10491

05/04/2024 বিদেশি পার্সেল প্রতারক চক্রের ১১ সদস্য গ্রেফতার

বিদেশি পার্সেল প্রতারক চক্রের ১১ সদস্য গ্রেফতার

ডেস্ক রিপোর্ট

৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৪:১০

বিদেশি গিফট আর পার্সেল প্রতারণা চক্রের মূলহোতাসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ডিবি জানায়, এই চক্রের মূলহোতা বিপ্লব লস্কর।

গ্রেফতাররা হলেন- বাংলাদেশি মূলহোতা বিপ্লব লস্কর (৩৪), তার সহযোগী সুমন হোসেন ওরফে ইমরান (৩১), মোহসিন হোসেন ওরফে শাওন (৩০), ইমরান হাসান ওরফে ইকবাল (৩০), নাজমুল হক রনি (৩০), মোসা. নুসরাত জাহান (২৪)। এছাড়া নাইজেরিয়ান নাগরিক চিডি (৪০), ইমানুয়েল (২৬), জন (৩১), আঙ্গোলিনার নাগরিক উইলসন ডে কনসিকাউ (৩৫), ক্যামেরুনের নাগরিক গুলগ্নি পাপিনিক (৩২)।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে তাদের রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান তিনি।

অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, ২৮টি মোবাইল, একটি কম্পিউটার, ৪৯১টি এটিএম কার্ড, ২৬টি চেক বই, তিনটি ওয়ারলেস পকেট রাউটার, একটি প্রাইভেটকার, সাড়ে ৩ লাখ জাল টাকা, নগদ ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ও ২৬৩টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়।

হারুন অর রশীদ জানান, দেশি-বিদেশি প্রতারকরা বিভিন্ন পন্থায় সাধারণ মানুষের ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেইল আইডি সংগ্রহ করে ইউএস আর্মি, ইউএস নেভিসহ বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে টার্গেট করা ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। সম্পর্কের একটি পর্যায়ে দামি উপহার স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, হীরা, বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, ডলার/ইউরো ইত্যাদি পাঠানোর কথা বলে ফাঁদে ফেলেন।

এরপর নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে ভুয়া পার্সেলের ছবি পাঠান। প্রতারিত ব্যক্তিরা সরল বিশ্বাসে পার্সেল গ্রহণের অপেক্ষায় থাকেন। প্রতারক চক্রের কলিং বিভাগে কর্মরত বাংলাদেশি প্রতারকরা টেলিফোন করে নিজেকে কাস্টমস অফিসার পরিচয় দিয়ে জানান, কিং এক্সপ্রেস সার্ভিস থেকে একটি পার্সেল এসেছে। পার্সেলটি ছাড়াতে কাস্টমস হাউজ ফি বাবদ মোটা অংকের টাকা পরিশোধ করতে হবে।

পার্সেল পাওয়ার আশায় কাস্টমস কর্মকর্তার দাবি করা টাকা পাঠিয়ে দেন প্রতারিতরা। এরপর কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী ব্যক্তি আবারও ফোন করে জানান, বিদেশি বন্ধুর পাঠানো পার্সেলে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ডলার রয়েছে। যা ছাড়াতে আরও বেশি টাকা প্রয়োজন। এই টাকা দিতে ব্যর্থ হলে প্রতারিত ব্যক্তির নামে মানি লন্ডারিং আইন ও অন্যান্য আইনে মামলা হবে।

অভিযানে গ্রেফতারদের কাছ থেকে নগদ ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ও ২৬৩টি সিমকার্ডসহ আরও অনেক কিছু জব্দ করা হয়।

প্রতারিত ব্যক্তিরা মামলার ভয়ে প্রতারকদের দেওয়া বিভিন্ন ব্যাংক আ্যকাউন্টে টাকা পাঠালে আবারও ফোন করে পুলিশ এবং সাংবাদিক জেনে যাওয়ায় তাদের ম্যানেজ করার কথা বলে আরও বড় অংকের টাকা দাবি করেন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকেন।

প্রতারকরা তাদের দাবি করা টাকা সরবরাহকৃত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তিকে সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লক করে দিতেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, বিদেশি বন্ধুর দামি উপহারের নামে যারা নিয়মিত প্রতারণা করছে, তাদের বেশির ভাগই বাংলাদেশে অবৈধভাবে বসবাসরত নাইজেরিয়া, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুনসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশের বাসিন্দা। তাদের সঙ্গে বিপ্লব লস্করের নেতৃত্বাধীন একটি বাংলাদেশি চক্র জড়িত। প্রতারণার জন্য তাদের রয়েছে বিভিন্ন ডিভিশন। কলিং ও ব্যাংকিং ম্যানেজমেন্ট নামে অভিনব দুটি ডিপার্টমেন্ট খুলে কয়েক ধাপে প্রতারণা করছে চক্রটি। 

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]