1071

04/28/2024 স্বপ্নবাজ তরুণ ফাহিম খুন হলেন, তার খবর ক'জন জানি?

স্বপ্নবাজ তরুণ ফাহিম খুন হলেন, তার খবর ক'জন জানি?

সানোয়ার পারভেজ

১৯ জুলাই ২০২০ ১৬:৩১

গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কে খুন হন ‘পাঠাও’- এর সহপ্রতিষ্ঠাতা তরুণ প্রযুক্তিবিদ ফাহিম সালেহ। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল শুক্রবার ডেভন হাসপিল (২১) নামে ফাহিম সালেহর ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ।

আমেরিকায় বাংলাদেশের একজন স্বপ্নবাজ তরুণ নৃশংসভাবে খুন হওয়ার ঘটনায় ফেসবুকে নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন ফার্মাসিস্ট সানোয়ার পারভেজ।

সময়নিউজ পাঠকদের জন্য হুবহু তা তুলে ধরা হলো-

ভন্ড-প্রতারক, যারা দিতে জানেনা শুধু নিতে জানে- এদের ব্যাপারে আমার বরাবরই আগ্রহ কম। অথচ এদের নিয়েই মাতামাতিটা যেন একটু বেশি। আমার কষ্ট হয় যখন দেখি সমাজ, রাষ্ট্র তথা পৃথিবীর কল্যাণে যারা কাজ করে তাদের করুন পরিণতিতে।

বলছিলাম মিডিয়া তথা দেশব্যাপী কয়েক দিন যাবত কিছু ভন্ড, প্রতারকদের নিয়ে যে মাতামাতি চলছে, তা নিয়ে। সেখানে আমাদের ভীষণ আগ্রহ। কার কয়টা বউ? কার কয়টা বর? এই রসালো আলোচনায় মশগুল আমরা। কেউ কেউ আবার এদের নিয়ে গান, কবিতা লিখে নিজেকে মহাকবি বাল্মীকি (পড়ুন বাল- মিকি) মনে করে। অথচ এরই ভিতরে যে আমাদের দেশের একজন স্বপ্নবাজ তরুণ নৃশংসভাবে খুন হলেন আমেরিকায় তার খবর ক'জন জানি?

মিডিয়াও এ ব্যাপারে দায়সারা গোছের, কারণ তারাও তো বাণিজ্যে বিশ্বাসী। আজ দেখলাম ফাহিম সালেহর খুনি ধরা পড়েছে এবং খুনের কারণ, গতকালই সে ধরা পড়েছিল তখন ছিল সন্দেহভাজন। খুনের ঘটনা ও সেই আদি, অর্থনৈতিক কারণ।

খুনি টাইরেস ডেভন ছিল তাঁর সাবেক ব্যাক্তিগত সহকারী, সে ফাহিমের ব্যাবসায়িক একাউন্ট থেকে লাখ ডলার চুরি করে এবং এরই সূত্রধরে খুনের ঘটনা ঘটে। যা খুবই দুঃখজনক।

ফাহিম ছিল একজন স্বপ্নবাজ উদ্দোক্তা। আমেরিকার নিউইয়র্কের অভিজাত এলাকায় ছিল তার বাস। তাঁর সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি সে ছিল সম্ভ্রান্ত এবং উচ্চশিক্ষিত পরিবারের সন্তান । সে দেশের জন্য কিছু করতে চেয়েছিল যা থেকে তাঁর "পাঠাও"এর সৃষ্টি ।

এবার আসি একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে, সে বাংলাদেশি হয়েও বাস করতো নিউইয়র্কে এবং অভিজাত এলাকায়। সেখানেই সে খুন হয়। শুনেছি সে যখন ২০১৩ সালে দেশে এসে তাঁর স্বপ্নের কথা বলেছিল তাঁর বাবা মা'কে, তখন তাঁরা তাঁকে এদেশের গরম আবহাওয়া এবং সামাজিক অস্থিরতার কথা বলেছিল। জবাবে সে বলেছিল, "শুধু শুধু তোমরা তোমাদের দেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করছো, আমার তো ভালোই লাগে, আমি চাই এদেশের উদ্যমী যুবসমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে"। এ থেকেই তাঁর "পাঠাও" এর সৃষ্টি।

যা বলতে চেয়েছিলাম সমস্যা, নিরাপত্তাহীনতা সব জায়গায়ই আছে। অথচ অনেকে এসব অজুহাতে এদেশে কিছু করতে চায় না, এটা ভুল।

সবশেষে বলবো, দেশকে ভালবাসুন, দেশের জন্য কিছু করুন। ভন্ড-প্রতারক হয়ে মানুষের ঘৃণায় নয়, বেঁচে থাকুন মানুষের ভালবাসায়।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]