বুধবার, ১৪ই মে ২০২৫, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


প্রতিবন্ধীদের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে


প্রকাশিত:
৮ জানুয়ারী ২০২৩ ০৬:৩০

আপডেট:
১৪ মে ২০২৫ ০৭:৪৭

ছবি সংগৃহিত

তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও বিশেষভাবে সক্ষমদের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যেন অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার করে আত্মনির্ভরশীল হতে পারে সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। প্রতিবন্ধীদের চাকরি মেলা চাকরি দাতা ও চাকরি প্রত্যাশীদের মধ্যে সেতু বন্ধন তৈরি করবে।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) উদ্যোগে এবং সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজঅ্যাবিলিটি (সিএসআইডি) আয়োজিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চাকরি মেলা ২০২৩- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রকল্পে একজন উদ্ভাবক টকিং হোয়াইট স্টিক আবিষ্কার করেছেন। এই সাদা ছড়ি দিয়ে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে স্পর্শ বা ধাক্কা খাওয়ার আগেই টকিং হোয়াইট স্টিক কথা বলে সতর্ক করে দেবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আইসিটি বিভাগ থেকে হুইল চেয়ার দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া শারীরিক প্রতিবন্ধীদের স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে দেশে স্বল্প খরচে উচ্চ-প্রযুক্তি সম্বলিত হুইলচেয়ার তৈরির পদক্ষেপ নিতে হবে। রাষ্ট্রকে বৈষম্যমুক্ত ও মানবিক করতে হলে সব সুযোগ-সুবিধা সবার জন্য সমন্বিতভাবে কাজে লাগাতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় কোনো প্রতিবন্ধী ভাই-বোন যেন কোনো নাগরিক সুবিধা হতে বিন্দুমাত্র বঞ্চিত না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করব।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আগামী বছর থেকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাকরি মেলার পাশাপাশি উদ্যোক্তা সম্মেলন করা হবে। প্রশিক্ষিত প্রতিবন্ধী বা বিশেষভাবে সক্ষম ভাই-বোনদের মধ্যে যারা উদ্যোক্তা হতে চান তাদের তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের তৈরি করতে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা সীডমানি হিসেবে পুঁজি প্রদানের সুযোগ থাকবে। এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাই-বোনেরা জব সিকার না হয়ে জব ক্রিয়েটর হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারবেন।

বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ, এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব শেখ মো. মনিরুজ্জামান এবং সিএসআইডির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, সরকারি হিসেবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংখ্যা অনেক যা ৩০ লক্ষেরও অধিক। তাই বাংলাদেশ সরকার এই বিপুল সংখ্যক ব্যক্তিদের নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে এবং তাদের জন্য প্রকল্প, প্রতিযোগিতা, চাকরি মেলাসহ নানা আয়োজনের মাধ্যমে তাদের সামনে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। আগে না থাকলেও এখন প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

বিসিসি এর নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার বলেন, সমাজের কল্যাণে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে আসতে হবে।

এ সময় সবাইকে এক হয়ে সমাজকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্যে তিনি আহ্বান জানান তিনি।

মেলায় ৫৪টি আইসিটি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এবং চাকরিপ্রার্থী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণ অংশ নেন। এর আগে সারা দেশ থেকে প্রায় ৫ শতাধিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সিভি জমা দেন অনলাইনে। এছাড়া, মেলায় সরাসরি উপস্থিত হয়েও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি চাকরিপ্রার্থীরা সিভি বা জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়ার সুযোগ পান। যাদের তথ্য প্রযুক্তির দক্ষতা রয়েছে তাদের নিয়োগের লক্ষ্যে ইন্টারভিউ গ্রহণ করে মেলায় অংশগ্রহণ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো। ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যানিমেশন, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, কল সেন্টার এজেন্ট, প্রোগ্রামিং-সহ নানা প্রকার পদের জন্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তি চাকরিপ্রার্থীদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে নিয়োগের পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাকরি মেলা ২০২২ এর শীর্ষ চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করেন জেনওয়েবটু লিমিটেড।

উল্লেখ্য যে, ২০১১ সাল থেকে বিসিসির মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিনামূল্যে আইসিটি প্রশিক্ষণ চালু করা হয়। এরই আলোকে আইসিটি প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে চাকরিপ্রার্থী ও চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে ২০১৫ সাল থেকে চাকরি মেলার আয়োজন করা হচ্ছে।

বিভিন্ন ট্রেডবডি বা অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যভুক্ত আইসিটি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানসমূহ এ মেলায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বেসিস, ই-ক্যাব, বাক্কো, আইএসপিএবি, বিসিএস, কোয়াব ছাড়াও আইসিটি শিল্পের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং এনজিও ব্যুরোর তালিকাভুক্ত প্রতিবন্ধিতা কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু এনজিও প্রতিষ্ঠান।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top