1798

05/14/2024 সরকারপক্ষের পত্রিকা ছাড়া বাকিদের চলতে দেবে না: মির্জা ফখরুল

সরকারপক্ষের পত্রিকা ছাড়া বাকিদের চলতে দেবে না: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:১১

গণমাধ্যমের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ এখন সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের বিএনপিপন্থি অংশের উদ্যোগে ‘মুক্ত সাংবাদিক অন্তর্ধান’ দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি একথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে যে অবস্থায় পড়েছি- এটা নিঃসন্দেহে সবচেয়ে খারাপ সময়, সবচেয়ে কঠিন সময়ে। এখানে এমন একটা অবস্থা তৈরি করে ফেলা হয়েছে; বিশেষ করে ভয়-ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করে যে আজকে কেউ সাহস করছে না।

“আজকে আমার মনে হয় যে, যত সাংবাদিক এখন বেকার আছেন, এতো বেকার বোধহয় কখনো ছিল না। পঁচাত্তর সালে বাকশাল করার পর চারটি পত্রিকা রেখেছিল, বাকিগুলো চলে গিয়েছিল। আজকে কিন্তু পরোক্ষভাবে ওই রকমই একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে। তাদের কথা যারা বলবে, তাদের পক্ষে যারা থাকবে তাদের পত্রিকা চলবে, তাদের চ্যানেল চলবে, তাদের গণমাধ্যমগুলো চলবে। অন্য যারা আছে তাদেরগুলো তারা চলতে দেবে না।

তিনি বলেন, “আমি জানি, আপনারা অনেক ভুক্তভোগী, আপনারা অনেক কষ্ট করছেন, অনেকের চাকুরি নেই, অনেকে জেল-জুলুম-মামলার মধ্যে পড়েছেন। সাগর-রুনি থেকে শুরু করে অনেকে খুন হয়ে গেছেন, অনেকে গুম হয়ে গেছেন, অনেককে হত্যা করা হয়েছে। তারপরেও আপনাদেরকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।

“কারণ আপনারাই হচ্ছেন গণতন্ত্রের মূলভিত্তি। মুক্ত সাংবাদিকতা বা মুক্ত সংবাদমাধ্যম না থাকলে গণতন্ত্র কখনোই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। গণতন্ত্রের মূল বিষয়টাই হচ্ছে গণমাধ্যম সব দেশে, সব যুগে, সব কালে সাংবাদিকরা একটা প্রধান একটা ভূমিকা পালন করে। আপনারা চেষ্টা করছেন, সব সময় করেছেন।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ভার্চুয়াল আলোচনার মধ্য দিয়ে এই ম্যাসেজটা সকলকে আপনারা (সাংবাদিকরা) দিতে পারেন যে, এখন থেকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া দেশকে, গণতন্ত্রকে, সাংবাদিকতা- কাউকেই রক্ষা করা যাবে না, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকেও রক্ষা করা যাবে না।

“আমি একটা কথাই বলব, অবস্থা বদলে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। বদলে দেওয়ার একটাই পথ যে, আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট যে সরকার, এই সরকারকে সরাতে হবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনই হচ্ছে আমাদের একমাত্র পথ।”

বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, “ভিন্নমত পোষণকারী কোনো সংবাদপত্র কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন পাচ্ছে না। কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি বিজ্ঞাপন দিলেও তাকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এইভাবে সাংবাদিক নির্যাতন হচ্ছে। এই অবস্থার অবশ্যই আমাদেরকে পরিবর্তন আনতে হবে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।”

সভাপতির বক্তব্যের ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, “সাধারণ মানুষের বাকস্বাধীনতার ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করার মধ্য দিয়ে এই আইন সাংবাদিকদের কলমকে, মানুষের মুখকে বন্ধ রাখার চক্রান্ত হচ্ছে, ভিন্ন মত দমনে এই আইন বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে।

“এটা একটি জঙ্গি আইন। এটা কোনো সভ্য সমাজে কিংবা কোনো সভ্য কল্যাণকর রাষ্ট্রে থাকতে পারে না, এটা সংবিধানবিরোধী আইন। আমরা এই আইনটির অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।”

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল এই আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া মো. গোলাম পারোয়ার, বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, ডিইউজের বাকের হোসাইন, আবদুল আউয়াল ঠাকুর, নুরুল আমিন রোকন, বাছির জামাল, রাশেদুল হক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোরসালীন নোমানী, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি একেএম মহসিন বক্তব্য রাখেন।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]