায় গত মাসে আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিস জারি করেছিল সর্বোচ্চ আদালত।
দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে আর ‘অবমাননাকর কাজ ’না করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর আপিল বিভাগ মামুন মাহবুবকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়।
তবে সেই আদেশে আদালত বলে দেয়, “ভবিষ্যতের জন্য এই মামলার কার্যক্রম ধারণ করা হয়েছে এবং তা সংরক্ষণ করা হবে।’
দেশে বিভিন্ন ঘটনার পর রিট মামলা করে আলোচিত ইউনুস আলী আকন্দ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে ঢাকা-৮ আসন থেকে নির্বাচন করে হেরে যান।
সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে আবেদন করে তিনি নতুন আলোচনার জন্ম দেন।