ঘুরছে না গাড়ির চাকা, ভোগান্তি চরমে
 প্রকাশিত: 
                                                ১০ জুলাই ২০২৪ ১৭:১২
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:০৮
                                                
 
                                        রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো ঢাকা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই স্থানে বাসে বসে আছেন যাত্রীরা। অবশেষে বাস থেকে নেমে অগত্যা হেঁটে যাচ্ছেন গন্তব্যের দিকে। মালিবাগ-রামপুরা সড়কে দুপুর সাড়ে ১২টা ধরেই থমকে আছে শত শত গাড়ি। একই দৃশ্য শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন এলাকায়।
বুধবার (১০ জুলাই) কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচি ‘বাংলা ব্লকেড’ এর কারণে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এই যানজট সৃষ্টি হয়।
এদিন সকাল ১০টা থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। সেখানে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট দল হয়ে মৎস্য ভবন, পরীবাগ মোড়, বাংলামোটর মোড়, কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেটের দিকে ছড়িয়ে পড়েন। একই সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার বিভিন্ন মোড় অবরোধ করেন।
জানা যায়, আজ ঢাকার ভেতরে শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, ফার্মগেট, চানখাঁরপুল মোড়, চানখাঁরপুল ফ্লাইওভারে ওঠার মোড়, বঙ্গবাজার, শিক্ষা চত্বর, মৎস্য ভবন, জিপিও, গুলিস্তান, সায়েন্স ল্যাব, নীলক্ষেত, রামপুরা ব্রিজ, আগারগাঁও, ঢাকার বাইরে রাজশাহী (জিরো পয়েন্ট, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, রেলগেট, স্টেশন বাজার), চট্টগ্রাম ও বিভাগীয় শহরগুলোতেও চলছে ‘বাংলা ব্লকেড’।
শুধু বাস ও মোটরযান নয়, ব্লকেডে আটকা পড়েছে রিকশাও। এক রিকশাচালক বলেন, ‘এমন গ্যাঁড়াকলে আছি মামা, একটু বাইর হতে পারতাছি না। বাইর হইলেই উল্টা দিক দিয়া বাসায় যামু গা। আগে তো জানতাম না এমন হইব।’
বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির অংশ হিসেবে সড়কপথের পাশাপাশি রাজধানীর রেলপথও অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে দুই ঘণ্টা ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বুধবার দুপুরে ঢাকা (কমলাপুর) রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্টেশন মাস্টার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা মহাখালীতে রেললাইন অবরোধ করে রেখেছেন। দুই ঘণ্টা ধরে ঢাকা থেকে কোনো ট্রেন ছাড়া হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন :কোটা আন্দোলন: অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে পুলিশ
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুরে কারওয়ান বাজার ও মহাখালী রেলগেট এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রেললাইনের ওপরে কাঠের গুঁড়ি ও বাঁশ ফেলে অবরোধ করেছেন। এ সময় কারওয়ান বাজার রেললাইনের ওপর শুয়ে অবরোধ করতেও দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। এ ছাড়া রেল ক্রসিংয়ের ব্যারিকেডের গেট ফেলে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এতে রেলগেট দিয়ে কোনো যানবাহনও চলাচল করতে পারছে না। তবে অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী বহনকারী গাড়িগুলো চলাচলের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, তেজগাঁওয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে মায়ের চিকিৎসা শেষে ফিরছিলেন ফরিদা আক্তার। এফডিসি ক্রসিংয়ে এসে আটকা পড়েন তিনি। সেখান থেকে হেঁটে কারওয়ান বাজার মোড় পর্যন্ত এসেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যাব ধানমন্ডি। সিএনজি এগোতে দিল না। এই রোদে হেঁটে যেতে মায়ের খুব কষ্ট হচ্ছে। কীভাবে বাসায় পৌঁছাব জানিনা।’
বেলা সোয়া দুইটা থেকে তিনটা পর্যন্ত সার্ক ফোয়ারা মোড়ে অবস্থান করে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা চার দিকের সড়কেই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছেন। বিভিন্ন কাজে বের হওয়া মানুষ নানাভাবে আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে সামনে এগোনোর চেষ্টা করছেন। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া অন্য যানবাহন সামনে এগোতে দেওয়া হচ্ছে না।



 
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: