সোমবার, ২৭শে অক্টোবর ২০২৫, ১১ই কার্তিক ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


ঝটিকা মিছিল থেকে আটক

আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ২০ জনের সঙ্গে রিমান্ডে যুবদল কর্মী


প্রকাশিত:
২৬ অক্টোবর ২০২৫ ২০:২২

আপডেট:
২৭ অক্টোবর ২০২৫ ০০:১৪

ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানে ফজলে রাব্বি পার্কের পাশে উসকনিমূলক স্লোগান দিয়ে গাড়ি ভাংচুর করার অভিযোগে গুলশান থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের ২০ জনের সঙ্গে যুবদলের এক কর্মীর ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার (২৬ অক্টোবর) তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি নিয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামান তাদের তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- বাপ্পি হোসেন, সিপন আহম্মেদ সিফাত, আমিনুল ইসলাম নিরব, হামিদুর রহমান অমি, ইলিয়াস হাসান, সুজন, আজাদ, রহমত হাং, জেডএফ তিতুমির, দেওয়ান হাসানুল কবির, মিজানুর শেখ, জাকির হোসেন, শাহিন, রেদোয়ান রহমান সিয়াম, জাকির হোসেন, নজরুল ইসলাম, ইউনুস কাজী, সজিব, জাহিদ খান, শহিদুল আলম এবং তানভীর হাসান আরিফ।

এছাড়া অপর তিন আসামি শিশু হওয়ায় তাদের রিমান্ড শুনানির জন্য শিশু আদালতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

এর মধ্যে রিমান্ডে যাওয়া আসামি শাহিন বরিশাল যুবদলের কর্মী বলে আদালতকে জানিয়েছেন তার আইনজীবী আওয়াল কবির।

গত ২১ অক্টোবর সকালে গুলশান-১ এর ফজলে রাব্বি পার্কের পাশে উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে গাড়ি ভাংচুর করে পালানোর চেষ্টাকালে তাদের আটক করে পুলিশ। পরে কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গোফরান তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরদিন তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক আরমান হোসেন। আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে ২৬ অক্টোবর রিমান্ড শুনানির জন্য ধার্য করেন। এদিন শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হারুন অর রশীদ আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।

তিনি বলেন, আসামিরা ফ্যাসিস্টের দোসর। তারা ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় মিছিল বের করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তারা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে কাজ করছে। সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার উদ্যোগ নেয়। প্রত্যেকের কাছ থেকে মোবাইল উদ্ধার করা হয়। বিভিন্ন গ্রুপে ম্যাসেজ আদান-প্রদান করে।

আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট ওবায়দুল ইসলাম, জাকির হোসেন, আওয়াল কবিরসসহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।

তারা বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। রিমান্ডে নেওয়ার জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রয়োজন তা উল্লেখ করেননি। কেউ ছাত্র, কেউ ব্যবসায়ী আবার কেউ চাকরিজীবী। ধরে এনে তাদের গ্রেপ্তার করেছে। তাদের রিমান্ড বাতিল করে জামিন প্রার্থণা করছি। শুনানি নিয়ে আদালত রিমান্ডের এ আদেশ দেয়।

আদালতে গুলশান থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোক্তার হোসেন রিমান্ডের তথ্য নিশ্চিত করেন।

আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার সময় শাহিন বলেন, আমি যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল, মিটিং করেছি। আমাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিল।

তিনি বলেন, আমার মেয়ে বাড্ডায় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছে। তাকে দেখতে বরিশাল থেকে ঢাকা আসছিলাম। গুলশান দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে গ্রেপ্তার করেছে।

এদিকে রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপ খুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও রাষ্ট্রের অবকাঠামোকে ধ্বংসের লক্ষ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার জন্য উসকানিমূলক প্রচার ও প্রচারণা করার বিষয়ে স্বীকার করেন। তাদেরসঙ্গে অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিরাও এ ধরনের কার্যক্রমের সঙ্গ জড়িত আছে এবং তারা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিসহ জনমতে আতঙ্ক ও ভয়ভীতি প্রদর্শন এর লক্ষ্যে একত্রিত হয়েছে মর্মে জানায়।

আসামিরা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী। তারা বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার জন্য ঘটনাস্থলে মিলিত হয়েছিল মর্মে প্রাথমিক তদন্তে প্রতীয়মান হয়। মামলার মূল রহস্য উদঘাটন, পলাতক অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে গ্রেপ্তার করা এবং গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড প্রয়োজন।

এদিকে আদালতে আসেন শাহিনের স্ত্রী সালমা আক্তারও। তিনি বলেন, দেড় মাস আগে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় আসি। বাড্ডা এলাকায় থাকি। মেয়েকে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছি। আমার স্বামী বরিশালে থেকে একটি কোম্পানির বাস চালায়।

তিনি বলেন, গত ২০ অক্টোবর রাতে ফোন দিয়ে জানায় ঢাকায় আসতেছে। লঞ্চে সকালে ঢাকায় আসার খবর জানায়। তার ঘণ্টাখানেক পর ফোন দেই কিন্তু ফোন বন্ধ ছিল। সারাদিন ফোন দেই কিন্তু তাকে পাইনা। রাত ১২টার সময় পুলিশ ফোন দিয়ে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। আমার স্বামী নির্দোষ। তার মুক্তি চাই।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top