ঈদযাত্রার শেষদিনের ট্রেনের টিকিট কিনতে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি রেলওয়ের সার্ভারে। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ঈদের আগের ২১ এপ্রিলের টিকিট অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে। টিকিট কিনতে সার্ভারে গত চার দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ চাপ ছিল আজ।
যথারীতি মঙ্গলবার সকাল ৮টায় অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। এরপর প্রথম ৪০ মিনিটে ২৬ হাজার ৪৪৬টি টিকিটের জন্য আড়াই কোটি হিট পড়েছে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, সকাল ৮টা থেকে চার ঘণ্টা আপ্রাণ চেষ্টা করেও সার্ভারে প্রবেশ করতে না পেরে অনেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে চলে এসেছেন।
রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, অন্য দিনের তুলনায় আজ সার্ভারে বেশি হিট পড়ায় প্রথম তিন ঘণ্টায় সমস্যা দেখা দেয়। তবে সাড়ে ১১টার দিকে সমস্যা কাটিয়ে ওঠা গেছে। পূর্বাঞ্চলের কিছু টিকিট এখনো অবিক্রীত থাকলেও সেগুলো বিক্রি হয়ে যাবে। পশ্চিমাঞ্চলের টিকিটের চাহিদা বেশি থাকায় বিক্রি শুরু হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে সব টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে।
সকাল থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করেও সার্ভারে প্রবেশ করতে না পেরে অনেকে কমলাপুর স্টেশনে চলে এসেছেন। তাদের দাবি, সকাল ৮টায় টিকিট বিক্রি শুরুর পর ল্যাপটপ, মোবাইলে টানা চেষ্টা করেও রেলওয়ের সার্ভারে প্রবেশ করতে পারেননি। তাহলে কারা সার্ভারে প্রবেশ করে টিকিট কাটতে, এটা জানা দরকার।
শফিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ফেসবুকে লিখেছেন, অনলাইনে টিকিট যুদ্ধে সাকসেস হতে পারিনি, তাই অফলাইনে এখন কমলাপুরে এসেছি।
সাইদুর রহমান নামে একজন যাত্রী বলেন, সব অঞ্চলের টিকিট একসঙ্গে না ছেড়ে সময় ভাগ করে ছাড়লে সার্ভারের লোড কমানো সম্ভব হতো। তার মতে, সকাল ৮টা থেকে ১০টা উত্তরাঞ্চলের টিকিট, ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সিলেট ও চট্টগ্রাম, ১২ থেকে ২টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের টিকিট বিক্রির সিডিউল দিলে সার্ভারের জটিলতা কমানো যেত।
এখন সব টিকিট একসঙ্গে ছাড়ার কারণে লাখ লাখ মানুষ সার্ভারে হিট করছে। এতে লটারির মতো হয়ে যাচ্ছে। কেউ কোনরকমে ঢুকতে পারলেই তিনি ভাগ্যবান ব্যক্তি হয়ে যাচ্ছেন। যাত্রীদের হয়রানি কমানোর জন্য যেহেতু এ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে, তাই সার্ভারের জটিলতা কীভাবে কমানো যায় তা নিয়ে আগামীতে রেল কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত।
রেল সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে রেলের টিকিট কাটার জন্য নিবন্ধন করেছে ১৮ লাখ মানুষ। অনলাইনে ঈদের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১৫ এপ্রিল।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৭ এপ্রিল ১৮৫০০, ৮ এপ্রিল ২৫২০০ এবং ৯ এপ্রিল ২৪৫০০ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। সোমবার ২৭ হাজারের কিছু বেশি টিকিট বিক্রি হয়। মঙ্গলবার ২১ এপ্রিলের জন্য নির্ধারিত ২৬ হাজার ৪৪৬টি টিকিট কিনতে যুদ্ধ করছে কয়েক লাখ মানুষ।
গত শুক্রবার ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়। সোমবার ২৭ হাজারের কিছু বেশি টিকিটের জন্য ১ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ রেল সার্ভারে হিট করেছে।
আসন বিহীন টিকিট বিক্রি হবে
যারা টিকিট পাচ্ছেন না তাদের জন্য আসনবিহীন টিকিট বিক্রি হবে। ঢাকা-চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস ছাড়া বাকি ৩৬টি আন্তঃনগর ট্রেনে শুধু যাত্রার দিন আসনবিহীন ২৫ শতাংশ টিকিট বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার। তিনি জানান, অবিক্রীত টিকিটও যাত্রার আগে কাউন্টার থেকে কাটতে পারবেন যাত্রীরা।