তিস্তায় সহায়তা দিতে প্রস্তুত চীন, সিদ্ধান্তের দায়িত্ব বাংলাদেশের
প্রকাশিত:
৮ মে ২০২৫ ১৬:৪৭
আপডেট:
৮ মে ২০২৫ ২২:৫৮

তিস্তা প্রকল্পে সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছে চীন। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশের। বেইজিং আশা করছে, প্রকল্পটির কাজ দ্রুত শুরু হবে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস (বিআইআইএসএস) আয়োজিত বাংলাদেশ-চীন ৫০ বছর সম্পর্ক নিয়ে এক সেমিনারে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
তিস্তা প্রকল্পের অগ্রগতি জানতে চাইলে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা এবং চীনের প্রেসিডেন্টের বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, তিস্তা প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ চীনা কোম্পানিগুলোকে স্বাগত জানায়। আমি বলতে চাই যে, চীন প্রস্তুত রয়েছে। আমরা আমাদের সহায়তা দিতে ইচ্ছুক। এখন বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে চায় কি না বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশের।
ইয়াও ওয়েন বলেন, দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপক্ষীয় বা আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে এটি করা যেতে পারে কি না, সেটিও ভাবা যেতে পারে। এই প্রকল্পটি কীভাবে এগিয়ে যাবে তা আসলে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত। চীন বাংলাদেশের নেওয়া সিদ্ধান্তকে সম্মান করবে। আমি আশা করি, এই প্রকল্পটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুরু করা হবে।
ভারত-পাকিস্তান প্রসঙ্গ
পাকিস্তানে ভারতের বিমান হামলাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি উভয়পক্ষ সংযম প্রদর্শন করবে এবং পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ কেউ যেন না নেয়।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ৭ মে ভারত পাকিস্তানের লক্ষ্যবস্তুতে সামরিক হামলা চালায়। চীন এ বিষয়ে ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। ভারত-পাকিস্তান একে অপরের প্রতিবেশী, চীনও এই দুটি দেশের প্রতিবেশী। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা পরিহার করে উভয়পক্ষকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই সংকট সমাধানের আহ্বান জানায় চীন।
ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে। কাশ্মির হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যা যা ঘটেছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর নিরপেক্ষ তদন্তের পক্ষে চীন।
মার্কিন শুল্ক
যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা শুল্ক আরোপের সমালোচনা করেন চীনা রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা শুল্ক আরোপের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ শুল্ক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করছে। কিন্তু চীন মনে করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আপসের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান হবে না। বরং এর ন্যায্যতা পেতে বা একতরফা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলতে হবে।
ইয়াও ওয়েন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন একাধিক অযৌক্তিক এবং একতরফা শুল্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যা দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য শৃঙ্খলা ব্যাহত করেছে। যা বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের জন্য গুরুতর চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
সেমিনারে মূল বক্তব্য দেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন- বিস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এএফএম গাউসুল আজম সরকার। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বিস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: