মন খারাপকে সঙ্গী করে ঢাকায় ফিরছেন তারা
প্রকাশিত:
২ জুলাই ২০২৩ ১৬:৫৯
আপডেট:
১০ মে ২০২৫ ০৫:৫৪

কারও হাতে ব্যাগ, কারও সঙ্গে পরিবারের সদস্য, কেউবা একা; আবার কারও কোলে শিশু। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করে তারা সবাই আজ ঢাকায় ফিরেছেন।
শত ভোগান্তি, বিড়ম্বনা পেরিয়ে যারা নাড়ির টানে ঈদ উদযাপন করতে বাড়িতে গিয়েছিলেন, কর্মদিবস শুরু হওয়ায় তারাই আজ জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরে আসছেন।
পরিবারের সঙ্গের সুখ স্মৃতি আর প্রিয়জনদের ছেড়ে জীবিকার টানে ঢাকায় ফিরে আসায় মন খারাপ তাদের।
রোববার (২ জুলাই) সকালে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাসে করে ঢাকায় ফিরছে মানুষ। সব বাসই যাত্রীতে পূর্ণ।
জীবিকার তাগিদে সারাদিন কাজ আর কাজ। যান্ত্রিক শহরে একঘেয়েমি জীবন। আর এ একঘেয়েমি জীবনের সাময়িক বিরতি দিয়ে কর্মজীবী এসব মানুষের সামনে আসে প্রিয়জনের সঙ্গে আনান্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মুহূর্ত।
তাই তো শত ভোগান্তি বিড়ম্বনা পেরিয়ে ঈদ উদযাপনে মানুষ ছুটে যায় নাড়ির টানে। পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয় তারা। কিন্তু জীবিকার তাগিদে ফের ঢাকা ফেরার সময় মন খারাপ হয়ে যায় সবার।
নওগাঁ থেকে একতা বাসে সকালেই মহাখালী নেমেছেন খোরশেদ আলম নামের একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি বলেন, শত ভোগান্তি নিয়ে গ্রামের বাড়ি নওগাঁ গিয়েছিলাম পরিবারসহ। আজ আবার কর্মে যোগদানের জন্য ঢাকায় ফিরতে হলো।
যাওয়ার যেমন ভোগান্তি, বিড়ম্বনা নিয়ে ঈদ করতে বাড়ি গিয়েছিলাম, তেমনি আজ বিড়ম্বনা নিয়েই ফিরলাম। টিকিট পাওয়া যায়না, রাস্তায় যানজট সব মিলিয়ে ফেরার পথেও ভোগান্তি। বছরে ঈদের সময় আমরা সবাই এভাবেই গ্রামের বাড়ি যাই। কিন্তু ঢাকায় ফিরে আসার সময় হয়ে যায় মন খারাপ, কারণ পরিবারের অন্য সদস্য, আপনজন, নিজ এলাকা, চেনা মুখগুলো ছেড়ে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরে আসতে হয়।
বগুড়া থেকে শাহ ফতেহ আলী বাসে মহাখালী আসা আরেক যাত্রী সাইদুর রহমান বলেন, গত রাতে রওনা হয়ে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছেছি। আজ থেকে অফিস শুরু তাই বাধ্য হয়েই আসতে হলো। বাড়িতে গেলে আর ঢাকায় ফিরে আসতে ইচ্ছে করে না।
তবুও যেহেতু আজ থেকে আমাদের অফিস করতে হবে তাই চলে আসতে হলো। আমদের যাদের ঈদের সময় ঢাকা থেকে দূরে নিজ এলাকায় যেতে হয়, আসার সময়ও আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। ঈদের ছুটি শেষে পরিবার আপনজন ছেড়ে ঢাকায় ফিরে আসা কষ্টের। তারপরও বাড়িতে যাওয়ার সময় আনন্দ নিয়েই যাই, কিন্তু ঢাকায় ফিরে আসার সময় মন খারাপ হয়ে যায়।
ময়মনসিংহ থেকে সৌখিন বাসে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন সুলতানা পারভিন। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মহাখালী নেমে সুলতানা পারভিন বলেন, ঈদে যাওয়া যেমন ভোগান্তির আবার ফিরে আসাও ভোগান্তির। বাসের লোকজন যাওয়া-আসা দুই সময়েই আমাদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করে। পথে যাত্রী তুলে, যানজটে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হয়। তবুও যেহেতু চাকরি করি আর আজ থেকে অফিস শুরু তাই পরিবার, প্রিয় মানুষ, নিজ বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে আসতে হলো।
এদিকে মহাখালীর একতা বাস কাউন্টারের সুপারভাইজার এনামুল হক বলেন, ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার যাত্রী এখন খুব কম হচ্ছে।
তবে ঢাকায় ফেরার যাত্রীর চাপ অনেক বেড়েছে। আমাদের ঢাকায় বাইরের কাউন্টারগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী চাপ এখন, তারা সবাই ঢাকায় ফেরার টিকিট চাইছে। গতকাল থেকে মূলত ঢাকায় ফেরা মানুষের চাপ বেড়েছে। তাই ঢাকা থেকে অল্প যাত্রী হলেও বাসগুলো
আমরা পাঠিয়ে দিচ্ছি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে। সেখান থেকেই বাস ভরে যাত্রীরা ঢুকছে ঢাকায়। গত রাতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো আজ সকালে ঢাকায় ঢুকেছে। এসব বাসের কোনো ছিট ফাঁকা ছিল না।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: