ব্রাজিল থেকে চার বন্দর ঘুরে চট্টগ্রামে আসা কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত
প্রকাশিত:
১০ আগস্ট ২০২৫ ১১:৪৯
আপডেট:
১০ আগস্ট ২০২৫ ১৬:০২

ব্রাজিল থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানো এক কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। বন্দরের মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ রেডিয়েশন ডিটেকটিভ সিস্টেমের মাধ্যমে এটি শনাক্ত হয়।
কনটেইনারটি ৩ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। ৬ আগস্ট এটি খালাসের সময় ৪ নম্বর ফটক দিয়ে বের করার সময় তেজস্ক্রিয় সংকেত বাজে। পরবর্তীতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কনটেইনারটির খালাস স্থগিত করে আলাদা স্থানে রেখে দেয়।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, কনটেইনারটিতে ছিল পুরোনো লোহার টুকরা বা স্ক্র্যাপ। প্রাথমিক পরীক্ষায় তাতে তিনটি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ থোরিয়াম-২৩২, রেডিয়াম-২২৬ ও ইরিডিয়াম-১৯২ চিহ্নিত হয়েছে। বিকিরণের পরিমাণ প্রাথমিকভাবে ঘণ্টায় ১ মাইক্রোসিয়েভার্টস ধরা পড়েছে, যা খুব উচ্চ মাত্রার না হলেও স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে কনটেইনারটি মানুষের সংস্পর্শ এড়াতে আলাদা করে রাখা হয়েছে এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনকে বিস্তারিত পরীক্ষার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, গত ৩০ মার্চ কনটেইনারটি ব্রাজিলের মানাউস বন্দরে জাহাজে তুলে দেওয়া হয়। এরপর পানামার ক্রিস্টোবাল, নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম ও শ্রীলঙ্কার কলম্বো হয়ে চট্টগ্রামে আসে। চারটি বন্দরের মধ্যে তিনটিতে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্তকরণ যন্ত্র থাকলেও কোথাও তেজস্ক্রিয়তা ধরা পড়েনি।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের নথি অনুযায়ী, এই স্ক্র্যাপের আমদানিকারক ঢাকার ডেমরার আল আকসা স্টিল মিলস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি মোট পাঁচটি কনটেইনারে ১৩৫ টন স্ক্র্যাপ আমদানি করে। এর মধ্যে একটি কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ মারুফুর রহমান বলেন, খালাস স্থগিত করে কনটেইনারটি আলাদা করে রাখা হয়েছে। এখন পরমাণু শক্তি কমিশনকে বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এসে সরেজমিন তেজস্ক্রিয়তা পরীক্ষা করবেন। এরপরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশে প্রথমবার কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হয় ২০১৪ সালে। চট্টগ্রাম থেকে ভারতে পাঠানোর পথে শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে স্ক্র্যাপ বোঝাই কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা ধরা পড়ে। কনটেইনারটি চট্টগ্রামে ফেরত আনার পর আন্তর্জাতিক দলের সহায়তায় রেডিয়াম বেরিলিয়াম নামের তেজস্ক্রিয় পদার্থ আলাদা করা হয়।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: