সোমবার, ৬ই মে ২০২৪, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১


সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ আর নেই


প্রকাশিত:
১৯ মার্চ ২০২২ ২১:১৭

আপডেট:
১৯ মার্চ ২০২২ ২১:৩৬

বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ। ফাইল ছবি

বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

শনিবার (১৯ মার্চ) সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।

সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মুহাম্মদ সাইফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সাহাবুদ্দীন আহমদের বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।

দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে ২০১৮ সালে ৮০ বছর বয়সে মারা যান সাহাবুদ্দীন আহমদের স্ত্রী আনোয়ারা আহমদ।

তাদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় ড. সিতারা পারভীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ২০০৫ সালের ২৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।

সাহাবুদ্দিন আহমদ নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার পেমল গ্রামে ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা তালুকদার রেসাত আহমদ ভূঁইয়া ছিলেন একজন খ্যাতনামা সমাজসেবক ও জনহিতৈষী ব্যক্তি। সাহাবুদ্দিন আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ সালে অর্থনীতিতে (সম্মান) স্নাতক এবং ১৯৫২ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৪ সালে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন। তিনি লাহোর সিভিল সার্ভিস একাডেমি থেকে সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিষয়ে একটি বিশেষ কোর্সে অংশগ্রহণ করেন।

ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে এবং পরে গোপালগঞ্জ ও নাটোরের মহকুমা প্রশাসক পদে কিছুদিন চাকরির পর সাহাবুদ্দিন আহমদ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৬০ সালের জুন মাসে তাকে বিচার বিভাগে বদলি করা হয় এবং প্রশাসনের নির্বাহী বিভাগে তার চাকরির সমাপ্তি ঘটে। তিনি ঢাকা ও বরিশালে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার নিযুক্ত হন। ১৯৭২ সালের ২০ জানুয়ারি তাকে বাংলাদেশ হাইকোর্টের বিচারক পদে উন্নীত করা হয়। তিনি প্রেষণে নিযুক্ত হয়ে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন (১৯৭৩-৭৪)। এরপর তিনি বিচারপতি হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগে প্রত্যাবর্তন করেন।

১৯৮০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সাহাবুদ্দিন আহমদকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক নিয়োগ করা হয়।

১৯৮৩ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভরত ছাত্রদের উপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন বিচারপতি সাহাবুদ্দিন। ওই ঘটনায় কয়েকজন ছাত্র নিহত এবং বহু ছাত্র আহত হয়। কিন্তু ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হলেও তৎকালীন সরকার এই তদন্ত প্রতিবেদন কখনোই সাধারণ্যে প্রকাশ করা হয়নি। তিনি ১৯৮৪ সালে গঠিত জাতীয় বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার রিপোর্টের ভিত্তিতে উচ্চতর হারে বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হয়। ১৯৭৮ সালের আগস্ট থেকে ১৯৮২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আপিল আদালতের বিচারপতিদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি যোগদান করেন।

১৯৯০ সালের ১৪ জানুয়ারি সাহাবুদ্দিন আহমদকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়।

সাহাবুদ্দীন আহমদ ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে রাষ্ট্রপতি করা হয়। ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর তিনি রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অবসর নেন।

এসএন/তাজা/২০২২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top