পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে সামরিক বাহিনীর একটি অংশের হাতে আটক হওয়ার পর পদত্যাগ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোউবাকার কেইতা।
গতকাল মঙ্গলবার টেলিভিশন দেওয়া এক ভাষণে তিনি সরকার ও পার্লামেন্ট বিলুপ্ত বলে ঘোষণা করেছেন।
ইব্রাহিম বোউবাকার কেইতা বলেন, ‘আমাকে ক্ষমতায় রাখার জন্য কোনরকম রক্তপাত হোক, সেটা আমি চাই না।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এর আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোউবাকার কেইতা ও প্রধানমন্ত্রী বোউবোউ সিসেকে আটক করে রাজধানী বামাকোর একটি সামরিক ক্যাম্পে নিয়ে যায় বিদ্রোহী সৈনিকরা। আটক থাকা অবস্থায়ই পদত্যাগের ঘোষণা দেন ইব্রাহিম বৌবাকার কেইতা।
তিনি বলেন, ‘যদি আজ আমাদের সেনাবাহিনীর একটি নির্দিষ্ট অংশ নিজেদের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সমাপ্তি টানতে চায়, আমার সামনে কি সত্যিই আর কোন বিকল্প আছে?’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার সকালে দেশটির রাজধানী বামাকো থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের একটি প্রধান সামরিক ঘাঁটিতে গুলি ছোড়ার মধ্য দিয়ে এই অভ্যুত্থানের শুরু হয়। সারাদিন বিক্ষিপ্তভাবে রাজধানীতে বিদ্রোহী সেনারা সরকারি ভবনে আগুন দেন। রাতের দিকে সামরিক বাহিনীর জুনিয়র অফিসাররা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের আটক করেন।
মালির সৈন্যদের মধ্যে বেতন-ভাতা নিয়ে অসন্তোষ এবং জিহাদিদের সঙ্গে অব্যাহত লড়াই নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। সেইসঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্টের উপরেও অনেকে সন্তুষ্ট নন।
২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হন কেইতা। কিন্তু দুর্নীতি, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় তার ওপর অনেকের ক্ষোভ তৈরি হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে বেশ কয়েকবার বড় ধরনের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির রক্ষণশীল মুসলমান ইমাম মাহমুদ ডিকো নেতৃত্বাধীন নতুন একটি জোট দেশে সংস্কারের দাবি তুলেছে। তাকে কেইতা যৌথ সরকার গঠন করাসহ নানা প্রস্তাব দিলেও তা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এর আগে গত ১২ জুলাই মালিতে কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা থামাতে সাংবিধানিক আদালত ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বৌবাকার কেইতা।