15505

04/25/2024 মহাকাশে কীভাবে রোজা পালন করেন মুসলিম মহাকাশচারীরা

মহাকাশে কীভাবে রোজা পালন করেন মুসলিম মহাকাশচারীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৩ মার্চ ২০২৩ ২৩:২৯

চলতি বছরের ৩ মার্চ মহাকাশে পাড়ি জমান আরব আমিরাতের ইসলাম ধর্মাবলম্বী মহাকাশচারী সুলতান আলনিয়াদি। তিনি দীর্ঘ ৬ মাস মহাকাশে অবস্থান করবেন।

সুলতান আলনিয়াদি মহাকাশে থাকা অবস্থাতেই শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। এই মাসে রোজা পালন করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরজ। সুলতানের আগেও মহাকাশে গেছেন আরও মুসলিম মহাকাশচারীরা।

বর্তমানে সুলতান মহাকাশে থাকায় একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে— কীভাবে সেখানে রোজা পালন করবেন তিনি? বা যারা আগে মহাকাশে গিয়েছিলেন তারা কীভাবে এ পবিত্র মাস পালন করেছিলেন?

যেহেতু সুলতানকে বহনকারী মহাকাশযানটি প্রতি ঘণ্টায় ২৭ হাজার ৬০০ কিলোমিটার গতিতে পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করছে ফলে তিনি প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ১৬ বার সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখেন। আর রোজার নিয়ম হলো— সূর্যোদয়ের আগে সেহরি খেতে হবে এরপর সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত সমস্ত পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে।

মহাকাশে যাওয়ার আগে গত ফেব্রুয়ারিতে এ বিষয়ে উত্তর দিয়েছিলেন সুলতান আলনিয়াদি নিজে। তিনি বলেছিলেন, যেহেতু তিনি মহাকাশে যাচ্ছেন ফলে তিনি এখন একজন মুসাফির বা ভ্রমণকারী। আর মুসাফির হিসেবে তার জন্য রোজা রাখা ফরজ নয়। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আসলে রোজা ভাঙতে পারি। এটি অত্যাবশ্যকীয় নয়।’

তিনি আরও বলেছিলেন, ‘যদি আপনি সুস্থবোধ না করেন তাহলে রোজা আপনার জন্য ফরজ নয়। আর মহাকাশে যেহেতু যেকোনো কিছু মিশন বিনষ্ট করে দিতে পারে অথবা ক্রুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলতে পারে— তাই পানিশূণ্যতা ও পুষ্টিহীনতা এড়াতে আমাদের পর্যাপ্ত পানাহারের অনুমতি আছে।’

এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সুলতান আলনিয়াদি বলেছিলেন, ‘আমি চাইলে গ্রিনিচ সময় বা পৃথিবীর সময় অনুযায়ী রোজা রাখতে পারব। যেটি মহাকাশের অফিসিয়াল সময় হিসেবে গণ্য করা হয়।’

মহাকাশে ধর্মচর্চা

মহাকাশে যাওয়ার পর মহাকাশচারীরা সেখানে ধর্মচর্চা করার চেষ্টা করেছেন। ১৯৬৮ সালে নাসার অ্যাপোলো-৮ মিশনের সময় মহাকাশচারীরা বাইবেল পড়তেন। এছাড়া ১৯৬৯ সালে চন্দ্রাভিযানের সময় বাজ আলড্রিন ধর্মীয় রীতি পালন করেছিলেন।

২০০৭ সালে মালয়েশিয়ার ধার্মিক মহাকাশচারী শেখ মোজাফর শুখর মহাকাশে গিয়েছিলেন। তিনি মহাকাশে থাকা অবস্থায় রমজান মাস এসেছিল। তখন মালয়েশিয়ার ফতোয়া কাউন্সিল ফতোয়া দিয়েছিল, মোজাফর শুখর চাইলে এখন রোজা নাও রাখতে পারেন। আর যদি তিনি চান তাহলে, যেখান থেকে মহাকাশ যাত্রা শুরু করেছিলেন, সেই স্থানের সময় অনুযায়ী রোজা রাখতে পারেন।

এছাড়া মহাকাশে কীভাবে তিনি নামাজ পড়বেন সেটি নিয়েও একটি ফতোয়া জারি করা হয়েছিল। ওই ফতোয়ায় বলা হয়েছিল, যেহেতু নামাজ পড়তে হয় কাবার দিকে মুখ করে এবং নামাজ পড়ার সময় হাঁটু ভাজ করতে হয়— কিন্তু মহাকাশে শূন্য অভিকর্ষণের কারণে হাঁটু ভাজ করা কঠিন— তাই তিনি যতটা সম্ভব কাবামুখী হয়ে ও সুবিধা অনুযায়ী নামাজ পড়তে পারবেন।

মালয়েশিয়ার ফতোয়া কাউন্সিল ওই সময় ঘোষণা দিয়েছিল, ভবিষ্যতে যেসব মুসলিম মহাকাশে যাবেন তাদের জন্য এ ফতোয়াটি একটি দিকনির্দেশনামূলক হয়ে থাকবে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]