গাজার জন্য ত্রাণ বহনকারী জাহাজ আটকে দিলো ইসরায়েল
প্রকাশিত:
৯ জুন ২০২৫ ১০:৩৬
আপডেট:
৯ জুন ২০২৫ ১৬:৫৭

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের জন্য ফিলিস্তিনিপন্থি আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) খাদ্য ও ত্রাণবাহী জাহাজ ম্যাডলিনকে আটকে দিয়েছে ইসরায়েলের নৌবাহিনী। সেই সঙ্গে জাহাজের ১২ জন ক্রুদের সবাইকে গ্রেপ্তার করে ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে সুইডেনের নাগরিক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ এবং ফ্রান্সের পার্লামেন্টের এমপি রিমা হাসানও রয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় রিমা হাজান জানিয়েছেন, রোববার স্থানীয় সময় রাত ২টার দিকে ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় ম্যাডলিনকে আটকে দেয় ইসরায়েলের নৌবাহিনী এবং জাহাজের সব ক্রুকে গ্রেপ্তার করে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে এ তথ্যের সত্যতা। এক্সে পোস্ট করা এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “সেলিব্রেটিদের বহনকারী সেই সেলফি জাহাজটিকে রোববার মধ্যরাতে ইসরায়েলের উপকূলে নিয়ে আসা হয়েছে। ক্রুদের সবাই আমাদের হেফাজতে নিরাপদে আছেন। তাদেরকে স্যান্ডউইচ এবং পানি সরবরাহ করা হয়েছে। নাটক খতম।”
যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে গত ১৯ মার্চ গাজায় ফের সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এ অভিযান শুরুর আগে মার্চের প্রথম দিকে গাজায় ত্রাণ ও খাদ্যবাহী ট্রাকের প্রবেশ প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হয়।
একদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর টানা নিষ্ঠুর সামরিক অভিযান এবং অপরদিকে দিনের পর দিন ধরে প্রয়োজনীয় খাদ্য, ওষুধ, সুপেয় পানি ও ত্রাণসামগ্রীর অভাবে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হন গাজায় বসবাসরকারী ফিলিস্তিনিরা। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে শুরু হওয়া ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই গাজায় ত্রাণবাহী জাহাজ পাঠানোর ঘোষণা দেয় ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন।
গত ১ জুন ইতালির ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ সিসিলি’র উপকূল থেকে গাজার উপকূলের উদ্দেশে রওনা দেয় এফএফসি’র ত্রাণবাহী জাহাজ ম্যাডলিন। ম্যাডলিন একটি ব্রিটিশ পতাকাবাহী জাহাজ।
ব্রিটিশ জাহাজ ম্যাডলিন আকার আয়তনে তেমন বড় নয়। জাহাজটিতে মূলত খাদ্য সামগ্রী এবং শিশুখাদ্য ছিল। সেই ত্রাণের পরিমাণও খুব বেশি নয়। সেই ত্রাণের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সেলিব্রেটিরা যেসব ত্রাণসামগ্রী এনেছেন, সেগুলো যথাযথ মানবিক চ্যানেলের মাধ্যমে গাজায় পৌঁছে দেওয়া হবে।”
ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত গাজার উপকূলে জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ২০০৭ সালে হামাস গাজায় ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইসরায়েল।
রোববার ইসরায়েলের উপকূলের কাছাকাছি আসার পর ম্যাডলিন এবং তার যাত্রীদের আটকের নির্দেশ দিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা অ্যালবানেজ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের এই উদ্যোগ এবং সাহসী অভিযাত্রাকে সমর্থন করে বিবৃতি দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “ম্যাডলিনের যাত্রা হয়তো শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু মিশন এখনও এখনও শেষ হয়নি। গাজার জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে ভূমধ্যসাগর অঞ্চলের প্রতিটি বন্দর থেকে সেখানে ত্রাণ পাঠানো উচিত।”
সূত্র : রয়টার্স
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: